মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
Published: 30th, July 2025 GMT
দুই মহাদেশের দুই চ্যাম্পিয়নের লড়াই ফের জমে উঠতে চলেছে। ২০২২ সালের ঐতিহাসিক ‘ফিনালিসিমা’ জয়ের পর আবারও একই মঞ্চে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার সেরা দুই দল আর্জেন্টিনা ও স্পেন। দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে এই বহুল আলোচিত দ্বৈরথ।
শুরুর দিকে টুর্নামেন্টটি নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তা থাকলেও অবশেষে সব সংশয় কাটিয়ে সময়সূচি প্রকাশ করেছে কনমেবল। যদিও ম্যাচের চূড়ান্ত ভেন্যু এখনও নির্ধারিত হয়নি। সম্ভাব্য আয়োজক দেশ হিসেবে আলোচনায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও কাতার। অর্থাৎ, আয়োজক হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকার দৌড় এখনও চলছে।
২০২৪ কোপা আমেরিকার ফাইনালে কলম্বিয়াকে হারিয়ে শিরোপা ধরে রেখেছে আর্জেন্টিনা, যার নেতৃত্বে ছিলেন লিওনেল মেসি ও গোলরক্ষক মার্টিনেজ। অন্যদিকে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে স্পেন। যেখানে ঝলক দেখিয়েছেন তরুণ তারকা লামিনে ইয়ামাল ও পেদ্রি।
আরো পড়ুন:
যেন সোনার তৈরি পনির, প্রতি টুকরার দাম জানলে চমকে যাবেন
স্পেন দলে চমক, নেশন্স লিগ ঘিরে নতুন প্রত্যাবর্তনের গল্প
এই ম্যাচ ঘিরে বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহ তুঙ্গে। একদিকে অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বের প্রতীক মেসি, অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনা ইয়ামাল; দুজনের মুখোমুখি লড়াই ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
আর্জেন্টিনা যদি ফিনালিসিমায় আবারও জয় পায়, তবে তারা এই প্রতিযোগিতায় টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনন্য রেকর্ড গড়বে। আর স্পেন চাইবে তাদের তরুণ শক্তির ঝলকে এই প্রতিযোগিতার নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেদের মঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করতে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল আর জ ন ট ন আম র ক র
এছাড়াও পড়ুন:
গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও
রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।
গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।
পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।”
আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”
রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”
গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।”
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।
ঢাকা/আমিরুল/ইভা