জাবিতে অনুষ্ঠিত হবে ৬ দিনব্যাপী ‘জুলাই গাঁথা’
Published: 23rd, July 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্র করে স্বৈরাচার হাসিনার পতনের স্মৃতি ধারণ ও লালন করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছয় দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানসূচী তুলে ধরেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি ধারণ সাংস্কৃতিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন।
ছয় দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান আগামী ২৮ জুলাই থেকে শুরু হয়ে চলবে ২ আগস্ট পর্যন্ত। ‘জুলাই গাথা’ শিরোনামে উদযাপিত প্রতিদিন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিতব্য এ আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীত, আবৃত্তি, নাটক ও নৃত্য পরিবেশন করবেন।
আগামী ২৮ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ‘বটতলা বিতর্ক’ দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করবে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটির ডিবেটিং অরগানাইজেশন (জেইউডিও)। পরদিন ২৯ জুলাই সন্ধ্যায় শুরু হবে প্রীতি বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে অংশ নেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম অ্যাকশন, জাবি সিনে সোসাইটি ও জাবি ইউনিভার্সিটি ড্যান্স ক্লাব। পরিবেশিত হবে মূকাভিনয়, ডকুমেন্টারি ও নৃত্য।
৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে প্যানেল আলোচনা, ডকুমেন্টারি, কবিতা এবং আদিবাসী গানের পরিবেশনা। একইদিন প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করবে রেড জুলাই। ৩১ জুলাই নাট্যচর্চা ও সংগীতনির্ভর দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদিন শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘নারকীয় পুনর্জীবন’, নৃত্যনাট্য ‘চেকমেট’, কবিতা ও গান।
১ আগস্ট নাটক, গান, কবিতা, কাওয়ালি, র্যাপসহ থাকবে দিনব্যাপী পরিবেশনা। ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার’ মঞ্চস্থ করবে নাটক , ‘জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ’ উপস্থাপন করবে প্রামাণ্যচিত্র। এছাড়াও অংশ নেবে অন্তর্যাত্রা, থার্মোকলসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আগ্রহী নাগরিকদের জন্য অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত থাকবে।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন দ নব য প পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবিতে গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২৭ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে দিনব্যাপী এ সম্মেলনে দেশ-বিদেশের ১৩টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সিভিল সোসাইটি সংগঠন অংশগ্রহণ করে।
ঢাকাভিত্তিক গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড থট (আরআইটি) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ যৌথভাবে সম্মেলনটির আয়োজন করে। এতে সহ-আয়োজক হিসেবে অংশ নেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব রেজিনা (কানাডা), নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি (সিঙ্গাপুর), কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি (যুক্তরাষ্ট্র), দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি, বাংলাদেশ ২.০ ইনিশিয়েটিভ (যুক্তরাজ্য), সোচ্চার (যুক্তরাষ্ট্র), ইনসাফ (বাংলাদেশ), সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ (তুরস্ক), সেন্টার ফর পলিসি অ্যানালিসিস অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি (বাংলাদেশ) এবং জাগরণ ফাউন্ডেশন (যুক্তরাজ্য)।
আরো পড়ুন:
যোগ্য হয়েও রাবির শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় ডাক না পাওয়ার অভিযোগ
যবিপ্রবিতে জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
সম্মেলনের শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠ করা হয়। এরপর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ জাহিদুজ্জামান তানভীনের মা বিলকিস জামান ও বাবা শামসুজ্জামান বক্তব্য প্রদান করেন। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সম্মেলনটির আহ্বায়ক ড. মো. শরীফুল ইসলাম।
দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান, আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিবিদ জন এফ. ডেনিলোইজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “আমরা আজ যে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনের পতন দেখেছি, সেটার নিষ্ঠুরতা আমাদের বিবেককে সামগ্রিকভাবে ক্ষতবিক্ষত করেছে। এই শাসনব্যবস্থা রাষ্ট্রকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্রে পরিণত করেছিল। শুধু তাই নয় র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সন্ত্রাসের হাতিয়ার বানানো হয়েছিল। গুম-খুন হয়ে উঠেছিল নিত্যদিনের ঘটনা। কবি, শিক্ষক, সাংবাদিক ও ছাত্রনেতাদের অপরাধী বানিয়ে জেলে ভরা হয়েছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মুক্ত চিন্তায় বাধা দেওয়া হত।”
তিনি বলেন, “আমরা বিকৃত ইতিহাস থেকে সত্যকে উদ্ধার করতে চাই। যারা নিখোঁজ হয়েছেন, তাদের পরিবারের কান্না ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে গেঁথে থাকা গুলির চিহ্ন এসবই একদিন ন্যায়বিচারের নির্মাণ কাজে প্রমাণ হয়ে উঠবে “
জুলাই বিপ্লবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান স্মরণ করে তিনি আরো বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবারো সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছে। এর শ্রেণিকক্ষগুলো হয়ে উঠেছিল রণকৌশলের কেন্দ্র, ছাত্ররা হয়ে উঠেছিল বিবেকের যোদ্ধা। আমরা বিদেশি গবেষক, অধ্যাপক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে কৃতজ্ঞ। যারা বিপজ্জনক সময়েও বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন।”
তিনি এই সম্মেলনকে একটি জাতীয় অঙ্গীকারে পরিণত করতে জুলাই বিপ্লবের দলিলপত্র, ভিডিও, ফটো নিয়ে একটি আর্কাইভ গড়ে তোলা, স্কুল-কলেজের পাঠ্যক্রমে জুলাই ইতিহাস সত্যনিষ্ঠভাবে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।
সমাপনী পর্বে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, মালয়েশিয়ার পার্টি কেডিলান রকইয়াট (পিকেআর) এর ডেপুটি প্রেসিডেন্ট নুরুল ইজজাহ আনোয়ার, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকস্ চৌধুরী।
সম্মেলন শেষে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে ‘লাল জুলাই’ নামক একটি মঞ্চ নাটক পরিবেশন করা হয়।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী