ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোট ভাই ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তার ব্যবহৃত গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং জেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বালিয়াডাঙ্গী সমির উদ্দিন স্মৃতি মহাবিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৮ বছর পর শনিবার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা নিয়ে শুরু হয় উত্তেজনা। ফলাফল ঘোষণার দাবিতে স্থানীয় নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনসহ জেলার অন্য নেতাদের দুই ঘণ্টারও বেশি সময় অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় তারা ফলাফল ঘোষণা না করা পর্যন্ত কাউকে স্থান ত্যাগ করতে দেবেন না বলে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ থাকার পর রাত পৌনে ৯টার দিকে মির্জা ফয়সল আমিন কাউন্সিলের ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফল ঘোষণা শেষে তিনি বাড়ি ফেরার জন্য নিজের গাড়িতে উঠতে গেলেই ঘটে বিপত্তি। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তার ওপর চড়াও হয়।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মির্জা ফয়সল আমিনকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছুড়ে মারা হচ্ছে। তিনি দ্রুত গাড়িতে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে হামলাকারীরা তার গাড়িতেও হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। এ সময় ফয়সল আমিনের ওপর সরাসরি হামলার চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে থাকা অন্য নেতাকর্মীরা তাকে রক্ষার চেষ্টা করেন। তখন বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।

ফয়সল আমিনের গাড়িটির মালিক ও তার সফরসঙ্গী মো.

রাশেদ বলেন, ‘এই গাড়িতে ভাইয়া (মির্জা ফয়সল) এবং আমি নিয়মিত চলাচল করি। আজকেও আমরা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলে এসেছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবেই সব শেষ হচ্ছিল। কিন্তু ফলাফল ঘোষণা করে ভাইয়া যখন বাড়ি ফেরার জন্য গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তার ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়। আমার গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়েছে।’

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও ততক্ষণে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি মো. শওকত আলী সরকার বলেন, ‘ফলাফল ঘোষণার পর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গাড়িতে উঠতে গেলে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। তবে কারা এই হামলা চালিয়েছে, তাদের এখন পর্যন্ত চিহ্নিত করা যায়নি। আমরা তদন্ত শুরু করেছি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঠ ক রগ ও ব এনপ ন ত কর ম ক উন স ল ব এনপ র উপজ ল র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ