জাপান সাগরে যৌথ নৌ মহড়া শুরু করেছে চীন ও রাশিয়া। দুই দেশের পারস্পরিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরো শক্তিশালী ও মার্কিন নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক ব্যবস্থাকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে রবিবার (৩ আগস্ট) থেকে এই মহড়া শুরু হয়েছে। খবর আল-জাজিরার।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টক বন্দরের কাছে জলসীমায়  ‘জয়েন্ট সি-২০২৫’ নামে শুরু হওয়া এ মহড়া আগামী তিন দিন ধরে চলবে।

উভয় পক্ষ ‘সাবমেরিন উদ্ধার, যৌথ সাবমেরিন-বিধ্বংসী, বিমান প্রতিরক্ষা, ক্ষেপণাস্ত্র-বিধ্বংসী অভিযান এবং সামুদ্রিক যুদ্ধ পরিচালনা করবে। রাশিয়ান জাহাজের পাশাপাশি মহড়ায় অংশগ্রহণ করছে গাইডেড-ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী শাওক্সিং এবং উরুমকিসহ চারটি চীনা জাহাজ।

আরো পড়ুন:

কিয়েভে আবারো রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা, নিহত ৩১

রাশিয়ার কাছাকাছি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের

মহড়ার পর দুই দেশ প্রশান্ত মহাসাগরের প্রাসঙ্গিক জলসীমায় নৌ-টহল পরিচালনা করবে। চীন ও রাশিয়া গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত বার্ষিক যৌথ মহড়া চালিয়ে আসছে, যার সূচনা ২০১২ সালে ‘জয়েন্ট সি’ মহড়ার মাধ্যমে হয়। গত বছরের মহড়া হয়েছিল চীনের দক্ষিণ উপকূলে।

এ বছর দেশ দুটির যৌথ মহড়া শুরু হওয়ার আগে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলেছিল, রাশিয়ার সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতা গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি করে।

রাশিয়ান নৌবাহিনী প্যাসিফিক ফ্লিট এই সপ্তাহের শুরুতে এক বিবৃতিতে জানায়, এই মহড়াটি প্রতিরক্ষামূলক প্রকৃতির এবং অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে নয়।

শুক্রবার চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এই বছরের মহড়ার লক্ষ্য দুই দেশের ‘বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরো গভীর করা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউক্রেনের অনেক মিত্র বিশ্বাস করে- বেইজিং মস্কোকে সহায়তা প্রদান করেছে। কারণ, চীন কখনও রাশিয়ার তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের নিন্দা করেনি বা তাদের সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানায়নি। তবে, চীন নিজেদেরকে একটি নিরপেক্ষ পক্ষ দাবি করে নিয়মিতভাবে যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে।

একই সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সংঘাত দীর্ঘায়িত করার অভিযোগও করছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কলকাতায় সম্মিলিত সেনা সম্মেলনের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী মোদির

কলকাতায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১৬তম সম্মিলিত সেনা সম্মেলন (সিসিসি) উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেনা সম্মেলন একটি দ্বিবার্ষিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত শীর্ষস্তরীয় মতবিনিময়ের আসর।

অপারেশন সিঁদুরে’র পর এটিই প্রথম সম্মিলিত সেনা সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, তিন বাহিনীর প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান, প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন প্রধানও।

আরো পড়ুন:

অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি নরম হওয়ার দিন শেষ: ট্রাম্প

আসামে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, ৫ বাংলাদেশি ছাত্রকে বহিষ্কার

ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড সদর দপ্তর কলকাতার বিজয় দুর্গে তথা ফোর্ট উইলিয়ামে আগামী তিনদিন এই সম্মিলিত সেনা সম্মেলন চলবে। 

এই সম্মেলন সেনার তিন বাহিনীর সর্বোচ্চ চিন্তাভাবনামূলক ফোরাম, যা দেশের শীর্ষ অসামরিক ও সামরিক নেতৃত্বকে ধারণাগত ও কৌশলগত স্তরে মতামত বিনিময়ের জন্য আয়োজন করা হয়েছে ৷ কলকাতার আগে সর্বশেষ সম্মিলিত সেনা সম্মলেন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২৩ সালে ভোপালে। অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপটে, এই বছরের সম্মেলন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এবারের সম্মেলনে সংস্কার, রূপান্তর, পরিবর্তন এবং অপারেশনাল প্রস্তুতির উপর জোর দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের  বিবৃতি অনুযায়ী, ‘সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দু সশস্ত্র বাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, সংহতিকরণ এবং প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণে বিশেষ জোর দেওয়া। একই সঙ্গে শীর্ষস্তরের একাধিক ক্ষেত্রে অপারেশনাল প্রস্তুতির উপরও জোর দেওয়া হবে। তিনদিনের এই সম্মেলন সশস্ত্র বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করার চেষ্টা করা হবে, যাতে ক্রমবর্ধমান জটিল ভূ-কৌশলগত পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়।’

রবিবার আসাম সফর সেরে নির্ধারিত সময়ের থেকে বেশ কিছুটা পর দমদম বিমানবন্দরে নামেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা এবং উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। দলীয় কোনো কর্মসূচি না থাকলেও মোদিকে দেখতে ভিড় ছিল বিজেপি সমর্থকদের। ভিড় দেখে গাড়ি থামিয়ে হাত নেড়ে জনসংযোগ সারেন মোদি। সেখান থেকে তার ২৪ গাড়ির কনভয় পৌঁছায় রাজভবনে। সেখানেই রাত্রিবাস করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও। তিনি রাত কাটান ফোর্ট উইলিয়ামে।

চলতি বছরে এই নিয়ে চতুর্থবার পশ্চিমবঙ্গে এলেন নরেন্দ্র মোদি। সকাল ৯ টাতেই রাজভবন থেকে ফোর্ট উইলিয়ামের দিকে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ফোর্ট উইলিয়ামে ছিলেন মোদি। দেড়টার পরে কলকাতা থেকে বিহারের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।

একদিকে বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি। অন্যদিকে অস্থির চিন সীমান্ত। তার মধ্যে আবার নেপালে পালাবদল। দিনকয়েক আগে বাংলাদেশের উত্তরে চিন বিমানঘাঁটি তৈরি করতে চলেছে বলে একটি খবর ছড়ায়। ঘাঁটিটি নাকি আবার তৈরি হবে চিকেনস নেকের কাছেই। সবমিলিয়ে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিরাট এক জটিল সমীকরণ তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় কলকাতার বিজয় দুর্গে সেনা সম্মেলনের আয়োজন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কমিউনিটি ব্যাংক ও বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের মধ্যে কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষর
  • প্রতিবেশী দেশগুলো অস্থির, ভারত এখন কী করবে
  • কারও ওপর আক্রমণ হলে যৌথভাবে জবাব দেবে পাকিস্তান ও সৌদি আরব
  • কলকাতায় সম্মিলিত সেনা সম্মেলনের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী মোদির