ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব নিয়েছেন আদিল চৌধুরী। আজ সোমবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এ দায়িত্বে যোগ দেন। ব্যাংকটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং অঙ্গনে আদিল চৌধুরীর অভিজ্ঞতা ২৫ বছরের বেশি সময়ের। ন্যাশনাল ব্যাংকে যোগদানের আগে আদিল চৌধুরী ব্যাংক এশিয়ার এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে ব্যাংকটি রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা অর্জন করে। এ ছাড়া পরিচালন দক্ষতা বৃদ্ধি, সুশাসন জোরদার এবং সমস্যাগ্রস্ত সম্পদ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ব্যাংক এশিয়াকে ২০২২ সালের শেষে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লাভজনক ব্যাংকে পরিণত করেছিল।

২০২০ সালে ব্যাংক এশিয়ায় উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে আদিল চৌধুরী ১৫ বছরের বেশি সময় বিদেশে বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি হংকং ও সিঙ্গাপুরে দ্য ব্যাংক অব নোভা স্কটিয়ার পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে তিনি এশিয়া-প্যাসিফিক এবং মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের কৌশলগত কার্যক্রম তদারক করেছেন। তার আগে তিনি ঢাকায় ক্রেডিট আগ্রিকোল ইনডোসুজ ও আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে স্কটিয়া ব্যাংকের ঢাকা শাখায় ট্রেজারি বিভাগ গড়ে তোলেন।

আন্তর্জাতিক পরিসরে আদিল চৌধুরীর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থায়ন ব্যবস্থাপনা, যেখানে তিনি বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারি বিনিয়োগ সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন।

আদিল চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিন থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (ভিএলএসআই ডিজাইন) স্নাতক ডিগ্রি এবং কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিওর রিচার্ড আইভি স্কুল অব বিজনেস থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। এ ছাড়া তিনি আর্থিক বাজারের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একাধিক প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন সম্পন্ন করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ