আসন্ন শিক্ষাবর্ষে (২০২৫-২৬) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে আজ বুধবার। চট্টগ্রামের শিক্ষা বোর্ডের অধীন থাকা পাঁচটি জেলার ২৯০টি কলেজে এবার ১ লাখ ৬৭ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি রয়েছে। এসব জেলায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির মোট আসনের মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজারই চট্টগ্রাম জেলায়। এর মধ্যে আবার চট্টগ্রাম নগরের কলেজগুলোতেই আসনসংখ্যা সাড়ে ৫১ হাজারের মতো।

শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের কিছু কলেজের পক্ষ থেকে আসন বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু কলেজে আসন বাড়ানো হতে পারে। এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ড আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবে। চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মোহাম্মদ ছরওয়ার আলম বলেন, ‘এখনো আসন বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমরা কাজ করছি। এটির জন্য আবেদনে কোনো সমস্যা হবে না।’

চট্টগ্রামে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের অধিকাংশেরই নজর থাকে নগরের সরকারি কলেজগুলোতে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের পছন্দের ১০টি কলেজের তালিকায় অন্তত ৬টি সরকারি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম কলেজ, সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ও সরকারি কমার্স কলেজে আগ্রহ তুলনামূলক বেশি।

নগরের চকবাজার এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম কলেজে গতবারের হিসাবে আসনসংখ্যা ১ হাজার ৪০। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৬৬০টি ও মানবিকে ৩৮০টি আসন। বিজ্ঞান বিভাগে আবেদনের যোগ্যতা জিপিএ-৫ ও মানবিক বিভাগে সর্বনিম্ন জিপিএ-৪।

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ নগরের আগ্রাবাদ এলাকার সরকারি কমার্স কলেজ। যেখানে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের আসনসংখ্যা এক হাজার। আবেদনের যোগ্যতা জিপিএ-৪.

৫৬।

নগরের চকবাজার এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম কলেজে গতবারের হিসাবে আসনসংখ্যা ১ হাজার ৪০। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৬৬০টি ও মানবিকে ৩৮০টি আসন। বিজ্ঞান বিভাগে আবেদনের যোগ্যতা জিপিএ-৫ ও মানবিক বিভাগে সর্বনিম্ন জিপিএ-৪।

সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ৬৬০, ব্যবসায় শিক্ষায় ৬১৫ ও মানবিকে ৪৫০টি আসন রয়েছে। সরকারি সিটি কলেজে মোট আসনসংখ্যা ২ হাজার ৪০০। এর মধ্যে দিবা শাখায় বিজ্ঞান বিভাগের আসন ৭০০, ব্যবসায় শিক্ষায় ৪০০ ও মানবিকে আসন ৫০০টি। নৈশ শাখায় ব্যবসায় শিক্ষায় ও মানবিকে আসন ৪০০টি করে। দুই কলেজেই আবেদনের যোগ্যতা বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫, ব্যবসায় শিক্ষায় জিপিএ-৪.৫ ও মানবিকে সর্বনিম্ন জিপিএ-৪।

ছাত্রীদের পছন্দের তালিকায় অন্যান্য সরকারি কলেজের পাশাপাশি রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ। যেখানে মোট আসন ১ হাজার ৪০০। এখানে বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আসন রয়েছে ৫০০টি করে। আর মানবিকে আসন ৪০০টি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে মোট আসন ৯০০টি এবং আগ্রাবাদ মহিলা কলেজে আসন ১ হাজার ৩২৫টি।

এখনো আসন বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমরা কাজ করছি। এটির জন্য আবেদনে কোনো সমস্যা হবে না।মোহাম্মদ ছরওয়ার আলম, কলেজ পরিদর্শক, চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড

নগরের বাইরে উপজেলাগুলোতেও সরকারি কলেজে আগ্রহ বেশি শিক্ষার্থীদের। এর মধ্যে বোয়ালখালীর স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজে মোট আসন ১ হাজার ৫০০। একই সংখ্যক আসন রয়েছে সাতকানিয়া সরকারি কলেজেও। তিন বিভাগ মিলিয়ে ১ হাজার ৫৬০টি আসন রয়েছে হাটহাজারী সরকারি কলেজে। বাঁশখালীর সরকারি আলাওল কলেজ ও রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজে মোট আসনসংখ্যা ৯৫০।

জেলার অন্যান্য সরকারি কলেজের মধ্যে পটিয়া সরকারি কলেজে ১ হাজার ২৫০, রাউজান সরকারি কলেজে ১ হাজার ৫০, নিজামপুর সরকারি কলেজে ১ হাজার ২২৫, গাছবাড়ীয়া সরকারি কলেজে ১ হাজার ৩৫০, ফটিকছড়ি সরকারি কলেজে ১ হাজার, চুনতি সরকারি মহিলা কলেজে ৭০০ ও সীতাকুণ্ড সরকারি মহিলা কলেজে আসনসংখ্যা ৬৫০।

আজ শুরু হওয়া ভর্তির আবেদন চলবে আগামী ১১ আগস্ট পর্যন্ত। প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে ২০ আগস্ট। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে আবেদন করা যাবে। যাচাই-বাছাই শেষে ভর্তির কাজ হবে ৭ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। আবেদনের বিস্তারিত তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় শ ক ষ য় ৫ ও ম নব ক আসনস খ য ম হ ম মদ ম ট আসন র সরক র কল জ র ভর ত র নগর র আসন ব আসন র

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা কমানো ও নতুন ১৮ বিভাগ চালুর সুপারিশ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সার্বিকভাবে আসনসংখ্যা কমানো, আরও ১৮টি বিভাগের অন্তর্ভুক্তি, ৪টি ইনস্টিটিউট চালু এবং ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে আসনসংখ্যা কমানো হচ্ছে বলে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে।

গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৯তম একাডেমিক কাউন্সিল সভায় এসব বিষয়ে সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রামে আরও ১৮টি বিভাগের অন্তর্ভুক্তি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী, কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে ল্যাব বেজড বিভাগগুলোতে আসনসংখ্যা ৪০টি এবং ল্যাববিহীন বিভাগগুলোতে ৫০টি আসন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। যার কারণে সার্বিকভাবে কিছু আসন কমে আসবে। এ ছাড়া নতুন আরও ১৮টি বিভাগের অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ, জৈব রসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগ এবং জৈবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জনসংখ্যাবিজ্ঞান বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। কলা ও মানবিক অনুষদভুক্ত গুলো হলো- ইসলামিক স্টাডিজ ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ এবং দর্শন বিভাগ।

আরও পড়ুনদুই দশকে ‘লালমাটির সবুজ ক্যাম্পাস’, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য আয়োজন ২৮ মে ২০২৫

ব্যবসায় অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ব্যবসায়িক তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগ এবং লজিস্টিক ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ।

প্রকৌশল অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ, রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগ, পুরকৌশল বিভাগ এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগ। আইন অনুষদভুক্ত বিভাগটি হলো অপরাধবিদ্যা বিভাগ।

এদিকে সভায় চারটি ইনস্টিটিউট গঠনের সুপারিশ করা হয়। এগুলো হলো আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্র। এগুলোর গঠনকাঠামোও সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, নিয়মিত অধ্যাপক দুজন, তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার বা ব্যবস্থাপক একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুজন এবং একজন ক্লিনার।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং অ্যাকাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্র- এদুটোর জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, অতিথি অধ্যাপক থাকবেন একজন, অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার অথবা ব্যবস্থাপক হিসেবে একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং ক্লিনার-১ জন।

এ ছাড়া ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে ন্যূনতম ২৬ জন করে শিক্ষক রাখার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হায়দার আলী বলেন, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এখনই এগুলো না দেখে বলা যাচ্ছে না। রেজ্যুলেশন পাশ হলে বিস্তারিত বলতে পারব। এ জন্য কিছুটা সময় লাগবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আলোচনায় এগুলোর সুপারিশ করেছি; কোনোটিই এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। আর অর্গানোগ্রাম অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় ডিপার্টমেন্টের জন্য ছাড়পত্র চায়, তারপর কমিশন (ইউজিসি) যদি অনুমোদন দেয়, তখন সেটা অর্গানাগ্রামে যুক্ত হয়। অর্গানোগ্রামে থাকলেই যে বিভাগ হয়ে যাবে, বিষয়টি এমনও না। ইউজিসি একটা অনুমোদন দিয়ে রাখে। এই অনুমোদনের আলোকে আবার যখন আবেদন দেওয়া হবে, তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে। মূল কথা হলো এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েল এমন পরিকল্পনা থাকে। আমাদের এসব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে অন্তত ২০৩২ সাল পর্যন্ত।’  

অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ইউজিসি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে আসন সংখ্যা কমাতে, যাতে কোয়ালিটি এডুকেশনের নিশ্চিত হয়। এ জন্য তাঁরা ল্যাব বেজড বিভাগের জন্য ৪০টি আসন এবং ল্যাববিহীন বিভাগের জন্য ৫০ টি আসন বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। আর ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা কমানো ও নতুন ১৮ বিভাগ চালুর সুপারিশ