সিলিন্ডারে অর্ধেক হাওয়া, অর্ধেক গ্যাস
Published: 13th, July 2025 GMT
সামনে মুরগির খামার, ভেতরে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার প্রক্রিয়াকরণের কারখানা। রয়েছে কম্প্রেসার ও হাওয়া দেওয়ার মেশিন। এই মেশিন দিয়ে বোতল অর্ধেক খালি করে এলপি গ্যাস অন্য বোতলে ভরা হয়। তারপর বাতাস ও পানি দিয়ে বোতলের বাকি অর্ধেক পূর্ণ করে দেওয়া হয়। পরে বিভিন্ন কোম্পানির লোগো লাগিয়ে বাসাবাড়িতে সরবরাহ করা হয় সিলিন্ডারগুলো।
এই অভিনব প্রতারণার ঘটনা ধরা পড়েছে লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজান ইউনিয়নের একটি দোকানে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সম্প্রতি ইউনিয়নের খালদাদ খান পাড়ার তেলি পুকুরপাড় সংলগ্ন ওই মুরগির খামারে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল। এ সময় কম্পেসার মেশিন, পাওয়ার সাপ্লায়ার মেশিন, ওজন মাপার যন্ত্র, ২৭১টি সিলিন্ডার, ৩০ মিটার সংযোগ পাইপ, ১০০ লেবেল জব্দ করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে মো.
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কসহ ইউনিয়নের সড়কের পাশে অর্ধশতাধিক গ্যাস সিলিন্ডারের গোডাউন রয়েছে। এগুলোর নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। নেই অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা। এসব অবৈধ গোডাউনে অভিযান পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল বলেন, ‘মুরগির খামারের ভেতরে কম্প্রেসরের মাধ্যমে পানি ও বাতাস মিশিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডারে গ্যাস ভর্তি করছিল একটি চক্র। তারা এলপি গ্যাস সিলিন্ডারে বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের স্টিকার লাগিয়ে প্রতারণা করে আসছিল।
কলাউজান ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুট্টো বলেন, ‘মুরগির খামারের আড়ালে সিলিন্ডারে পানি ও হাওয়ার সাথে অল্প গ্যাস দিয়ে বাজারজাত করছিল ওই চক্র। অথচ আমরা টেরই পেলাম না। এটি বড় ধরনের প্রতারণা। এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইনামুল হাসান বলেন, ‘রাতের বেলা মানুষ ঘুমিয়ে গেলে ঝুঁকিপূর্ণ, অনৈতিক, অনুমোদনবিহীন কাজটি করছিল চক্রটি। একজন সচেতন মানুষের তথ্যের মাধ্যমে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে সফল অভিযান সম্পন্ন হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইতঃপূর্বে উপজেলায় একই ক্যাটেগরির অনুমোদনবিহীন ট্রাকে করে সিএসজি অটোরিকশায় গ্যাস বিক্রি হতো। এগুলো ছিল একেক বোমা। এসব আমরা বন্ধ করে দিয়েছি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম রগ র খ ম র অর ধ ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি বাড়িতে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইতালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে আতাউর রহমান (৩৫) নামের একজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আতাউর কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।।
গতকালের ওই ঘটনার পরপরই ছোট ইতালি গ্রামের বিস্ফোরণস্থল ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ডিবি সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি তাজা হাতবোমা। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে উদ্ধার হওয়া হাতবোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। পরে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আতাউর রহমানসহ কুমিল্লা থেকে আসা চার ব্যক্তি ছোট ইতালি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ওঠেন। মুক্তারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪৫) মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুক্তারের বাড়ির ভেতরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হন। পরে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর মুক্তার হোসেনের তিন সহযোগী দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত আতাউরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত হাতবোমা ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। বাগবাড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগামী নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।