সচিবালয়ে ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, অজ্ঞাতপরিচয় আসামি ১,২০০
Published: 23rd, July 2025 GMT
শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগসহ কয়েকটি দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে করা মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১ হাজার থেকে ১২ শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, মামলার এজাহারে পুলিশের কর্তব্যে বাধা, সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা, সচিবালয়ে ভাঙচুর, সরকারি প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত সোমবার রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থীসহ ২৯ জন নিহত হন, আহত হন দেড় শতাধিক। মর্মান্তিক এ ঘটনার পর মঙ্গলবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয় সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে। তখন শিক্ষার্থীরা ঘুমিয়ে ছিলেন। সকালে এ ঘোষণা নিয়ে সারা দেশের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। এ ঘটনা শিক্ষার্থীদের ক্ষুব্ধ করে তোলে।
এর জেরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা শিক্ষার্থীরা বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষাসচিবের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেওয়ার পর একপর্যায়ে সচিবালয়ের মূল ফটক খুলে ভেতরে ঢুকে পড়েন তাঁরা। সেখানে অন্তত ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তখন পুলিশ ও সেনাসদস্যরা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে বাইরে বের করে দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করা হয়। সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর বেশ কিছুক্ষণ ধরে শিক্ষার্থীরা বাইরে থেকে সচিবালয়ের ভেতরে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন।
পরে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের পাশে জিপিও মোড় ও হাইকোর্ট মোড় এলাকায় অবস্থান নেন। সেসব জায়গা থেকে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া দেয় পুলিশ। পাল্টায় পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন শিক্ষার্থীরা।
বেলা আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের এ ঘটনায় অন্তত ৭৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যও আহত হন।
আরও পড়ুনসচিবালয়ে ঢুকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, পুলিশের লাঠিচার্জ, সংঘর্ষ১৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি বাড়িতে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইতালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে আতাউর রহমান (৩৫) নামের একজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আতাউর কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।।
গতকালের ওই ঘটনার পরপরই ছোট ইতালি গ্রামের বিস্ফোরণস্থল ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ডিবি সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি তাজা হাতবোমা। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে উদ্ধার হওয়া হাতবোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। পরে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আতাউর রহমানসহ কুমিল্লা থেকে আসা চার ব্যক্তি ছোট ইতালি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ওঠেন। মুক্তারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪৫) মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুক্তারের বাড়ির ভেতরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হন। পরে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর মুক্তার হোসেনের তিন সহযোগী দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত আতাউরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত হাতবোমা ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। বাগবাড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগামী নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।