ভিডিও দেখে ঘুরতে গিয়ে দেখেন এমন কিছুই নেই
Published: 12th, July 2025 GMT
এখন সব দিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের জোয়ার। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষণা হচ্ছে, লেখালেখি হচ্ছে, অডিও-ভিডিওসহ নানা কিছু তৈরি হচ্ছে। এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওতে একটি দর্শনীয় স্থান দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন মালয়েশিয়ার এক প্রবীণ দম্পতি। তাঁরা প্রায় তিন ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে গিয়েছিলেন দেশটির পেরাক রাজ্যের একটি ছোট শহরে। কিন্তু যাওয়ার পরে তাঁরা জানতে পারলেন, যে দর্শনীয় স্থানটি দেখতে এসেছেন, আদতেই সেটার কোনো অস্তিত্বই নেই।
এই দম্পতি কুয়ালালামপুর থেকে গিয়েছিলেন কুয়াক হুলু শহরে। ভিডিওতে ‘কুয়াক স্কাই রাইড’ নামে মনোরম একটি কেব্ল কারের যাত্রা দেখানো হয়েছিল। যেখানে উপস্থাপিকা ট্রামে চড়ে পাহাড়ি দৃশ্য উপভোগ করছেন এবং দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথাও বলছিলেন।
সেই ভিডিও দেখে মুগ্ধ হয়ে ওই দম্পতি অনিন্দ্যসুন্দর স্থানটি নিজ চোখে দেখার লোভ সামলাতে পারেননি। স্থানটি ঘুরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। পরিকল্পনা করে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন। ৩০ জুন তাঁরা কুয়াক শহরের একটি হোটেলে পৌঁছান। রিসেপশনে গিয়ে জানতে চান, কুয়াক স্কাই রাইডে যাওয়ার উপায় কী?
হোটেল কর্মী ডায়া প্রথমে ভেবেছিলেন, অতিথিরা হয়তো মজা করছেন। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন, তাঁরা আসলেই জায়গাটির ঠিকানা জানতে চাইছেন। তাঁদের পুরোপুরি বিশ্বাস, কুয়াকে এমন একটি দর্শনীয় স্থান আছে। ডায়া ওই দম্পতিকে বলেন, এই ছোট্ট সুনসান শহরে আসলে তেমন কোনো দর্শনীয় স্থানই নেই।
ওই দম্পতি ডায়াকে বলেন, তাঁরা ‘টিভি রাকইয়াত’ নামের একটি চ্যানেলের একটি ভিডিও দেখেছেন। সেখানে দারুণ চটপটে এক নারী উপস্থাপিকা কুয়াক স্কাই রাইডের বিস্তারিত পরিচয়, সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি তুলে ধরেছেন।
তখন ডায়া তাঁদের বলেন, ভিডিওতে দেখানো উপস্থাপিকা, ট্রামযাত্রা, দর্শনার্থী, পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য, রেস্তোরাঁ—সবই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি। বাস্তবে এসবের অস্তিত্বই নেই। তাঁরা যা দেখেছেন, তার কোনো কিছুই বাস্তব নয়। এ কথা শুনে বৃদ্ধা চটে যান। বললেন, ‘মানুষকে নিয়ে কেন এই প্রতারণা?’
হোটেল কর্মী বলেন, ওই নারী এতটাই রেগে গিয়েছিলেন যে ভিডিওর সাংবাদিককে আদালতে নেওয়ার হুমকি দেন। ভিডিওর সবকিছু যে প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি, বারবার বোঝানো সত্ত্বেও তিনি তা বুঝতে পারছিলেন না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র একট
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি বাড়িতে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইতালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে আতাউর রহমান (৩৫) নামের একজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আতাউর কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।।
গতকালের ওই ঘটনার পরপরই ছোট ইতালি গ্রামের বিস্ফোরণস্থল ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ডিবি সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি তাজা হাতবোমা। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে উদ্ধার হওয়া হাতবোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। পরে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আতাউর রহমানসহ কুমিল্লা থেকে আসা চার ব্যক্তি ছোট ইতালি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ওঠেন। মুক্তারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪৫) মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুক্তারের বাড়ির ভেতরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হন। পরে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর মুক্তার হোসেনের তিন সহযোগী দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত আতাউরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত হাতবোমা ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। বাগবাড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগামী নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।