Prothomalo:
2025-09-18@04:52:46 GMT

বিয়ের গীত: নারীজীবনের সংগীত

Published: 5th, July 2025 GMT

মনে পড়ে, দুপুর গড়িয়ে বিকেল। বাতাসে ভেসে আসছে ধীর, মৃদু কিন্তু দৃঢ় সুর। বালক আমি। কাছে যাই। পাড়ার নারীরা একত্র হয়েছেন। আমাদের আঙিনার একপাশে, কাঁঠালগাছের নিচে। একটি জলচৌকি পাতা। তাতে বসে গীত শুরু করেছেন গীত গাওনি নারীরা, ‘গাও হেলানি দিয়া নাচ রে গোলাপী/ কোল হেলানি দিয়া নাচে গোলাপী/ গোলাপীরও সিঁথার সেন্দুর রৈদে ঝলমল করে/ গোলাপীরও নাকের নোলক রৈদে ঝলমল করে.

..।’ সেই সুরে ধীরে ধীরে জমে উঠছে এক অদৃশ্য নাট্যশালা, যেখানে নেই কোনো মঞ্চ, নেই কোনো আলোঝলমল সাজ বা বাদ্যবাজনা, কিন্তু আছে এক অমোঘ জীবনগদ্য। এই গীত, এই সুর, এই ছন্দ, সব মিলিয়ে যেন গ্রামীণ নারীর এক বিস্ময়কর ভাষা, যা শুধু কণ্ঠে নয়, আত্মায় বাজে।

বিয়ের গীত কেবল বিয়েবাড়ির বিনোদন নয়, কেবল বিয়েতেই গাওয়া হয় এমনও নয়, বিয়ের গীত আসলে নারীর বেঁচে থাকার ভাষা। নীরব অথচ গভীর আত্মপ্রকাশের এক উপায়। বিবাহসংক্রান্ত আচার-অনুষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অংশ যদিও, তবু বিয়ের গীত নারীর কণ্ঠে যখন-তখন প্রাণ পেতে পারে, পায়।

এটাই আমাদের স্বাভাবিক জীবনচিত্র। হয়তো দুর্লভ আজ। তবু রংপুর অঞ্চলে বিয়ের গীত ক্ষীণ স্রোতের মতো বহমান। নগরগুলোর মঞ্চে বিয়ের গীতের জনপ্রিয়তা লক্ষণীয়। প্রযুক্তির আবির্ভাবের পর ইউটিউব-ফেসবুকে বিয়ের গীতের ভিডিও বিরল নয়। সেখানে স্থানীয় কিংবা বহিরাগত বাদ্যও যুক্ত হয়েছে।

বিয়ের গীতের সুর প্রাণস্পর্শী ও প্রাকৃতিক। এই বিশিষ্ট সুরের ভাষায় নারীর জীবনধারার চিত্ররূপ দর্শক-শ্রোতামাত্রকেই এমনভাবে আলোড়িত করে যে কেবলই দর্শক-শ্রোতা হয়ে নির্লিপ্ত থাকা মুশকিল হয়, ভাবার আগেই আলগোছে নিজেকেও হয়ে উঠতে হয় গীদাল।

প্রতিটি গীতে জড়িয়ে আছে নারীর পিতৃগৃহত্যাগ এবং আরেক পরিবারে গমনের অনিবার্য বিচ্ছেদ অথচ রোমাঞ্চ, বেদনাময় আকাঙ্ক্ষা—ভরসাহীন ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি, আত্মবিচ্ছেদ, ভয়, ভালোবাসা আর গোপন উদ্বেগ। গীতের পঙ্‌ক্তি কখনো হাসায়, কখনো কাঁদায়, কখনো ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে, ভাবায়। আবার কখনো নিত্যদিনের গল্প দিয়ে ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের এমন গভীরতর বিন্দু, যেখানে শব্দের অর্থের চেয়ে সুরের অভিঘাত বেশি চমকায়। বিয়ের গীত এমন সংগীত, যা জীবনযাপনের উপায়—বিশেষত, নারীর। গ্রামবাংলার নারীকুলের অন্তর্গত অভিজ্ঞতার সাংকেতিক ভাষা। তাতে পুরুষের অংশগ্রহণ ঐতিহ্যগতভাবেই কম। কালেভদ্রে জেন্ডার–বৈচিত্র্যের মানুষ ও রসিক পুরুষ কেউ কেউ অংশ নেন বটে, কিন্তু গানের মেজাজ, ভাষা ও অভিব্যক্তির কেন্দ্রে থাকেন নারী। সেখানে নারীই মুখে মুখে রচনা করেন গীত, পরিবেশনও করেন স্বতঃস্ফূর্ত সুরে—যা পরম্পরায় অর্জিত। তাতে বাদ্যযন্ত্রের প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় না নৃত্য প্রশিক্ষণের। বিশেষ তালিম না নিয়েও কেমন করে বিয়ের গীতের শিল্পী হয়ে ওঠেন যেকোনো নারী, তা এক বিস্ময়।

বিয়ের গীতে পরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। একই বিয়ের গীতে এক-দুই লাইন ঠিক রেখে নিজেদের জীবনযাপনের সাপেক্ষে কথা যুক্ত করা হয়। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এবং এলাকাভেদে কথা ও সুরের রকমফের কানে লাগতে পারে। মানুষের জীবনধারার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে সংশ্লিষ্ট সংগীতের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনশীলতা খুব স্বাভাবিক। বিয়ের গীতের সুর তো সংগীতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের কাছে তালিম নিয়ে আয়ত্ত করতে হয় না, বরং স্থানীয় মৌখিক ভাষার যে প্রচ্ছন্ন টান, তারই প্রলম্বিত রূপ সুর হয়ে ফোটে। সুতরাং নীলফামারী ও গাইবান্ধা এলাকায় একই গানের রূপভিন্নতা ঘটতে পারে।

বিয়ের শুরুটা ঘটে ঘটকালির মাধ্যমে। এ পর্যায়ের গীতেও ঘটে আত্মপরিচয়ের প্রকাশ। দরিদ্র ঘরের দুঃখ, সেই দুঃখের হাস্যরস আর অনাড়ম্বর আত্মপ্রত্যয়, ‘ওরে মরার ব্যাটা ঘটোককোনা/ আলচে হামার বাড়িতে/ কী খাইতে দিমো এলা/ চাউল নাই হামার হাঁড়িতে...।’ কিন্তু এই কথায় কোথাও লজ্জা নেই, বরং আছে এক প্রকার সাহস—সহজ সামাজিক আচরণ। নিজের অভাবকে গানে গানে প্রকাশ করার এই রীতি নারীর একধরনের নিজেকে জানিয়ে দেওয়ার কৌশল। একই গীতে ঘটক পক্ষের হয়ে উত্তর দিতেও ভোলে না গীদালের দল, ‘হয় না ক্যানে পান্তা বাহে/ সাথে একনা ভুজনা (ভাজাভুজি) দ্যাও/ খায়া নেমো প্যাট ভরে/ আঘটন ঘটামো হামরা/ বিয়াওকোনা হবার পরে।’ এ যেন কনের পরিবার ও ঘটকের মধ্যে তীক্ষ্ণ অথচ কৌতুকময় কথোপকথন। সুরের আড়ালে সামাজিক দর–কষাকষি। তবে সেই দর–কষাকষির কেন্দ্রে থাকে সেই নারী, যার ভবিষ্যৎ এই সম্পর্ক নির্ধারণ করবে।

দর–কষাকষিতে মিলে গেলে আসে বিয়ের নানা পর্ব—গায়েহলুদ, গোসল, কলাগাছের ওপর রঙের মায়াবী মোড়ক চড়িয়ে সাজানো মারোয়া, ফোড়ল (মাটির প্রদীপ) জ্বালানো ও ডোবানো, আরও কত কী। প্রতিটি আনুষ্ঠানিকতায় উচ্চারিত হয় গীত। এক পঙ্‌ক্তির ভেতর দিয়ে নারী নিজের দুঃখ লুকিয়ে রাখেন, আরেক পঙ্‌ক্তিতে তা হৃদয়স্পর্শী ছাঁচে প্রকাশ করেন, ‘ঝরি পড়ে ছিপোরে ছিপো/ আঙিনা হইল মোর পিছিলা রে রসিয়া/ সেই না আঙিনায় নাচন রে নাচিতে/ ছিঁড়িল গলার মালার রে রসিয়া…।’ এই ছিঁড়ে যাওয়া মালা কেবল অলংকার নয়, যেন নিজের বাল্য, ঘর, নিজের পরিচয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। মেয়েটি জানে, আজ থেকে সে আর আগের মতো থাকবে না। তাই তার হয়ে গীত হয়, ‘মায়ে কয় মোক ছোট ছোট/ বাপে না দেয় বিয়া/ আর কতকাল আকিমো/ যৈবন অঞ্চলে বান্দিয়া…।’ এই গীত যেন পিতৃতান্ত্রিক সামাজ-কাঠামোর দিকে নারীর তোলা শৈল্পিক, ক্ষীণ কিন্তু গভীর প্রশ্ন। সমাজ তাকে কোথায় রাখবে? কী পরিচয়ে সে থাকবে? কেবল কনের নয়, প্রত্যেক নারীই যেন গীতের ভেতরে নিজের জীবন থেকে উৎসারিত এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন। প্রতিটি গীতের প্রতিটি স্তবক এই সমাজে নারীর অভিজ্ঞতা ও স্মৃতি এবং প্রত্যাশার বহিঃপ্রকাশ। সাধারণভাবে বিয়ের গীতে একই কথা ফিরে ফিরে আসে। পুরো গীত জুড়ে একটানা একই সুরের বাঁধন। নির্দিষ্ট প্যাটার্নের ঢেউ খেলানো তাল। এ বৈশিষ্ট্য জনপদের সবাইকে গীদাল করে তোলে। একটি গীত নির্দিষ্ট ভূগোলের সমভাষী সবার হৃদয়ে বাজে। এ যেন পুরো সমাজব্যবস্থার না বলা কথার অনুবাদ। কখনো গীত গাওয়া হয় পাল্টাপাল্টি, দলবদ্ধভাবে—দুই দলে বিভক্ত হয়ে, যেমন বরপক্ষ ও কনেপক্ষ—সামাজিক বিতর্কের সংগীতময় রূপ যেন তা।

বিয়ের প্রতিটি আচারে, অনুষঙ্গে গীত এমনভাবে গাঁথা, যেন আচার-আনুষ্ঠানিকতা আর সংগীত এক হয়ে যায়। মারোয়ার সামনে কনেকে বসিয়ে গাওয়া হয়: ‘ছোট ছোট মারোয়া/ ঢাল ঢাল পান/ শহরে মেলিয়া গেইছে কাক/ রে মারোয়া ভালোবাসোম তোক…।’

ফোড়ল ডোবানোর আগে গীত চলে, ‘আগে আগে যায়রে মোড়লী/ পাছে যায় তার ফোড়লী/ মধ্যে যায় রে সোনার চাইলন বাতি/ সোনার চাইলন থাকিতে বাঁশের চাইলন ব্যারকাইছে (বের করেছে)/ হয়া যাক আজ এই চাইলনের শাদি…।’

গীত কোনো একক রচয়িতার নয়, কোনো কাগজে লেখা কাব্য নয়। স্বরলিপি চিনে তৈরি করা সুর নয়। মৌখিকতায় জন্ম নেওয়া, স্মৃতিতে বাঁচা, আর অভিজ্ঞতায় গড়ে ওঠা এক সংগীতায়িত জীবন্তিকা বিয়ের গীত। ব্রুনো নেটল দেখিয়েছেন, ‘(ঐতিহ্যবাহী) সংগীত শুধুই শব্দের বিন্যাস নয়, এটা এক প্রতীকী কাজ, যা সমাজের গভীরে প্রোথিত।’ বিয়ের গীত বাংলার গ্রামীণ সমাজের সামষ্টিক আচরণ, আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের পরিচয়, আমাদের শিকড়ের গভীরতা।

তবে দুঃখজনকভাবে, এমন গীত আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। নানাবিধ বাধায়—সামাজিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক বৈষম্য, সাংস্কৃতিক অবহেলা—বিয়ের গীত হয়ে উঠতে শুরু করেছে ঐতিহ্য পাঠের বিষয় মাত্র। অথচ বিয়েবাড়ির আঙিনায় সাউন্ড বক্সের হিন্দি গান, ডিজে পার্টির আওয়াজ বেড়েছে। অবশ্য গীত গাওনিরা হারিয়ে গেছেন তা বলা যাবে না। তাঁরা আছেন, তবে নীরবে, অপ্রাসঙ্গিক হয়ে। কেউ কেউ শ্রমিকের কাজ খুঁজে নিয়েছেন নিকটবর্তী শহরে। তবু যদি খোঁজ পান বিয়ের, ছুটে যান দলবল নিয়ে। হয়তো এঁরাই শেষ প্রজন্ম! নতুন প্রজন্ম নিশ্চয়ই একদিন উপলব্ধি করবে, বিয়ের গীত কেবল সাংস্কৃতিক পরিচয় নয়, পৌরুষপ্রবণ সমাজে এ আমাদের নারীকুলের আত্মচর্চা, আত্মস্মৃতি এবং আত্মপ্রতিবাদের ভাষা। নারী তাঁর জীবনের প্রতিটি অনুচ্চারিত প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন এই গীতের মধ্যে।

আজও কান পাতি। দূর গ্রামে, নির্জন সন্ধ্যায়। ভেসে আসে, ‘ডালিমের গাছে ডালিম ধরে/ ডালিমের ভারে হাইলা পড়ে...।’ শুনতে পাই বিদায়ের বিষণ্ন গীত, ‘বাহির কর বাহির কর রে/ অঞ্চলে ঘিরিয়া/ দয়ার বাবা দেখিলে রে/ না দিবে ছাড়িয়া/ দয়ার মায়ে দেখিলে রে/ না দিবে ছাড়িয়া...।’ সে সুরে কাঁপে বহুদিন আগের কোনো অশ্রুবিন্দু, কোনো ব্যথা, কোনো স্বপ্ন, কল্পনা—হয়তো আমার মায়ের, কিংবা নানির অথবা দাদির। বিয়ের গীত তাই, যা হারিয়ে গেলে নিশ্চিহ্ন হবে নারীর আত্মজীবনী, আত্মকথন, বাংলাদেশের এক অনন্য মৌখিক সাহিত্য এবং জাতিগত আত্মপরিচয় আবিষ্কারের এক মোহময় সূত্র।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জ বন প রক শ আম দ র চ ইলন

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ