যশোরের মনিরামপুরে আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদের প্রাইভেট কার ঠেকিয়ে ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ছিনতাই হওয়া ৩২ লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে। নগদ ডিস্ট্রিবিউটরের প্রাইভেট কারচালকের যোগসাজশে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। 
আজ বুধবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– নগদ ডিস্ট্রিবিউটরের প্রাইভেট কারচালক ও যশোর শহরের পোস্ট অফিসপাড়ার ইউসুফ আলী সাজু, ঝিকরগাছার বাঁকড়া দিগদানা গ্রামের রনি গাজী, সুজন ইসলাম, ইমদাদুল গাজী, নাসিম গাজী, একই উপজেলার খোষালনগর গ্রামের সাগর হোসেন ও সোহেল রানা।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে যশোরের নগদ ডিস্ট্রিবিউটর রবিউল ইসলাম প্রাইভেট কারযোগে মনিরামপুর যাচ্ছিলেন। পথে জামতলা নামক স্থানে পেছনের দিক থেকে দুটি মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাঁর গতিরোধ করে। তারা মোটরসাইকেল থেকে নেমে প্রাইভেট কারের কাচ ভাঙচুর এবং চাপাতি দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে ডিস্ট্রিবিউটরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁর কাছে থাকা ৩৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি রবিউল ইসলাম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনার আগে ও পরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। ডিবিসহ জেলা পুলিশের একাধিক দল বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলের সূত্র ধরে আসামি সাগর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। সাগরের তথ্যের ভিত্তিতে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। ইমদাদুল গাজীর হেফাজত থেকে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং সুজনের বাড়ি থেকে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

নূর-ই-আলম সিদ্দিকী আরও বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনার পর নগদের লোকজন টাকার পরিমাণ ৫৫ লাখ বলেছিলেন, যা সঠিক নয়। প্রকৃত টাকার পরিমাণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার, মনিরামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ইমদাদুল হক, ডিবির ওসি মঞ্জুরুল হক ভূঞা, মনিরামপুর থানার ওসি বাবলুর রহমান খান প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: যশ র ছ নত ই ছ নত ই

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান থেকে আরও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে: ইসরায়েলি সেনাবাহিনী

ইরান থেকে আরও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করছে। তাই সেনাবাহিনী দেশটির জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলেছে।

কিছুক্ষণ আগে, ইরানের সংবাদ সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বাঙ্কার ভাঙা ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিবৃতির বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, তাদের বিমানবাহিনী তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা শুরু করেছে। ইরানের ইসলামিক রিভ্যলিউশনারি গার্ড বলেছে, তেহরানের উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলীয় শহরতলীতে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।

বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের সংবাদমাধ্যম বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে খবর দিয়েছে। বিভিন্ন ছবিতে দেখা যাচ্ছে, উত্তর পূর্ব তেহরানে বিস্ফোরণের পর ধোঁয়া উড়ছে।

কিছু সূত্র বলছে, তেহরানের লাভিজান এলাকাতেও বিমান হামলা হয়েছে। নিউজ সাইট তাবনাক বলছে, তেহরানের পূর্ব ও পশ্চিম অংশ ছাড়াও কারাজের বিভিন্ন এলাকায় হামলা করছে ইসরায়েল।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরানের দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র ইসরায়েলি হামলায় আক্রান্ত হয়েছে। সেন্ট্রিফিউজ সিস্টেম ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে আইএইএ জানায়, ইরানি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র টিইএসএ কারাজ ও তেহরান রিসার্চ সেন্টারে হামলা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রই একসময় আইএইএর নজরদারির আওতায় ছিল। এর আগে ইসরায়েলও তাদের রাতভর হামলায় ইরানের সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র আক্রান্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছিল। 

আইএইএ -এর বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, তেহরান রিসার্চ সেন্টারের একটি ভবনে হামলা হয়েছে। এখানে অ্যাডভান্সড লেভেলের সেন্ট্রিফিউজ রটরস উৎপাদন ও পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া কারাজে ইরান সেন্ট্রিফিউজ টেকনোলজি কোম্পানির (টিইএসএ) দুটি ভবন ধ্বংস হয়েছে। সেখানে সেন্ট্রিফিউজের বিভিন্ন উপকরণ উৎপাদন করা হয়। দুটি স্থাপনাই এর আগে ইরানের পরমাণু চুক্তির আওতায় আইএইএ পর্যবেক্ষণ করেছিল। সেন্ট্রিফিউজ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ব্যবহৃত হয়, যা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি পরমাণু অস্ত্র তৈরিতেও দরকার।

এছাড়া ইরানের রাজধানী তেহরানের পূর্ব উপকণ্ঠে অবস্থিত ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়েও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বুধবার ইরানি সংবাদমাধ্যমের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, তেহরানের এই বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে ইরানের অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ধরা হয়। 

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক অধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্টস বলছে, ইরানজুড়ে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৮৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত ১ হাজার ৩২৬ জন। সংগঠনটি বলেছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৩৯ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ১২৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে তারা শনাক্ত করতে পেরেছে।

ইসরায়েলি হামলায় হতাহতের বিষয়ে সর্বশেষ সোমবার তথ্য জানিয়েছে ইরান সরকার। দেশটির সরকারি হিসাবে, নিহতের সংখ্যা ২২৪। আর আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৭৭ জন মানুষ।

চলমান সংঘাতে ইরান সরকার নিয়মিত হতাহতের তথ্য প্রকাশ করছে না। সবশেষ সরকারি তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল গত সোমবার। সেই তথ্য অনুসারে, ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৭৭ জন মানুষ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ