কয়েক বছর ধরেই আলোচিত ড্যানি ও মাইকেল ফিলিপো জুটি। ইউটিউবে হরর ভিডিও বানিয়ে দুনিয়াজুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন এই দুই অস্ট্রেলীয় যমজ। জিতেছেন বহু পুরস্কার। ২০২৩ সালে সুপারন্যাচারাল সিনেমা ‘টক টু মি’ বানিয়ে চমকে দেন তাঁরা। সানড্যান্স উৎসবে প্রিমিয়ারের পর দুনিয়াজুড়ে হইচই পড়ে যায়। দুই বছরের বিরতির পর এবার ‘ব্রিং হার ব্যাক’ নিয়ে হাজির তাঁরা। এটিও যে হরর সিনেমা, সেটা নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝে গেছেন। চলতি বছরের ২৯ মে অস্ট্রেলিয়ায় মুক্তির পরই আলোচনায় আসে সিনেমাটি। পরে এটি যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি দেয় প্রযোজনা সংস্থা এ২৪। গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যে মুক্তি পেয়েছে ‘ব্রিং হার ব্যাক’। ১৫ মিলিয়ন ডলার বাজেটের সিনেমাটি এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে ২৩ মিলিয়ন ডলার ব্যবসা করে ফেলেছে। কেবল এটিই নয়, গত কয়েক বছরে অল্প বা মাঝারি বাজেটের অনেক হরর সিনেমা, সেটা দুনিয়ার যে প্রান্তেই নির্মিত হোক, বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলেছে।

সাধারণ একটা বিদেশি সিনেমা দেখতে গেলে সাবটাইটেল লাগে, কিন্তু হররের বিষয়টা এতটা ভিজুয়াল; পুরো বিষয়টা (হরর সিনেমা) ভিজ্যুয়াল আর সাউন্ডের ওপরে চলে, সংলাপ এখানে অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এ জন্য দেখবেন অনেক বাংলাদেশি দর্শক টার্কিশ বা ইন্দোনেশিয়ান হরর সিনেমা দেখে। যুক্তরাষ্ট্রেও একই ব্যাপার, সেখানেও এখন আন্তর্জাতিক হররের একটা ট্রেন্ড চলছে।নুহাশ হুমায়ূন

যখন সুপারহিরো, সিকুয়েল আর পুরোনো ছবির রিবুট দেখে দেখে হাঁপিয়ে উঠেছেন দর্শক, তখন হঠাৎ ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছে হরর বা ভৌতিক ঘরানার ছবি। মার্কিন সংস্থা কমস্কোরের এক পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর উত্তর আমেরিকার মোট টিকিট বিক্রির ১৭ শতাংশই এসেছে হরর ছবির হাত ধরে, যা ২০২৪ সালে ছিল ১১ শতাংশ; এক দশক আগেও যা ছিল মাত্র ৪ শতাংশ।

‘সিনার্স’ ও ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন: ব্লাডলাইনস’-এর মতো ছবির সাফল্য এবং বছর শেষে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ‘দ্য কনজ্যুরিং: লাস্ট রাইটস’ ও ‘ফাইভ নাইটস অ্যাট ফ্রেডিস ২’-এর মতো হরর ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন কিস্তি—সব মিলিয়ে আশাবাদী হলমালিকেরা। ‘আমরা হররকে আমাদের অন্যতম প্রধান টার্গেট ঘরানা হিসেবে দেখছি। যখন অন্য কিছু চলে না, তখন এটা কাজ করে,’ বলেন জর্জিয়ার স্যান্ডি স্প্রিংসের স্প্রিংস সিনেমা অ্যান্ড ট্যাপহাউসের মালিক ব্রান্ট গুলি।

‘ব্রিং হার ব্যাক’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হরর স ন ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘শরিয়াহ ও সরকারি নীতিবিরোধী’: নারী ও ইরানি লেখকদের ১৪০টিসহ ৬৭৯ বই নিষিদ্ধ করল তালেবান

আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যসূচি থেকে নারীদের লেখা বই নিষিদ্ধ করেছে তালেবান সরকার। মানবাধিকার ও যৌন হয়রানি–সম্পর্কিত বিষয়ে পাঠদানের ওপর একটি নতুন নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

শরিয়াহবিরোধী ও সরকারি নীতির পরিপন্থী বলে মনে হওয়ায় ৬৭৯টি বইকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে চিহ্নিত করেছে তালেবান। নিষিদ্ধ এসব বইয়ের মধ্যে ১৪০টি নারীদের লেখা ও ৩১০টি ইরানি লেখকদের লেখা বা ইরানে প্রকাশিত।

নিষিদ্ধ বইয়ের ৫০ পৃষ্ঠার একটি তালিকা আফগানিস্তানের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

আফগান সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলা হয়েছে, তারা এখন থেকে ১৮টি বিষয়ে পাঠদান করতে পারবে না। তালেবানের এক কর্মকর্তা বলেন, এসব বিষয় মূলত ইসলামি শরিয়তের মূলনীতি ও সরকারের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

চার বছর আগে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ ধরনের নানা নিয়মকানুন জারি করেছে তালেবান সরকার। চলতি সপ্তাহেই তালেবানের সর্বোচ্চ নেতার নির্দেশে অন্তত ১০ প্রদেশে ‘ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট’ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কর্মকর্তারা বলেছেন, অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আফগান সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলা হয়েছে, তারা এখন থেকে ১৮টি বিষয়ে পাঠদান করতে পারবে না। তালেবানের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এসব বিষয় মূলত ইসলামি শরিয়তের মূলনীতি ও সরকারের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

অনেকের মতে, এসব নিয়মকানুন আফগানিস্তানের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নানাভাবে প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে কিশোরী ও নারীরা এসব নিয়মের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ষষ্ঠ শ্রেণির পর থেকে তাদের শিক্ষা গ্রহণ নিষিদ্ধ। ২০২৪ সালের শেষ দিকে ধাত্রীবিদ্যা বা মিডওয়াইফারি কোর্সও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ১৮ বিষয়ে পাঠদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তার ৬টিই নারীদের নিয়ে, যেমন ‘জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’, ‘দ্য রোল অব উইমেন ইন কমিউনিকেশন’ ও ‘উইমেনস সোসিওলজি’।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে কী কারণে স্বীকৃতি দিল রাশিয়া ১৪ জুলাই ২০২৫

তালেবান সরকার বলেছে, তারা আফগান সংস্কৃতি ও ইসলামিক আইনের ভিত্তিতে নারী অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

তালেবানের এসব নিয়মকানুন দেশটির মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নানাভাবে প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে কিশোরী ও নারীরা এসব নিয়মের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

তবে আফগানিস্তানের বই পর্যালোচনা কমিটির একজন সদস্য বিবিসিকে বলেন, নারী লেখকদের সব বই পড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নিষিদ্ধ বইগুলোর তালিকায় আফগানিস্তানের সাবেক সরকারের বিচার মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী জাকিয়া আদেলির বইও রয়েছে। তিনি বলেন, ‘চার বছরে তালেবান যা করেছে, তাতে পাঠ্যসূচিতে এমন পরিবর্তনে অবাক হইনি। নারীরা পড়াশোনা করতে পারছেন না। তাদের মতামত ও লেখালিখির অধিকারও দমন করা হবে, এটাই স্বাভাবিক।’

আরও পড়ুনরাশিয়ার পর আর কোন কোন দেশ তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে পারে০৫ জুলাই ২০২৫

গত আগস্টের শেষ দিকে বই নিষিদ্ধের অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেন তালেবান সরকারের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক জিয়াউর রহমান আরিয়ুবি। তিনি বলেন, আলেম ও বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শুধু নারী লেখকই নয়, নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকায় ইরানি লেখক ও প্রকাশকদের বইও রয়েছে। বই পর্যালোচনা কমিটির এক সদস্য বলেন, আফগান পাঠ্যসূচিতে ইরানি বিষয়বস্তুর প্রবেশ ঠেকাতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনতালেবান শাসনের তিন বছর, কেমন আছে আফগানিস্তান১৫ আগস্ট ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ