ভারতের শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির ছোট ভাই অনিল আম্বানি যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সে জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ‘লুক আউট’ নোটিশ জারি করা হয়েছে। দেশের সব বিমানবন্দর ও জাহাজঘাটায় ওই নোটিশ পাঠানো হয়, যাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দেশ ছেড়ে চলে যেতে না পারেন।

রিলায়েন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল আম্বানির সংস্থার বিরুদ্ধে তিন হাজার কোটি রুপি দেনার অভিযোগের তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তারা অনিলকে জেরা করতে চায়। গত মঙ্গলবার ইডি দপ্তরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল তাঁকে। না যাওয়ায় লুক আউট নোটিশ জারি করা হয়েছে। ৫ আগস্ট জেরার জন্য তাঁকে ফের ইডি অফিসে হাজির হতে বলা হয়েছে।

স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) বক্তব্য অনুযায়ী, অনিলের বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি ব্যাংক থেকে ৩১ হাজার ৫৮০ কোটি রুপি ঋণ নিয়েছে। ঋণের শর্ত ভেঙে ওই অর্থের এক বিরাট অংশ বিভিন্ন সংস্থায় পাঠানো হয়েছে। তাঁর বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে ১৭ হাজার কোটি রুপি প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। তার মধ্যে বেসরকারি ইয়েস ব্যাংকের কাছে ঋণ বাবদ তাঁর দেনা তিন হাজার কোটি রুপি।

ইডির অভিযোগ, ঋণের অর্থের বিরাট এক অংশ ইয়েস ব্যাংকের প্রমোটারদের নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন সংস্থায় চলে যায়। ২০০৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইয়েস ব্যাংকের ওই ঋণ মঞ্জুর হয়েছিল। ঋণ মঞ্জুরের ক্ষেত্রে সেই ব্যাংক বহু নিয়মও লঙ্ঘন করেছিল বলে অভিযোগ। ইডির মতে, সেই টাকা ছিল ঘুষেরই নামান্তর। অনিলের বিরুদ্ধে ইডির তদন্তের আওতায় রয়েছে বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের নানা অ্যাকাউন্ট ও অঢেল সম্পত্তি।

আরও পড়ুনভারতের শিল্পপতি অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ, বাড়ি-অফিসে তল্লাশি২৪ জুলাই ২০২৫

দেনাগ্রস্ত রিলায়েন্স কমিউনিকেশন্সের (আরকম) ঋণ অ্যাকাউন্টকে স্টেট ব্যাংক ‘প্রতারক’ হিসেবে চিহ্নিত করতে চায়। স্টেট ব্যাংক এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই আরকমকে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠি পাঠানোর কথা তারা শেয়ারবাজারকেও জানিয়ে দিয়েছে।

ব্যবসাসংক্রান্ত বিষয়ে অনিল আম্বানির দুর্দশা চলছে বেশ কিছু বছর ধরেই। ২০১৯ সালে এরিকসন মামলায় ৪৫৮ কোটি রুপি জরিমানা দিতে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। সে সময় গ্রেপ্তার এড়িয়ে কারাগারে যাওয়া থেকে তাঁকে বাঁচিয়ে ছিলেন তাঁর বড় ভাই মুকেশ আম্বানি।

আরও পড়ুনভারতের শেয়ারবাজারে নিষিদ্ধ অনিল আম্বানিসহ ২৫ ব্যবসায়ী২৪ আগস্ট ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • গোলাম রাব্বানীর ডাকসুর জিএস নির্বাচিত হওয়া অবৈধ ঘোষণার সুপারিশ