শেয়ারবাজারে কারসাজির মাধ্যমে ২৫৬ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন দুদকের মহাপরিচালক মো.

আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সাকিব আল হাসান তিনটি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন। সেই কোম্পানিগুলোকে কেন্দ্র করে বাজারে কারসাজি হয়েছে। মার্কেট ম্যানিপুলেশনে তাঁর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

সাকিব আল হাসানের সংশ্লিষ্টতা প্রসঙ্গে মামলার এজাহারে বলা হয়, প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইনস্যুরেন্স ও সোনালী পেপারস লিমিটেড—এই তিন কোম্পানির কারসাজি করা শেয়ারে সাকিব বিনিয়োগ করে প্রতারণায় যোগ দেন। এর মাধ্যমে তিনি ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বেশি ‘রিয়েলাইজড ক্যাপিটাল গেইন’ নামে অপরাধলব্ধ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

মামলায় সাকিব আল হাসান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন সমবায় অধিদপ্তরের সাবেক উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের (হিরু) ও তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মো. বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। পরিকল্পিতভাবে শেয়ারবাজারে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেন তাঁরা। শেয়ারবাজারের প্রচলিত আইন (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬১–এর ১৭ ধারা) লঙ্ঘন করে বাজারে গুজব ছড়িয়ে কারসাজি চালান তাঁরা। এভাবে শেয়ারবাজার থেকে ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাৎ করে আসামিরা নিজেদের বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তা উত্তোলন করেন।

দুদক সূত্র জানায়, আসামি আবুল খায়ের তাঁর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানের সহায়তায় ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত ২১ কোটি ১৪ লাখ টাকার বেশি অর্থ বিভিন্ন খাতে স্থানান্তরের মাধ্যমে উৎস গোপনের চেষ্টা করেন। তাঁর ১৭টি ব্যাংক হিসাব ও ৫৪২ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

চলতি বছরের এপ্রিলে সাকিবের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অর্থ পাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে দুদকের হটলাইন ১০৬ উদ্বোধন ও দুর্নীতিবিরোধী প্রচারে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে যুক্ত হন সাকিব আল হাসান। তবে নানা বিতর্কের কারণে ২০২২ সালে তাঁর সঙ্গে করা সেই চুক্তি আর নবায়ন করেনি দুদক।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন শ য় রব জ র ক রস জ

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টি-জলাবদ্ধতায় রাজধানীতে দুর্ভোগ

ZAHIDUL SALIM

সম্পর্কিত নিবন্ধ