চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি হত্যা মামলায় আদালতে জামিন নিতে আসা কর্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।

বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে আদালত চত্বরে ঘটনাটি ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ নেতাদের পুলিশ নিরাপত্তায় থানায় নেওয়া হয়। 

যাদের লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করা হয়েছে তারা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন এবং জেলা অওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম রাব্বানী।

আরো পড়ুন:

আনোয়ারুল হত্যা: ২৩ বছর পর আসামির যাবজ্জীবন

মাগুরায় পেট্রলবোমা হামলা: রায় ঘোষণার দিনে আসামিদের জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন

আসামি পক্ষের আইনজীবী মো.

সারওয়ারদী বাদল জানান, ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি ছাত্রশিবির নেতা আসাদুল্লাহ তুহিনকে বাসা থেকে চোখ বেঁধে নিয়ে যান র‌্যাব সদস্যরা। পরে র‌্যাবের গাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনার তার মৃত্যু হয় বলে দাবি করে র‌্যাব। ঘটনার ৯ বছর পর ২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন আসাদুল্লাহ তুহিনের মামা মো. কবিরুল ইসলাম। 

মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র‌্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক, সাবেক সংসদ আব্দুল ওদুদ, র‌্যাব ও পুলিশের কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের নেতাসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলার ২ ও ৩ নম্বর আসামি গোলাম রাব্বানী ও রহুল আমীন।

এই মামলায় আজ জেলা দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করেন তারা। আদালত আগামী ২৮ জুলাই জামিন আবেদন শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

এদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতা আদালতে আসার খবর পেয়ে সেখানে জড়ো হতে থাকেন শিবির নেতাকর্মীরা। তারা আদালতের বারান্দায় উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে তারা আদালত চত্বরে আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমীন ও গোলাম রাব্বানীকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেন। একটি ডিম রুহুল আমীনের শরীরে লাগে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই দুই নেতাকে থানায় নেয় পুলিশ। 

ইসলামী ছাত্রশিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর শাখার সভাপতি আবদুল আজিজ বলেন, “ঘটনাটি শিবিরের সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে সংঘটিত হয়নি। ২০১৫ সালে ছাত্রশিবিরের নেতা তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আবেগ ও ক্ষোভ থেকে কর্মী–সমর্থকেরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মতিউর রহমান বলেন, “হত্যা মামলায় আদালতে আত্মসর্মপণ করতে যান রুহুল আমীন ও গোলাম রাব্বানী। সেখানে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কায় নিরাপত্তার কারণে তাদের থানায় আনা হয়। তাদের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন ঘটনাবলির বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের দুইজনের ব্যাপারে ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ র হ ল আম ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ