কবিতা নিজের ছোট ছেলে রামদেবকে মেয়েদের জামা ও মাথায় ওড়না পরিয়ে দেন। দুই চোখে কাজলও দেন। নিজের গয়না দিয়ে ছেলেকে সাজিয়ে নেন। এরপর কবিতা নিজে, তাঁর স্বামী এবং রামদেব ও আরেক ছেলেসহ জলাধারে ঝাঁপ দেন। পরে তাঁদের চারজনকেই মৃত উদ্ধার করা হয়।

ভারতের রাজস্থানের বারমারে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে ওই জলাধার থেকে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। শিশু সন্তানদের নিয়ে কেন এ দম্পতি আত্মহত্যা করলেন, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত চারজন হলেন শিবলাল মেঘওয়াল (৩৫), তাঁর স্ত্রী কবিতা (৩২), এবং তাঁদের দুই ছেলে বজরং (৯) ও রামদেব (৮)। জলাধারটি তাঁদের বাড়ি থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে অবস্থিত।

পুলিশ জানায়, ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। খবর পেয়ে দম্পতির শ্বশুরবাড়ির সদস্যসহ অন্য আত্মীয়-স্বজন রাতেই ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁরা পরদিন সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে বুধবার ভোরে তাঁদের উপস্থিতিতে জলাধার থেকে চারটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিএসপি) মানোরম গর্গ জানিয়েছেন, কয়েকবার ফোন করেও শিবলালের ছোট ভাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। এরপর শিবলালের পরিবারের খোঁজ নিতে এক প্রতিবেশীকে বাড়িতে পাঠান তিনি। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে সাড়া না পেয়ে ওই প্রতিবেশী স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানান।

পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ি থেকে একটি হাতে লেখা চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিরকুটটি শিবলালের লেখা বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২৯ জুন তারিখের ওই চিঠিতে তিনজনের নাম উল্লেখ করে তাঁদেরকে আত্মহত্যার জন্য দায়ী করা হয়েছে।

অভিযুক্তদের একজন শিবলালের ছোট ভাই। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিবারের মধ্যে যৌথ মালিকানার জমি ও বসতবাড়ি নিয়ে বছরের পর বছর বিরোধ চলে আসছিল। চিরকুটে অনুরোধ করা হয়েছে, পরিবারের চার সদস্যের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া যেন বাড়ির সামনেই সম্পন্ন করা হয়।

কবিতার চাচা জানিয়েছেন, শিবলাল প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্পের আওতায় সরকারি সহায়তায় একটি আলাদা ঘর নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু চিরকুটে অভিযোগ করা হয়েছে, এতে তাঁর মা ও ছোট ভাই আপত্তি জানান এবং বাধা দেন। চিরকুটে অভিযুক্ত হিসেবে তাদের দুজনেরই নাম রয়েছে।

কবিতার চাচা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘শিবলাল প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্পের আওতায় পাওয়া অর্থ দিয়ে একটি আলাদা ঘর বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মা ও ভাই তাতে বাধা দেন। দীর্ঘদিনের এই হয়রানি তাঁকে ২৯ জুন আত্মহত্যার চিরকুট লিখতে বাধ্য করে।’

কবিতার চাচা আরও জানান, ঘটনার দিন বাড়িতে পরিবারের বাকি সদস্যরা ছিলেন না। শিবলালের মা তাঁর ভাইকে দেখতে বারমারে আর বাবা গিয়েছিলেন একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে শিবলাল ও কবিতা দৃশ্যত মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন এবং আত্মহত্যা করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ বল ল র পর ব র র চ রক ট জল ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার

সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।

কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।

নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।

জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’

কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’
  • বিলাসবহুল প্রমোদতরিতে খুন, এরপর...
  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার