মাদকসহ বগুড়ার আলোচিত তুফান সরকারের স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেপ্তার
Published: 9th, July 2025 GMT
বগুড়ার আলোচিত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারের স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে অস্ত্র, মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতভর অভিযানের পর আজ বুধবার ভোরে শহরের সেউজগাড়ি পাপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে তাঁদের আটক করে সেনাবাহিনীর একটি দল। থানা-পুলিশে হস্তান্তরের পর তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন তুফান সরকারের স্ত্রী আইরিন আক্তার (২০), তুফানের শ্বশুর আলম আকন্দ (৪৫) ও শাশুড়ি তাসলিমা আক্তার (৪০)। অভিযানের সময় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে তুফানের শ্যালক নয়ন পালিয়ে যান।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে তুফান সরকারের ছোট স্ত্রী ছাড়াও তাঁর শ্বশুর-শাশুড়িকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় ১৫ বোতল ফেনসিডিল ও বেশ কিছু ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগার পাঠানো হয়েছে।
তুফান সরকার বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক ছিলেন। তাঁর বাড়ি শহরের চকসূত্রাপুর এলাকায়। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, নারী নির্যাতনসহ ২১টি মামলা আছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভালো কলেজে ভর্তির করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই এক ছাত্রীকে বাসায় নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানাজানির পর তুফানের সাবেক স্ত্রীর বড় বোন তৎকালীন পৌর কাউন্সিলর মারজিয়া এবং তুফানের সাবেক স্ত্রী ওই মেয়ে ও তাঁর মাকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেন। খবর পেয়ে মা-মেয়েকে উদ্ধার করে প্রথমে মারজিয়া ও পরে তুফানসহ তাঁর সহযোগীদের আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর বাদীর সঙ্গে আপস করে কারাগার থেকে মুক্তি পান তুফান।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর একাধিক হত্যা মামলায় আসামি হওয়ায় আত্মগোপনে চলে যান তুফান সরকার। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। দুদকের একটি মামলায় তাঁর ১৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত ফ ন সরক র র ন র পর
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি