একসঙ্গে পাশাপাশি চারজনকে কবর দেওয়ার ঘটনা ধর্মদহ গ্রামে আগে ঘটেনি
Published: 23rd, July 2025 GMT
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের কয়েকটি পরিবার ভোরে মাইক্রোবাসে সিরাজগঞ্জে অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে যাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আইড়মারী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসের আট আরোহীর পাঁচজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। পরে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়।
আজ ধর্মদহ গ্রামের গোরস্তানে পাশাপাশি খোঁড়া হচ্ছে চারটি কবর। কবরগুলো প্রস্তুত করতে তদারকি করছেন স্থানীয় বাসিন্দা মঞ্জুরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছে। চারজনকে পাশাপাশি চারটি কবরে দাফন করা হবে। এ জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে। এভাবে পাশাপাশি চারজনকে কবর দেওয়ার ঘটনা এই গ্রামে আগে কখনো ঘটেনি।’
নিহত ব্যক্তিরা হলেন ধর্মদহ গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (৬৬), জাহিদুলের স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৫৫), শহিদুল ইসলামের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন ওরফে আন্না (৫৫), মিজানুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন (৫৫), স্থানীয় জয়নাল আবেদীনের ছেলে মাইক্রোবাসের চালক সাহাব উদ্দীন (৪২), প্রাগপুর গ্রামের রফেজ চৌধুরীর স্ত্রী ইতি আরা খাতুন (৪৫), মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা (৭০) ও ভোলার দাড় গ্রামের শুকুর আলীর স্ত্রী শিমা খাতুন (৪০)। তাঁদের মধ্যে জাহিদুল, শহিদুল ও মিজানুর একে অপরের চাচাতো ভাই। আঞ্জুমান, শিমা ও ইতি আরা জাহিদুলের নিকটাত্মীয়।
নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাহিদুলের ছেলে সোহানুর রহমান কুয়েতপ্রবাসী। সোহানুরের স্ত্রী সাফিয়া বেগম সিরাজগঞ্জে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতে জাহিদুল ইসলাম স্বজনদের নিয়ে মাইক্রোবাসে সিরাজগঞ্জে যাচ্ছিলেন। পথে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই মিজানুর রহমান তাঁর স্বজনদের নিয়ে নাটোরে যান।
মিজানুরের স্বজন ও ধর্মদহ গ্রামের বাসিন্দা আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহতের মধ্যে আনোয়ারা খাতুন তাঁর বেয়াইন। খবর শোনার পর বেয়াই মিজানুর রহমান নাটোরে চলে গেছেন। বাড়ির লোকজন কান্না করছে। নিহত প্রায় সবার বাড়ি পাশাপাশি।’
স্বজনেরা জানান, একই পরিবারের সাতজন মারা যাওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে প্রতিবেশী ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা ভিড় করতে থাকেন। অনেকের চোখে পানি দেখা যায়। জাহিদুল ইসলাম (৬৬), সেলিনা খাতুন (৫৫), আনোয়ারা খাতুন আন্না (৫৫) ও আনোয়ারা খাতুনকে (৫৫) একই কবরস্থানে পাশাপাশি চারটি কবরে দাফন করা হবে। এ জন্য চারটি কবর প্রস্তুত করা হয়েছে। কোনো লাশই এখনো গ্রামের বাড়িতে আসেনি। নাটোর ও রাজশাহীতে লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। রাতের কোনো একসময় লাশ পৌঁছাতে পারে।
আরও পড়ুননাটোরে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের চালকসহ ৬ জন নিহত৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ দ ল ইসল ম ন র রহম ন পর ব র র ঘটন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদার ছয় সন্তানের পাঁচজনই মারা গেল
একসঙ্গে জন্ম দেওয়া মোকসেদা আক্তারের ছয় সন্তানের মধ্যে পাঁচজনই মারা গেল। গতকাল রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জন্ম নেওয়ার পরপরই একটি শিশু মারা যায়। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় একে একে আরও চার নবজাতকের মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কর্মকর্তা মো. ফারুক প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের মোকসেদা আক্তার রোববার সকালে একসঙ্গে এই ছয় সন্তানের জন্ম দেন। তাঁর স্বামী মো. হানিফ কাতারপ্রবাসী। মোকসেদা আক্তারের ননদ লিপি বেগম আজ প্রথম আলোকে বলেন, বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকের অবস্থাও বেশি ভালো নয়।
ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মোকসেদা তিন ছেলে ও তিন মেয়েসন্তান প্রসব করেন। সন্তানেরা ২৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই জন্ম নেয়। জন্মের সময় প্রত্যেকের ওজন ছিল ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামে মধ্যে। এ কারণে তাদের সবার অবস্থাই ছিল সংকটজনক।
আরও পড়ুনঢাকা মেডিকেলে একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম, নবজাতকদের অবস্থা সংকটাপন্ন২২ ঘণ্টা আগেঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে আইসিইউতে পর্যাপ্ত শয্যা খালি না থাকায় তিনজনকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বেঁচে থাকা একমাত্র নবজাতকটি বেসরকারি হাসপাতালে আছে।