পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে জাপার বিক্ষোভ সমাবেশ
Published: 2nd, August 2025 GMT
পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয় পার্টি।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে কাকরাইলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করে দলটির নেতাকর্মীরা।এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলের নতুন মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর নেতৃত্বে রাজপথে শোডাউন করে দলটি।
দুদিন আগে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা আদেশ দেন আদালত।
আরো পড়ুন:
কর্মীদের মতের মূল্য নাই, জিএম কাদের দল চালান স্ত্রীর কথায়
জিএম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা
জাপার পূর্বনির্ধারিত সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের দুপুর থেকে পুলিশ বাধা দেয়। বিকেলের মধ্যে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে যোগ দেয় কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগীরর বিশাল মিছিল সমাবেশে যোগ দিলে সমাবেশে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখে পুলিশ পিছু হটে। একপর্যায়ে নেতাকর্মীরা পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করে।
জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, শেরীফা কাদের, মহসিন ইসলাম হাবুল, যুগ্ম মহাসচিব সামছুল হক।
দলের মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, “আমাদের অধিকার এবং মানবাধিকার আদায় করতে আইন অমান্য করতে হলেও আমরা পিছপা হবো না। আমাদের এই সমাবেশটি আরো সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারতো কিন্তু বিভিন্ন বিভাগের অসহযোগিতার জন্য একটু এলোমেলো হয়েছে। তারপরও বলবে, আজকের কর্মসূচি সফল হয়েছে।”
হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে জিএম কাদেরের কণ্ঠরোধ এবং জাতীয় পার্টির অগ্রযাত্রা রোধ করার চেষ্টা চলছে জানিয়ে শামীম পাটোয়ারী বলেন, “দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমাদের চেয়ারম্যান জিএম কাদের বিগত সরকারের আমলেও যখন গণমানুষের পক্ষে কথা বলেছেন, তখন মামলা দিয়ে তার কণ্ঠরোধের অপচেষ্টা চলেছে। এখনো মামলা দিয়ে তার কণ্ঠরোধের অপচেষ্টা চলছে, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
তিনি বলেন, “দেশ ডুবে যাচ্ছে, সরকার চেয়ে চেয়ে দেখছে। ভেবেছিলাম দেশে শান্তি আসবে, এখন দেখছি দেশজুড়ে অশান্তি। এই সরকার আইনের শাসনের পরিবর্তে মব এর শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে।”
“ভেবেছিলাম মানুষ চাকরি পাবে, দেখছি বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। আমরা চেয়েছিলাম এই সরকার জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করবে কিন্তু, আমরা দেখছি এই সরকার জাতিকে বিভক্ত করেছে। সরকার দেশে একটি গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে,” বলেও সমালোচনা করেন পাটোয়ারী।
গতকাল বগুড়ায় জাপা অফিসে হামলা হয়েছে অফিস করে দলটির মহাসচিব বলেন, “আগেও যেসব স্থানে আমাদের অফিসে হামলা এবং নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হয়েছে আমরা এর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। আমাদের দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হচ্ছে, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের অফিসগুলোতে যেভাবে আগুন দেওয়া হয়েছে তাতে প্রমাণ হয়, দেশে কোনো সরকার নেই। রাষ্ট্রে চিড় ধরেছে আমরা এই রাষ্ট্র মেরামত করতে চাই।”
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের নেতৃত্বে আমরা নতুন উদ্যমে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব। সব বাধা অতিক্রম করে জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাবে, প্রত্যাশা করেন তিনি।
শামীম পাটোয়ারী বলেন, “২০১৪ সালে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের দাবিতে আমরা নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। আমাদের পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের নেতৃত্বে ২৭০ জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছিল। আমাদের পার্টি চেয়ারম্যান কাদেরও ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল। এখনো আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন চাই, যাতে দেশ ও গণতন্ত্র বাঁচতে পারে। জনগণের আকাঙ্খা পূরণের রাজনীতি করতে যদি জেলে যেতে হয় আমরা জেলে যাব। আমাদের আঘাত করলেও আমরা পিছপা হবো না।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নুরুন নাহার বেগম, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ সেলিম, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, মো.
পরে জিএম কাদেরের পক্ষে শ্লোগান দিয়ে মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। মিছিলটি কাকরাইল ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকি হয়ে দলের অফিসে গিয়ে শেষ হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ত কর ম কর ছ ল জ এম ক আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি বাড়িতে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইতালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে আতাউর রহমান (৩৫) নামের একজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আতাউর কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।।
গতকালের ওই ঘটনার পরপরই ছোট ইতালি গ্রামের বিস্ফোরণস্থল ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ডিবি সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি তাজা হাতবোমা। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে উদ্ধার হওয়া হাতবোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। পরে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আতাউর রহমানসহ কুমিল্লা থেকে আসা চার ব্যক্তি ছোট ইতালি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ওঠেন। মুক্তারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪৫) মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুক্তারের বাড়ির ভেতরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হন। পরে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর মুক্তার হোসেনের তিন সহযোগী দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত আতাউরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত হাতবোমা ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। বাগবাড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগামী নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।