সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ছেলে সাদাকাত জামান, তানায়েম জামান চৌধুরী ও মেয়ে জেবা জামানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ রোববার এ আদেশ দেন।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে দুদক জানতে পেরেছে। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

এর আগে ১৭ জুন বিদেশে অর্থ পাচারে সহায়তার অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ তিনজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। তাঁরা হলেন উৎপল পাল, আব্দুল আজিজ ও সৈয়দ কামরুজ্জামান।

গত ৯ মার্চ সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা ২৩টি কোম্পানির ১০২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। ৫ মার্চ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার ৮৫ টাকা লেনদেনের তথ্য আদালতকে জানিয়েছে দুদক।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়, সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর সাইফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। তখন দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল, সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারসহ অনিয়ম–দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাইফুজ্জামান বিদেশে অর্থ পাচার করে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে যুক্তরাজ্যে ৩৫০টি বাড়ি কিনেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তিনি বাড়ি কিনেছেন ২২৮টি। যুক্তরাষ্ট্রে ৯টিসহ অন্যান্য দেশেও তিনি বাড়ি কিনেছেন। তবে যুক্তরাজ্যে তাঁর সম্পদ জব্দ করেছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনযুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পত্তি জব্দ১১ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব ক ভ ম মন ত র য ক তর জ য

এছাড়াও পড়ুন:

দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।

আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।

তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ