কমলা, লেবু কিংবা মাল্টা– এই লেবুজাতীয় ফলের চাহিদা অনেক বেশি। আগে এসব ফলের বড় অংশ আসত বিদেশ থেকে। রসালো আর পুষ্টিকর এ ফল এখন দেশেই চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। উৎপাদন বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে কৃষকের আয়। এই পরিবর্তনের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘লেবুজাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি’ প্রকল্প।
প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৯ সালে। উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় আবহাওয়ায় মানানসই উন্নত জাতের লেবুজাতীয় ফলের চাষ বাড়ানো, আমদানি-নির্ভরতা কমানো এবং পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল আরও বড় লক্ষ্য– কৃষিকে বহুমুখীকরণ, বিকল্প ফসলের মাধ্যমে কৃষকের আয়ের পথ বাড়ানো এবং উদ্যোক্তা সৃষ্টির সুযোগ তৈরি।
দেশের ৩০ জেলার ১২৩ উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এ বছর প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। প্রকল্পটি ইতোমধ্যে ফলদ বাগান বিস্তারে দৃশ্যমান সাফল্য এনে দিয়েছে। বাড়ছে উৎপাদন, বাজারে সরবরাহ হচ্ছে দেশীয় লেবু, আর উপকৃত হচ্ছেন হাজারো কৃষক।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড.
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, লেবুজাতীয় ফলের উৎপাদন ২৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রকল্প এলাকায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে লেবুজাতীয় ফসলের উৎপাদন ছিল ১ লাখ ৬১ হাজার ৮৯০ টন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উৎপাদন বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ৩৮০ টন। আবাদ এলাকা বেড়েছে পাঁচ হাজার হেক্টর। প্রকল্পের আওতায় ৬৫ হাজার ২৮০ কৃষককে প্রশিক্ষণ ও চারা-উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। তাদের আধুনিক ফলচাষ, রোগ ব্যবস্থাপনা, সংগ্রহোত্তর সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ পদ্ধতি শেখানো হয়েছে। লেবুচাষিদের কাছে মানসম্মত চারা পৌঁছে দিতে এ প্রকল্পের আওতায় ২০টি হর্টিকালচার সেন্টারে মাতৃবাগান স্থাপন করা হয়েছে এবং চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। কৃষকরা যে কোনো সময়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত জাত নিকটস্থ হর্টিকালচার সেন্টার থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
লেবুজাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের পরিচালক ফারুক আহমদ বলেন, এখন দেশে উৎপাদিত কমলা, মাল্টা ও লেবু বাজারে নিয়মিত মিলছে। মানুষের খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর ও রসালো লেবুজাতীয় ফলের ব্যবহার বাড়ছে। কৃষকের জীবনেও আসছে পরিবর্তন। সরকারের উদ্যোগ ও কৃষকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় লেবুজাতীয় ফল সম্ভাবনাময় খাত হয়ে উঠছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কমল চ ষ ল ব জ ত য় ফল র প রকল প র ফসল র উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল