মব সৃষ্টির ব্যাপারটাকে সামাজিকভাবেই সমাধান করতে হবে: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
Published: 27th, July 2025 GMT
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘মব সৃষ্টি যেসব কারণে হয়, সেই কারণগুলোকে আমাদের অ্যাড্রেস (বিবেচনা) করতে হবে এবং সেটিই করা ভালো বলে আমি মনে করি। সরকার এখানে কোনো ধরনের বাড়তি দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষপাতী নয়।’
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবন মিলনায়তনে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান পুনর্জাগরণ উপলক্ষে গণ বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগদানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় ফরিদা আখতার এ কথাগুলো বলেন।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘আমরা সব সময় চাই, শান্তিপূর্ণভাবে সবকিছু হ্যান্ডল করতে (সামলাতে) এবং আমাদের এই সরকারের একটা আচরণ, সেটি হলো যে আমরা অহেতুক কাউকে লেথাল উইপন ইউজ (প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার) করা বা কঠিনভাবে দমন করতে চাই না। আমরা অনেক সহ্য করি। আমরা মনে করি যে এটা সামাজিক ব্যাপার। মব সৃষ্টির ব্যাপারটাকে সামাজিকভাবেই সমাধান করতে হবে।’
এ সময় ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের গুরুত্বের বিষয়টি তুলে ধরেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্ষেত্রে বিগত সময়গুলোয় দেখেছি, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এবং যারা ক্ষমতাসীন, তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় এবং এমনও আছে মানবাধিকারের বিষয়ে যেগুলো একেবারে কাঠামোগত। এই যে মানবাধিকার কমিশন, আমাদের পক্ষে তখন কাজ করেছে আন্তর্জাতিকভাবে এবং অনেকগুলো প্রতিবেদন তারা করেছে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা যখন অফিস করতে চাচ্ছে। এর মানে এই নয় যে এখন আমাদের মানবাধিকারের অবস্থা খারাপ বলে তারা আসতে চাচ্ছে। এ রকম একটা অফিস থাকলে যারাই ক্ষমতায় আসুক, প্রত্যেকের মধ্যে একটা ব্যাপার থাকবে যে আমরা মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে খুবই সচেতন এবং আমরা সেটি রক্ষা করতে চাই। যেহেতু জাতিসংঘ এ ব্যাপারে সক্রিয়, তারা তাদের অফিস রেখে এটা করতে চাচ্ছে, আমরা তাতে সম্মতি জানিয়েছি।’
ভারতে ইলিশ রপ্তানির কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘ভারতের পত্রিকার তথ্য হলো গঙ্গায় ইলিশ অনেক বেড়ে গেছে। যেকোনো কারণেই হোক সাগরের ইলিশ ওদিকে গেছে। কাজেই তাদের আর আমাদের ইলিশের অপেক্ষা করা ঠিক হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে যদি ইলিশের সংকট থাকে, তাদের ওখানে আমাদের পাঠানোর কোনো কারণ নেই। হ্যাঁ, এই সৌজন্যতা গতবার রাজনৈতিক কারণে দেখানো হয়েছে। আমরা আসলে জনগণের প্রতি আমাদের কমিটমেন্ট রাখতে গিয়ে যদি সরবরাহ বেশি থাকে বা সেই রকম পরিস্থিতি হয়, সেটি তখন দেখা যাবে। এখন পর্যন্ত আমাদের সে রকম কোনো পরিকল্পনা নেই।’
প্রবাসীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শুধু সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘তাঁরা (প্রবাসীরা) আমাদের রেমিট্যান্স দিচ্ছেন। তাঁরা ইলিশ খেতে পারছেন না, এ জন্য আমরা ১১ হাজার মেট্রিক টন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুমতি দিয়েছি। যদি কেউ রপ্তানি করতে চান, সেটি দিতে পারেন। কিন্তু এর বেশি নয়।’
স্মৃতিচারণা ও আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম নব ধ ক র উপদ ষ ট আম দ র আখত র
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক