পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ীকে হত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ–সমাবেশ করেছে ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশ থেকে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আয়োজনে শনিবার বিকেলে তেজগাঁও সাতরাস্তা এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মগবাজারে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

ওই সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, অপশাসন-দুঃশাসন এবং জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ক্ষমতায় টিকে ছিল। কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হয়নি; বরং ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে তাদের লজ্জাজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। আজ যারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দিবাস্বপ্নে বিভোর, তারা যদি পতিত স্বৈরাচারের পরিণতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ না করে, তাহলে তারা ১৫ মাসও ক্ষমতায় টিকতে পারবে না।

পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ীকে হত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করছে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামী.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

নীলার দাফন শেষে এলো নীহার লাশ

‘আজ দুপুরে গ্রামের গোরস্তানে বড় মেয়েকে দাফন করলাম। ছোট মেয়েকে দাফন করলাম বিকেলে। এমন দুর্ভাগ্য যেন আর কারও না হয়, এই দোয়া করি।’ শনিবার সন্ধ্যায় কথাগুলো যখন বলছিলেন আবদুর রহমান, তাঁর শরীরে যেন কোনো শক্তিই আর অবশিষ্ট নেই। দুই মেয়ে হারানোর শোকে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছেন, তার চেয়েও বেশি যেন তাঁকে পোড়াচ্ছে অনুশোচনায়। 

শুক্রবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদি ইউনিয়নের দক্ষিণ চরটেকি এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের বেড়িবাঁধে সপরিবারে বেড়াতে গিয়েছিলেন আবদুর রহমান। একটি নৌকায় তারা মাঝনদীতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের টানে উল্টে যায় সেটি। আশপাশের কয়েকটি নৌকা তাঁকে ও তাঁর স্ত্রী নীপা আক্তারকে (৪০) উদ্ধার করে। সাঁতার না জানা দুই মেয়ে কাশ্মীরা রহমান নীলা (১৭) ও ফারিয়া রহমান নীহা (৯) মুহূর্তেই তলিয়ে যায়।

খোঁজাখুঁজির পর বড় মেয়ে নীলার লাশ উদ্ধার করা হয় সেদিন বিকেলেই। গতকাল শনিবার ১২টার দিকে নীহার মরদেহ পাওয়া যায় নদে ভাসমান অবস্থায়। শুক্রবার রাতেই কিশোরগঞ্জ সদরের চৌদ্দশত ইউনিয়নের জালুয়াপাড়া গ্রামের বাড়িতে আনা হয় নীলার লাশ। সে গুরুদয়াল সরকারি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষে পড়ত। শনিবার জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে দাফন হয় নীলার মরদেহ। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়িতে আনা হয় তার ছোট বোন নীহার মরদেহ।

এ সময় দুই সন্তান হারিয়ে রহমান-নীপা দম্পতিকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাননি স্বজন ও প্রতিবেশীরা। বিলাপ করতে করতে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মা নীপা আক্তার। বাবা আবদুর রহমান কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘মেয়ে দুটি সারাক্ষণ আনন্দে সংসার ভরিয়ে রাখত। আশা ছিল, পড়ালেখা করে অনেক বড় হবে। আমরা সমাজে মর্যাদা নিয়ে বাঁচব। তা আর হলো না। আমাদের একেবারে খালি করে চলে গেল। এই শূন্যতা কীভাবে ভুলব?’

চৌদ্দশত ইউপি চেয়ারম্যান মো. আতাহার আলী জানান, আবদুর রহমান পাশের পুলেরঘাট বাজারে ভাঙারির ব্যবসা করেন। তাঁর দুটি মেয়েই ছিল। এখন পুরো পরিবারটি ফাঁকা হয়ে গেল। এ ঘটনায় পুরো এলাকা যেন শোকে স্তব্ধ।

এদিকে গত ১ জুলাই সকালে নৌকায় করে মাদ্রাসা যাওয়ার পথে পাকুন্দিয়ার চরফরাদি ইউনিয়নের চরআলগি গ্রামের জুবায়ের (৭), শাপলা (১৪) ও শাপলার ভাতিজা আবির (৬) ব্রহ্মপুত্রে নৌকা ডুবে মারা যায়। একই নদীতে ১০ দিনের মাথায় আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে। শুক্রবার রাতে ইউএনও মো. বিল্লাল হোসেন এক ভিডিও বার্তায় ব্রহ্মপুত্রের দক্ষিণ চরটেকি বেড়িবাঁধে ভ্রমণ বন্ধ ঘোষণা করেন। নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে ভ্রমণের অনুমতি দেবেন না। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ