ট্যাগের রাজনীতি থেকে আমরা বের হতে চাই: নাহিদ ইসলাম
Published: 10th, July 2025 GMT
ট্যাগ দিয়ে হেনস্তার রাজনীতি থেকে বের হওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় দাড়ি-টুপি বা মুসলমানের চিহ্ন থাকলে শিক্ষার্থীদের শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করা হতো। হিজাব–নিকাব পরা থাকলে তাঁদের ছাত্রী সংস্থার ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। ফলে এই ট্যাগের রাজনীতি থেকে আমরা বের হতে চাই। কোনো ধরনের ট্যাগিং যাতে না চলে, রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে যাতে কাউকে হেনস্তা না করা হয়, এমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই।’
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে পদযাত্রা ও পথসভায় নাহিদ ইসলাম এ কথাগুলো বলেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শাখার আয়োজিত এ সভায় শিক্ষার্থীসহ আশপাশের সাধারণ মানুষও অংশ নেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গণতান্ত্রিক সহাবস্থান থাকবে, মতপ্রকাশের অধিকার থাকবে এবং বাংলাদেশের বুদ্ধিভিত্তিক নেতৃত্ব, সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব, সামাজিক–রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গড়ে উঠবে।’
গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাসে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান তুলে ধরে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা যখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই, তখন ভুলে যাই যে আমরা রাজনৈতিক দল। মনে হয় আমরা আপনাদের সঙ্গের সেই সহযোদ্ধা। আমরাও ছাত্র, আমরাও শিখতেছি। জাতীয় নাগরিক পার্টির কথার থেকেও আমরা গণ-অভ্যুত্থানের গল্পটা মূলত বলতে এসেছি।’
সংস্কার প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল আকাশচুম্বী এবং এখনো আছে। আমরা গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটা রেজিম চেঞ্জ হিসেবে দেখি না। মানুষের জীবনের পরিবর্তন আনবে গণ-অভ্যুত্থান, রাষ্ট্রকাঠামোর সংস্কার আনবে। এই গণ-অভ্যুত্থানের প্রধানতম লেজিটেমিসি হচ্ছে ছাত্ররা ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘এই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দিয়েছে। তাদের সেই নেতৃত্বের বিকাশের জন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রয়োজন। নিজের মতপ্রকাশের অধিকারের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার এবং অধিকারের জন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সরব হোন, আপনাদের (শিক্ষার্থীদের) দাবির সঙ্গে আমরা আছি।’
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা প্রমুখ। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহসমন্বয়ক তানভীর মণ্ডল, ইয়াসিরুল কবীর, গোলাম রব্বানী, সায়েম আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম র জন ত র র জন
এছাড়াও পড়ুন:
স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর
চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।