পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে ইউপি সদস্য ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম হাওলাদার (৫০) এবং তার ভাবি মুকুল বেগম (৪৫) খুন হয়েছেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা শহিদুল ইসলামের স্ত্রী রেহেনা বেগমকেও (৪২) কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে।

শুক্রবার (২৭ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পশ্চিম চর বলেশ্বর গ্রামের মোস্তফা হাওলাদারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শহিদুল ইসলাম হাওলাদার চন্ডিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম চরবলেশ্বর ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং ওই গ্রামের মৃত মোসলেম আলী হাওলাদারের ছেলে। তার আপন বড় ভাই মরহুম মোস্তাফিজুর রহমান হাওলাদার চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং মেজ ভাই মনিরুজ্জামান সেলিম উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক।

স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ঘরে নেটওয়ার্কের সমস্যা দেখা দেওয়ায় বাড়ির সামনে পুকুরপাড়ে গিয়ে কথা বলছিলেন শহিদুল ইসলাম। এ সময় দুর্বৃত্তরা তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং কোপাতে থাকে। তার চিৎকার শুনে ভাবি মুকুল বেগম ঘর থেকে তাকে রক্ষা করতে এলে দুজনকেই নৃশংসভাবে কুপিয়ে বাড়ির উঠানে ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা। এরপর শহিদুলের স্ত্রী রেহেনা বেগম বাইরে এলে তাকেও বাড়ির উঠানে ফেলে কোপাতে থাকে দুর্বৃত্তরা। পরে আশপাশের লোকজন এসে তিনজনকেই বাড়ির উঠানে কাদাপানির মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। এতে শহিদুল ইসলাম ও তার ভাবি ঘটনাস্থলে নিহত হন এবং শহিদুলের স্ত্রী রেহেনা বেগমকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

পরে তার অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাঝরাতে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবার (২৮ জুন) সকাল পর্যন্ত তার জ্ঞান ফেরেনি।

এ খবর পেয়ে ইন্দুরকানি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মারুফ হোসেনসহ গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রাতেই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

এ ব্যাপারে শহিদুল ইসলামের শ্যালক মিজান মাঝি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘‘আমার দুলাভাই সরকার পরিবর্তনের পর তিনটি রাজনৈতিক মামলায় পুলিশের হাতে আটক হয়ে কারাবাসের পর কয়েক মাস আগে কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বাড়িতে ছিলেন। কিন্তু কেন এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটল তা বুঝে উঠতে পারছি না।’’ 

ইন্দুরকানী থানার ওসি মো. মারুফ হোসেন জানান, শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ির উঠানে ইউপি সদস্য ও তার ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ইউপি সদস্যের স্ত্রী রেহেনা বেগম গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন এবং খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর বলে জানান তিনি।

ঢাকা/তাওহিদুল/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ব ত তর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ