কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের কয়েকটি পরিবার ভোরে মাইক্রোবাসে সিরাজগঞ্জে অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে যাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আইড়মারী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসের আট আরোহীর পাঁচজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। পরে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়।

আজ ধর্মদহ গ্রামের গোরস্তানে পাশাপাশি খোঁড়া হচ্ছে চারটি কবর। কবরগুলো প্রস্তুত করতে তদারকি করছেন স্থানীয় বাসিন্দা মঞ্জুরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছে। চারজনকে পাশাপাশি চারটি কবরে দাফন করা হবে। এ জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে। এভাবে পাশাপাশি চারজনকে কবর দেওয়ার ঘটনা এই গ্রামে আগে কখনো ঘটেনি।’

নিহত ব্যক্তিরা হলেন ধর্মদহ গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (৬৬), জাহিদুলের স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৫৫), শহিদুল ইসলামের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন ওরফে আন্না (৫৫), মিজানুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন (৫৫), স্থানীয় জয়নাল আবেদীনের ছেলে মাইক্রোবাসের চালক সাহাব উদ্দীন (৪২), প্রাগপুর গ্রামের রফেজ চৌধুরীর স্ত্রী ইতি আরা খাতুন (৪৫), মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আঞ্জুমান আরা (৭০) ও ভোলার দাড় গ্রামের শুকুর আলীর স্ত্রী শিমা খাতুন (৪০)। তাঁদের মধ্যে জাহিদুল, শহিদুল ও মিজানুর একে অপরের চাচাতো ভাই। আঞ্জুমান, শিমা ও ইতি আরা জাহিদুলের নিকটাত্মীয়।

নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জাহিদুলের ছেলে সোহানুর রহমান কুয়েতপ্রবাসী। সোহানুরের স্ত্রী সাফিয়া বেগম সিরাজগঞ্জে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতে জাহিদুল ইসলাম স্বজনদের নিয়ে মাইক্রোবাসে সিরাজগঞ্জে যাচ্ছিলেন। পথে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই মিজানুর রহমান তাঁর স্বজনদের নিয়ে নাটোরে যান।

মিজানুরের স্বজন ও ধর্মদহ গ্রামের বাসিন্দা আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহতের মধ্যে আনোয়ারা খাতুন তাঁর বেয়াইন। খবর শোনার পর বেয়াই মিজানুর রহমান নাটোরে চলে গেছেন। বাড়ির লোকজন কান্না করছে। নিহত প্রায় সবার বাড়ি পাশাপাশি।’

স্বজনেরা জানান, একই পরিবারের সাতজন মারা যাওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে প্রতিবেশী ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা ভিড় করতে থাকেন। অনেকের চোখে পানি দেখা যায়। জাহিদুল ইসলাম (৬৬), সেলিনা খাতুন (৫৫), আনোয়ারা খাতুন আন্না (৫৫) ও আনোয়ারা খাতুনকে (৫৫) একই কবরস্থানে পাশাপাশি চারটি কবরে দাফন করা হবে। এ জন্য চারটি কবর প্রস্তুত করা হয়েছে। কোনো লাশই এখনো গ্রামের বাড়িতে আসেনি। নাটোর ও রাজশাহীতে লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। রাতের কোনো একসময় লাশ পৌঁছাতে পারে।

আরও পড়ুননাটোরে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের চালকসহ ৬ জন নিহত৯ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ দ ল ইসল ম ন র রহম ন পর ব র র ঘটন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। অভিনয় গুণে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে দোলা দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে যশ-খ্যাতি যেমন পেয়েছেন, তেমনি আয় করেছেন মোটা অঙ্কের অর্থও। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করে একষট্টিতে পা দেবেন এই তারকা। চলুন, বিশেষ এই দিনে শাহরুখ খানের অজানা সাতটি তথ্য জেনে নিই—

এক. ১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন শাহরুখ খান। রোমান্টিক ঘরানার এ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন তিনি। সিনেমাটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন শাহরুখ। কিন্তু সিনেমাটিতে শাহরুখ খানের চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল তারকা পুত্র আরমান কোহলির। অভিজ্ঞ পরিচালক রাজ কুমার কোহলির রাগী ছেলে আরমান সিনেমাটির একটি শিডিউল শেষ করে পরিচালক রাজ কানওয়ারের সঙ্গে ঝগড়া করে সেট ছেড়ে চলে যান। প্রযোজকরা তখন তড়িঘড়ি করে একটি নতুন মুখ খুঁজতে থাকেন, যে চরিত্রটির সঙ্গে মানানসই। তারপর আরমানের চরিত্রটি রূপায়নের সুযোগ পান নবাগত শাহরুখ খান।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?

নেচে প্রেমের গুঞ্জন উসকে দিলেন শাহরুখকন্যা

দুই. দক্ষিণী সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা কমল হাসানের ‘হে রাম’ সিনেমায় শাহরুখের চরিত্রের নাম ছিল আমজাদ খান। ‘শোলে’ সিনেমায় গব্বর সিংয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন আমজাদ খান। তার নাম অনুসারে ‘হে রাম’ সিনেমার আমজাদ চরিত্রের নামকরণ করা হয়। কারণ কমল হাসান ও আমজাদ খানের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলেন। এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য এক টাকাও পারিশ্রমিক নেননি শাহরুখ। এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ খান বলেছিলেন—“কমল হাসানের মতো অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে কেউ টাকা নেয় না।”

তিন. শাহরুখ ও আমির খান কখনো একসঙ্গে কোনো সিনেমায় কাজ করেননি। তবে আমির খানের কাজিন মনসুর আলীর ‘জোশ’ সিনেমায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল। মনসুর চেয়েছিলেন, সিনেমার গল্পে আমির খান ঐশ্বরিয়ার প্রেমিক চরিত্রে অভিনয় করুক। কিন্তু আমির চেয়েছিলেন, ঐশ্বরিয়ার জমজ ভাইয়ের চরিত্র। কিন্তু তা হয়নি। ফলে কাজটি ছেড়ে দেন আমির খান। সর্বশেষ পরিচালকের নির্ধারিত চরিত্রে (ম্যাক্স ডিয়াস অর্থাৎ ঐশ্বরিয়ার ভাই) অভিনয় করেন শাহরুখ খান।

চার. শাহরুখ খান প্রয়াত বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবীর বিপরীতে অভিনয়ের জন্য মুখিয়ে ছিলেন। সর্বশেষ ‘আর্মি’ সিনেমায় সেই সুযোগ হয়। যদিও সিনেমাটিতে ক্যামিও চরিত্রে (মেজর অর্জুন) অভিনয়ের সুযোগ পান, তারপরও এটি লুফে নেন শাহরুখ খান। 

পাঁচ. ‘কয়লা’ সিনেমায় শঙ্কর চরিত্রে অভিনয় করেন শাহরুখ। চরিত্রটি ছিল বোবার। প্রথমে তার কোনো সংলাপই ছিল না। কিন্তু এ নিয়ে চলচ্চিত্র পরিবেশকরা আপত্তি জানান। তারা প্রশ্ন তুলেন—‘সুপারস্টারের মুখে একটি কথাও থাকবে না?’ তাই পরিচালক-প্রযোজক রাকেশ রোশান বাধ্য হয়ে স্বপ্নদৃশ্যে শাহরুখের কিছু সংলাপ যোগ করে দেন।

ছয়. বলিউড বাদশা শাহরুখ খান তার সব সহ-অভিনয়শিল্পীদেরই ভালোবাসেন। কিন্তু তার প্রিয় হলেন রাখি গুলজার। ‘করন অর্জুন’ সিনেমায় শাহরুখের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। শাহরুখ তাকে নিজের মায়ের মতোই ভালোবাসেন।

সাত. শাহরুখ খান অনেকবার নিজের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ১৯৯৮ সালে ‘আচানাক’ সিনেমায় প্রথমবার শাহরুখ চরিত্রে অভিনয় করেন। যদিও গোবিন্দ অভিনীত সিনেমাটিতে শাহরুখের ক্যামিও চরিত্র ছিল। এর দুই বছর পর এম. এফ. হোসেনের ‘গজ গামিনি’ সিনেমায় নিজের চরিত্রে অভিনয় করেন। এটিও ক্যামিও চরিত্র ছিল। 

১৯৯৫ সালে শাহরুখ খানের সাংবাদিক বন্ধু সমর খান, শাহরুখের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। তাতে শাহরুখ খান নিজের নামে অভিনয় করেন। ২০০৯ সালে জোয়া আখতারের ‘লাক বাই চান্স’, ২০১১ সালে নবাগত পরিচালক সাহিল সাংঘার ‘লাভ ব্রেকআপস জিন্দেগি’, ২০১০ সালে মকরন্দ দেশপান্ডের শাহরুখ বোলা ‘খুবসুরত হ্যায় তু’ সিনেমায় শাহরুখ নিজের নাম নিয়েই পর্দায় হাজির হন।

তথ্যসূত্র: বলিউড হাঙ্গামা

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সব সিম লক রেখে কিস্তিতে স্মার্টফোন বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে অপারেটররা
  • আগামী বছর নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা: ধর্ম উপদেষ্টা
  • শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা
  • শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?