বাংলা ভাষা বিতর্ক, তোপের মুখে প্রসেনজিতের দুঃখ প্রকাশ
Published: 10th, July 2025 GMT
মুম্বাইয়ে হিন্দি সিনেমা ‘মালিক’ -এর সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চে পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতার পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ওপার বাংলার অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সে দিনের অনুষ্ঠানের পর সিনেমার থেকেও সবচেয়ে বেশি যা নিয়ে চর্চা হয়েছে, তা প্রসেনজিতের একটি বক্তব্য।
সাংবাদিকের বাংলায় করা প্রশ্নে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘এখানে বাংলায় প্রশ্ন করছেন কেন?’ যা নিয়ে চলতে থাকে নানা আলোচনা। এই বক্তব্য নিয়ে টানা কয়েকদিনের আলোচনা-সামালোচনার পর অবশেষে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন প্রসেনজিৎ।
সামাজিক মাধ্যমে তিনি লেলিখেছেন, ‘কিছু দিন হলো আমার একটা কথা, বলা ভালো একটা বাক্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেটা নিয়েই কিছু বলতে চাই। আমি ৪২ বছর মূলত বাংলায় কাজ করছি। গত কয়েক বছর জাতীয় স্তরে কাজ করার সুযোগ এসেছে। সেরকমই একটা হিন্দি সিনেমার ট্রেলার মুক্তি উপলক্ষে ১ জুলাই মুম্বাইয়ের সাংবাদিক সম্মেলন হয়েছিল। ডায়াসে যারা ছিলেন ছবির পরিচালক, শিল্পী, অন্যান্যরা সবাই প্রথম থেকেই মূলত ইংরেজিতেই কথা বলছিলেন। সেখানেই বাংলার একজন সাংবাদিক আমায় বাংলায় প্রশ্ন করেন। তিনি আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত, অত্যন্ত স্নেহের পাত্রী।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘সেই মুহূর্তে আমার মনে হয়েছিল বাংলায় উত্তর দিলে হয়তো অনেকে সঠিক মানে বুঝতে পারবেন না। যেহেতু ওখানে বাংলা ভাষা বোঝেন না এমন মানুষের সংখ্যাই বেশি। তাই খানিকটা বাধ্য হয়েই আমি ওকে বলি যে বাংলা ভাষায় কেন প্রশ্ন করছেন?’
অভিনেতার মতে, সামাজিক মাধ্যমে শুধুমাত্র একটা সেনটেন্স তুলে ধরেই বিচার করা হচ্ছে তাকে। তাই হয়তো অনেকেই ওই কথায় আঘাত পেয়েছেন। তবে এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে ভাবতেও পারেননি অভিনেতা।
তার কথায়, ‘কষ্ট আমিও পেয়েছি, এখনো পাচ্ছি। কারণ, এই কথার এরকম প্রতিক্রিয়া হতে পারে ভাবতেই পারিনি। হয়তো কয়েকটা ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করে আমার বলা কথার উদ্দেশ্যটা আমি বোঝাতে পারিনি। আর আমার ধারণা সেখান থেকেই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’
প্রসেনজিৎ বলেন, ‘এমনটা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। বাংলা আমার প্রাণের ভাষা। ভালোবাসার ভাষা। তবে চিরকাল আমার কাছে বাংলার মানুষের বিচার শিরোধার্য। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই ধারণা অটুট থাকবে। তবে শেষে যেটা না বললেই নয়, আমি এইটুকু বুঝেছি, আমার বলা কথায় আপনাদের যথেষ্ট আঘাত লেগেছে। তাই আমি দুঃখিত।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি বাড়িতে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইতালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে আতাউর রহমান (৩৫) নামের একজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আতাউর কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।।
গতকালের ওই ঘটনার পরপরই ছোট ইতালি গ্রামের বিস্ফোরণস্থল ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ডিবি সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি তাজা হাতবোমা। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে উদ্ধার হওয়া হাতবোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। পরে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আতাউর রহমানসহ কুমিল্লা থেকে আসা চার ব্যক্তি ছোট ইতালি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ওঠেন। মুক্তারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪৫) মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুক্তারের বাড়ির ভেতরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হন। পরে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর মুক্তার হোসেনের তিন সহযোগী দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত আতাউরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত হাতবোমা ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। বাগবাড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগামী নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।