জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সব পদক্ষেপ নেবে নয়াদিল্লি
Published: 30th, July 2025 GMT
ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় নয়াদিল্লি বলেছে, তারা ট্রাম্পের পদক্ষেপের প্রভাব খতিয়ে দেখছে এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।
স্থানীয় সময় বুধবার সকালে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ভারতের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। আগামী ১ আগস্ট (শুক্রবার) থেকে এটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। পাশাপাশি রাশিয়ার কাছ থেকে সামরিক সরঞ্জাম ও জ্বালানি কেনায় দেশটির বিরুদ্ধে ‘শাস্তিমূলক’ পদক্ষেপ নেওয়ারও ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
পরে স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যে মন্তব্য করেছেন, তা সরকারের নজরে এসেছে। সরকার এই পদক্ষেপের প্রভাব খতিয়ে দেখছে। কয়েক মাস ধরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ এবং পরস্পর উপকৃত হয়, এমন একটি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে আসছে। আমরা সেই লক্ষ্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।’
বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের ‘কৃষক, উদ্যোক্তা এবং ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই) খাতের কল্যাণ ও উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।’ পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সম্প্রতি করা মুক্তবাণিজ্য চুক্তির কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় বলেছে, জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সম্প্রতি করা পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য চুক্তিসহ অন্যান্য বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে যেমনটি নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘ভারত যদিও আমাদের বন্ধু, তবে বিগত বছরগুলোতে তাদের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে আমরা কম ব্যবসা করেছি। কারণ, তাদের শুল্ক অনেক বেশি, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। তারা বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় সবচেয়ে কঠোর ও জঘন্য অশুল্ক বাধা ব্যবহার করে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তারা (ভারত) সব সময় সামরিক সরঞ্জামের বড় একটি অংশ রাশিয়ার কাছ থেকে কিনে থাকে। সবাই যখন চায় রাশিয়া যেন ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ করে, ঠিক সে সময়ে চীনের মতো তারাও রাশিয়ার জ্বালানির সবচেয়ে বড় ক্রেতা—এসব মোটেও ভালো কিছু নয়!’
গত এপ্রিলে নতুন শুল্কনীতি ঘোষণা করার সময় ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন। অবশ্য চীনের ওপর আরোপিত মোট ১০৪ শতাংশ, কম্বোডিয়ার ওপর ৪৯ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ শুল্কের তুলনায় এটি কমই ছিল।
আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদক ষ প ন য ক তর র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক