ভাবিকে গলা কেটে হত্যার দায়ে দেবরের মৃত্যুদণ্ড
Published: 24th, July 2025 GMT
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় লিপি আক্তার (৩২) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার দায়ে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবুল হাসেম।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম রাসেল মিয়া (৩০)। তিনি পূর্বধলা উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে। অন্যদিকে লিপি আক্তার একই গ্রামের বিজিবি সদস্য আজিজুল ইসলামের স্ত্রী। রাসেল সম্পর্কে লিপির চাচাতো দেবর।
মামলার এজাহার, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, লিপি ও রাসেল একই বাড়িতে বসবাস করতেন। লিপির স্বামী বাড়িতে না থাকায় রাসেল প্রায়ই তাঁকে উত্ত্যক্ত করতেন। এমনকি তাঁকে প্রেমের প্রস্তাবও দেন রাসেল। কিন্তু লিপি এসবে রাজি ছিলেন না। এতে রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর গভীর রাতে লিপিকে গলা কেটে হত্যা করেন। ওই দিন রাসেলের পাশের কক্ষে ১২ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন লিপি। হত্যার পর রাসেল নিজেও তাঁর গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে বাড়ির লোকজন রাসেলকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় গত ৫ অক্টোবর লিপির বড় বোন ফেরদৌসী বেগম বাদী হয়ে রাসেলকে আসামি করে পূর্বধলা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তারের পর রাসেল ওই বছরের ১১ অক্টোবর নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০২১ সালের মার্চ মাসে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়। মামলা পরিচালনায় আসামির পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আনিসুর রহমান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হত য র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর
চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।