থাই-কম্বোডিয়ার সামরিক শক্তি পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র-চীন যেভাবে যুক্ত
Published: 26th, July 2025 GMT
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে যে প্রাণঘাতী সংঘাত চলছে, তাতে একপাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র ও কয়েক দশকের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী। আর অপরপাশে রয়েছে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা কম্বোডিয়ার তুলনামূলকভাবে কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সামরিক শক্তি।
ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্স এক শতাব্দীরও আগে যখন তাদের সীমান্ত ভাগ করে দিয়েছিল, তখন থেকেই ব্যাংকক ও নমপেন নিজেদের সীমান্তে একটি বিতর্কিত ভূখণ্ড নিয়ে লড়াই করে আসছে।
গত বৃহস্পতিবার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এক ডজনের বেশি মানুষ নিহত, কয়েক ডজন আহত এবং দেড় লাখেরও বেশি বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই সংঘাতের পেছনে দুই পক্ষের সামরিক ইতিহাস ও সক্ষমতার দিকে নজর দেওয়া যাক।
সামরিক শক্তিতে থাইল্যান্ডথাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী প্রতিবেশী কম্বোডিয়ার চেয়ে জনবল ও অস্ত্রশস্ত্রে অনেক বড়। থাইল্যান্ডের মোট ৩ লাখ ৬১ হাজার সক্রিয় সামরিক সদস্য রয়েছে, যা কম্বোডিয়ার তিন গুণ। আর এই সেনাদের হাতে এমন সব অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে যা কম্বোডিয়ার সেনারা কেবল স্বপ্নই দেখতে পারে।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (আইআইএসএস) ২০২৫ সালে তাদের এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘থাইল্যান্ডের বিপুল অর্থ বরাদ্দপ্রাপ্ত একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী রয়েছে এবং এর বিমানবাহিনী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে সজ্জিত ও প্রশিক্ষিত বিমানবাহিনীগুলোর মধ্যে অন্যতম।’
অন্যদিকে, লোয়ি ইনস্টিটিউটের ২০২৪ সালের ২৭টি আঞ্চলিক দেশের সামরিক সক্ষমতার র্যাঙ্কিংয়ে থাইল্যান্ড ১৪তম স্থানে রয়েছে, যেখানে কম্বোডিয়া ২৩তম স্থানে। এই বৈষম্য হয়তো স্বাভাবিক, কারণ থাইল্যান্ডের জনসংখ্যা কম্বোডিয়ার চার গুণ এবং জিডিপি ১০ গুণেরও বেশি বড়। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে আঞ্চলিক যুদ্ধ যেভাবে কম্বোডিয়া, লাওস এবং ভিয়েতনামকে গ্রাস করেছিল, থাইল্যান্ড সেখান থেকে মুক্ত ছিল। এমনকি পূর্বের ইউরোপীয় উপনিবেশবাদের ধ্বংসযজ্ঞ থেকেও রেহাই পেয়েছিল দেশটি।
সামগ্রিকভাবে সামরিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষমতাসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে লোয়ি এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্সে থাইল্যান্ড ১০ম স্থানে রয়েছে, যেটি মধ্যম মানের শক্তি হিসেবে বিবেচিত, ইন্দোনেশিয়ার ঠিক পেছনে কিন্তু মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে। লোয়ির র্যাঙ্কিংয়ে কম্বোডিয়াকে বিবেচনা করা হয়েছে এশিয়ায় একটি ক্ষুদ্র শক্তি হিসেবে। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং লাওসের মতো দেশগুলোর সঙ্গে একই গ্রুপে অবস্থান কম্বোডিয়ার।
ইউএস–থাই কোবরা গোল্ড মহড়ার একটি দৃশ্য.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কম ব ড য
এছাড়াও পড়ুন:
স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর
চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।