যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের তিন দিনব্যাপী দ্বিতীয় দফা শুল্ক আলোচনা শেষে বেশ কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। তাই ঢাকার আশা, আগামী ১ আগস্টের নির্ধারিত সময়ের আগেই একটি ইতিবাচক ফল অর্জন সম্ভব হবে। ওই দিন থেকেই সব বাংলাদেশি পণ্যে অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

শনিবার প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘কিছু বিষয় এখনো অমীমাংসিত থাকলেও আলোচনায় বেশ অগ্রগতি হয়েছে।’ তিনি জানান, উভয় পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আন্তমন্ত্রণালয় পর্যায়ে আলোচনা চলবে এবং দুই দেশের প্রতিনিধিরা আবারও বৈঠকে বসবেন। আলোচনা সরাসরি ও ভার্চ্যুয়ালি—উভয় মাধ্যমেই হতে পারে। তারিখ ও সময় শিগগিরই নির্ধারণ করা হবে।

প্রয়োজনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাণিজ্যসচিব ও অতিরিক্ত সচিব আবারও যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব।

তিন দিনের আলোচনা শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই একটি ইতিবাচক সমঝোতায় পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত আলোচনায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ঢাকা থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেন। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও কপিরাইট–সংক্রান্ত সংস্থার কর্মকর্তারাও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের দূতাবাস আলোচনার সমন্বয় করে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয় (ইউএসটিআর) ৯-১১ জুলাই পারস্পরিক শুল্ক চুক্তি নিয়ে দ্বিতীয় দফা আলোচনার জন্য বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়।

৭ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৪টি দেশের নেতাদের চিঠি পাঠান। বাংলাদেশ এসব দেশের অন্যতম।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে বলেন, ‘আপনার দেশের বাজার আমাদের জন্য উন্মুক্ত করলে এবং শুল্ক ও অশুল্ক বাধা তুলে নিলে, আমরা এই চিঠিতে উল্লিখিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক হার পুনর্বিবেচনা করতে পারি।’

ট্রাম্প বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে ঘোষিত এই শুল্কহার বৃদ্ধি বা হ্রাস—উভয়ই হতে পারে। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা চিঠিতে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কখনোই আপনাকে হতাশ করবে না।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি পূরণে ৩৫ শতাংশ হার এখনো যথেষ্ট নয়। তবে, আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপন করেন, তাহলে কোনো শুল্কই থাকবে না। বরং দ্রুত অনুমোদন পেতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকার মব জাস্টিস বরদাশত করে না: রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, মব জাস্টিস সরকার কোনোভাবেই বরদাশত করে না। যেখানেই মব জাস্টিস হচ্ছে সেখানেই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আজ শনিবার সকালে ঢাকার সাভারে উপজেলা পরিষদ চত্বরে জেলা প্রশাসন আয়োজিত 'বেটার ঢাকা ডিসট্রিক্ট ইনিশিয়েটিভস' কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। 

এ সময় পরিবেশ দূষণ রোধে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, মেগা প্রকল্প ছাড়াও ছোট প্রকল্প দিয়েও মানুষের উন্নয়ন সম্ভব। পরিবেশদূষণ রোধে নিজেদের সচেতন হতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রাণ, প্রকৃতিকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে না রাখব ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবেশের উন্নয়ন হবে না। 

বায়ু দূষণ রোধে চীনের উদাহরণ তুলে ধরে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করছি, আশা করি সকলের সহযোগিতায় দ্রুত বাংলাদেশের পরিবেশের উন্নয়ন সম্ভব হবে।’

ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, পরিবেশ যদি না বাঁচে আপনি যত বড় সম্পদশালী হোন না কেন বেঁচে থাকতে পারবেন না। এটার প্রভাব পড়বে আমাদের ওপর। 

দখল দূষণের বিষয়ে তিনি বলেন, স্থানীয়ই নদী দখল এবং দূষণের সঙ্গে জড়িত। 

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাভার পৌরসভার প্রশাসক আবুবকর সরকারের উদ্যোগে অনুষ্ঠানে সাভার উপজেলায় রোপণের জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণের মাঝে এক লাখ গাছের চারা বিতরণ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ