বরগুনায় ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা চলছে মেঝেতে, নার্সদের ডেস্কের পেছনে, ওয়ার্ডের বারান্দায়
Published: 18th, June 2025 GMT
বরগুনার মানুষ কয়েক বছর ধরেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ বছর যে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে, সেই সতর্কতাও ছিল। বছরের শুরুতে কীটতত্ত্ববিদেরা বলেছিলেন, বরগুনায় এডিস মশা বিস্তারের ঝুঁকি আছে। তবু প্রশাসন প্রতিরোধমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রশাসনের উদাসীনতায় ডেঙ্গুতে ভুগছে বরগুনা।
এখন বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর ঢল নেমেছে। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন ৫০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। রোগীর পরিস্থিতি জানার জন্য নিয়মিত রক্তের অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেট পরিমাপ করে দেখতে হয়। কিন্তু এ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা হচ্ছে না। অনেক রোগীকে পরীক্ষার জন্য যেতে হচ্ছে শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে। এটা রোগীর জন্য অনেক কষ্টের, স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যায়। পাশাপাশি রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। সব রোগী খাবারও পাচ্ছেন না। খাবার আনতে হচ্ছে হাসপাতালের বাইরে থেকে।
হাসপাতালের এ চিত্র গত পরশু সোমবারের। মশা বিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশও শহর ঘুরে দেখা গেছে। এদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণকাজ দেখা গেছে। গলির মধ্যে বাড়ির সামনে পানির পাত্র চোখে পড়ে, অনেক বাড়ির সামনে পানি জমে আছে। থানাপাড়ায় একটি বাড়ির কয়েকজন সদস্য বলেন, তাঁরা নিজেরাই সচেতনভাবে পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহার করেন না। এ পাড়ায় সর্বশেষ মশার ওষুধ দেওয়া হয়েছে মাসখানেক আগে। সাহাপাড়ায় এক চায়ের দোকানি বলেন, কয়েকজন মারা গেছেন। এখন যদি মানুষের হুঁশ হয়।
এখন বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর ঢল নেমেছে। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন ৫০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন।গত বছর ও চলতি বছরের শুরুতে কীটতত্ত্ববিদেরা বলেছিলেন, বরগুনায় ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে। কিন্তু পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মশা নিধন ও জনসচেতনতায় গুরুত্ব দেয়নি। স্বাস্থ্য বিভাগ চিকিৎসার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখেনি। প্রশাসন এখন বলছে, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রতিনিধিরা এখন বরগুনায় এসেছেন। তাঁদের কাছ থেকে জানা যাবে, কেন বরগুনায় ডেঙ্গু বেশি।
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের হিসাব অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন করে ২৪৪ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বরগুনা জেলায় শনাক্ত হয়েছে ৮২ জন। এ বছর গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ৪৬৬ জন। মারা গেছেন ৩০ জন। এ পর্যন্ত বরগুনায় মারা গেছেন ৫ জন আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৮৩১ জন। সারা দেশের আক্রান্তের ২৮ শতাংশ শুধু এ জেলায়। গতকাল সদর হাসপাতালে শুধু ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলেন ২৩৩ জন।
গত বছর ও চলতি বছরের শুরুতে কীটতত্ত্ববিদেরা বলেছিলেন, বরগুনায় ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে। কিন্তু পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মশা নিধন ও জনসচেতনতায় গুরুত্ব দেয়নি।শয্যা না পেয়ে মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন একজন ডেঙ্গু রোগী.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বরগ ন য় ড ঙ গ ন বরগ ন
এছাড়াও পড়ুন:
এত বড় গাছটা কাটল কে
আঁকা: আরাফাত করিম