কুড়িগ্রামে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ
Published: 17th, June 2025 GMT
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স ও রৌমারী সদর ইউনিয়নের কলেজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতুয়ারা খাতুনের স্বামী কাদের মোল্লা উপজেলা জামায়াতের কর্মী। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে তিনি স্ত্রীর অবসরকালীন ভাতার কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে যান। এ সময় উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হায়দার আলী, সাবেক আমির মোস্তাফিজুর রহমানসহ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে জামায়াতের রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানকে মারধর করেন। এ সময় তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে ক্যাশিয়ার রাজা মিয়া আহত হন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রাজা মিয়া বলেন, ‘কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কলার ধরলে আমি বাধা দিতে যাই। তখন আমাকেও মারধর করা হয়।’
উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান বলেন, সিনিয়র স্টাফ নার্স আতুয়ারা খাতুন অবসর ভাতার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তবে তাঁর কিছু কাগজে ভুল থাকায় বিলে স্বাক্ষর করা হয়নি। আজ তাঁরা (জামায়াতের নেতারা) বিলে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য চাপ দিলে তিনি অস্বীকৃতি জানান। এ সময় তাঁরা তাঁকে মারধর করেন। পরে বিকেলে তাঁরা ভুল স্বীকার করেছেন।
রৌমারী উপজেলা জামায়াতের আমির হায়দার আলী বলেন, ‘ওই নার্সের স্বামী আমাদের দলের একজন কর্মী। তাঁর স্ত্রীকে বিল প্রদান না করে ওই কর্মকর্তা হয়রানি করছিলেন। এ জন্য আমাদের দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী সেখানে যান। এতে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে আমি বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম মারা গেছেন
কিশোরগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বার্ধক্যজনিত কারণে মঙ্গলবার বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের বড়মাইপাড়া এলাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। সখিনা বেগমের বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
তাঁর ভাগনি ফাইরুন্নেছা আক্তার বলেন, নিকলী উপজেলার গুরুই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সখিনা বেগম। তিনি নিঃসন্তান। মুক্তিযুদ্ধের আগেই তাঁর স্বামী কিতাব আলীর মৃত্যু হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর সখিনা বেগম সশস্ত্র যুদ্ধে নামেন। নিকলীতে তাঁকে দেখভাল করার কেউ না থাকায় বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়ার বড়মাইপাড়া এলাকায় ভাগনি ফাইরুন্নেছার সঙ্গে থাকতেন।
নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানা মজুমদার মুক্তি জানান, বিকেলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগমকে গুরুই এলাকার কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কয়েকটি বইয়ের লেখা থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালে সখিনা বেগমের ভাগনে মতিউর রহমান সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারের হাতে শহীদ হন। ওই সময় সখিনা গুরুই এলাকায় বসু বাহিনীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে রাঁধুনির কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে রাজাকারদের গতিবিধির বিভিন্ন খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাতেন। এক পর্যায়ে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পরে সেখান থেকে পালিয়ে যান। ধারালো দা দিয়ে নিকলীর পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করেন সখিনা বেগম। ওই দা ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত।