আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য দুঃসংবাদ
Published: 4th, August 2025 GMT
আইওএস অপারেটিং সিস্টেম থেকে নিজেদের কলরেকর্ড প্রযুক্তিসুবিধা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে অপরিচিত নম্বরের তথ্য খোঁজার জনপ্রিয় অ্যাপ ট্রুকলার। নতুন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে আইফোনে ট্রুকলার অ্যাপের মাধ্যমে ফোনকল রেকর্ড করার সুযোগ পাওয়া যাবে না। ফলে পরিচিত বা অপরিচিত যেকোনো ব্যক্তি কল করলে তা বর্তমানের মতো স্বচ্ছন্দে রেকর্ডের সুযোগ মিলবে না।
ট্রুকলার জানিয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের পর আইফোনে ট্রুকলারের কল রেকর্ডিং–সুবিধা আর পাওয়া যাবে না। এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট টেকক্রাঞ্চকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রুকলারের আইওএস বিভাগের প্রধান নকুল কাবরা জানান, আইফোনে ‘লাইভ কলার আইডি’ এবং ‘অটোমেটিক স্প্যাম কল ব্লকিং’–এর মতো সুবিধাগুলোর ওপর আরও বেশি গুরুত্ব দিতেই কলরেকর্ডিং সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনবাংলাদেশে আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের দাম কত?২৯ এপ্রিল ২০২৫২০২৩ সালের জুনে আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক কলরেকর্ডিং সুবিধা চালু করেছিল ট্রুকলার। পরে এটি অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণেও যুক্ত হয়। তবে অ্যাপলের নীতিমালার কারণে আইওএসে তৃতীয় পক্ষের কোনো অ্যাপের পক্ষে সরাসরি কলরেকর্ড করা যায় না। ফলে ট্রুকলারকে বিকল্প একটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। যেখানে ব্যবহারকারীর কলে একটি আলাদা রেকর্ডিং লাইন যুক্ত করে রেকর্ড সম্পন্ন করা হতো। ট্রুকলারের তথ্যমতে, এই পদ্ধতি একদিকে যেমন প্রযুক্তিগতভাবে জটিল, অন্যদিকে এতে খরচও অনেক বেড়ে যায়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি এই সুবিধা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুনআইফোন ব্যবহারকারীদের সতর্ক করল অ্যাপল, কেন০১ জুন ২০২৫নতুন এ সিদ্ধান্তের আওতায় আইফোন ব্যবহারকারীদের একটি পপআপ বার্তা প্রদর্শন করছে ট্রুকলার। বার্তায় বলা হয়েছে, আইফোনে ট্রুকলারের কলরেকর্ডিং সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। যাদের অ্যাপে রেকর্ড সংরক্ষিত আছে, তাঁদের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেগুলো ডাউনলোড করে রাখতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর সব রেকর্ড মুছে যাবে। রেকর্ডিং সংরক্ষণ করতে হলে প্রথমে আইফোনে ট্রুকলার অ্যাপ চালু করে ‘রেকর্ড’ ট্যাবে যেতে হবে। এরপর ডান পাশে থাকা ‘সেটিংস’ আইকনে চাপ দিতে হবে। সেখানে ‘স্টোরেজ প্রিফারেন্স’ অপশন নির্বাচন করে সেটি ‘আইক্লাউড স্টোরেজ’ হিসেবে নির্ধারণ করতে হবে। নির্দিষ্ট কোনো রেকর্ড আলাদাভাবে সংরক্ষণ করতে চাইলে ‘রেকর্ড’ ট্যাবে গিয়ে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডিংয়ের ওপর বাঁ দিকে সোয়াইপ করতে হবে। এরপর ‘শেয়ার’ বা ‘এক্সপোর্ট’ অপশনে চাপ দিয়ে রেকর্ডিংটি কাঙ্ক্ষিত জায়গায় সংরক্ষণ করা যাবে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট র কল র র স রক ষ র কর ড
এছাড়াও পড়ুন:
আইওএস ১৮.৬: আইফোনের ২৯টি নিরাপত্তা ত্রুটি সংশোধন, হালনাগাদের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
আইফোনের জন্য নতুন নিরাপত্তা হালনাগাদ উন্মুক্ত করেছে অ্যাপল। সম্প্রতি প্রকাশিত আইওএস ১৮.৬ সংস্করণে ২৯টি নিরাপত্তা ত্রুটি সংশোধন করা হয়েছে। তথ্য সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব ত্রুটির সুযোগে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সাইবার অপরাধীদের হাতে চলে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ফলে এখনই যন্ত্র হালনাগাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
অ্যাপলের সহায়তা পেজে বলা হয়েছে, ত্রুটিগুলোর ফলে কিছু কিছু ক্ষতিকর ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সংবেদনশীল তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি তৈরি হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অ্যাপগুলো যন্ত্রের অভ্যন্তরীণ তথ্যেও অননুমোদিত প্রবেশাধিকার নেয়। নিরাপত্তা ত্রুটিগুলোর বড় একটি অংশই ছিল ওয়েবকিট প্রযুক্তিতে। প্রযুক্তিটি অ্যাপলের নিজস্ব ওয়েব ব্রাউজার সাফারিতে ব্যবহৃত হয়। নিরাপত্তা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জ্যামফের নিরাপত্তা কৌশল বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট জশ স্টেইন বলেন, ‘ভালো দিক হলো, এখন পর্যন্ত এসব ত্রুটির কোনোটি ব্যবহার করে আক্রমণ চালানো হয়নি। তবে এটি নিশ্চিন্তে বসে থাকার কারণ হতে পারে না। সুরক্ষিত থাকতে হলে যত দ্রুত সম্ভব ডিভাইস আপডেট করে নেওয়া জরুরি।’ স্টেইন আরও জানান, ওয়েবকিটে থাকা কিছু ত্রুটির সুযোগে দূরবর্তী হ্যাকার ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি করতে কিংবা ওয়েব ব্রাউজারে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
অ্যাপলের তথ্যমতে, সংশোধিত ত্রুটিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর একটি হচ্ছে সিভিই–২০২৫–৪৩২২। এর মাধ্যমে কোনো ভুয়া ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর সংবেদনশীল তথ্য চুরি করা সম্ভব। এ ছাড়া আইফোনের কোরঅডিও ও কোরমিডিয়া ফ্রেমওয়ার্কেও একাধিক ত্রুটি পাওয়া গেছে। অডিও ও ভিডিও প্রক্রিয়াজাতকরণ ও মেমোরি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত এই প্রযুক্তিগুলো আইফোনের নানা গুরুত্বপূর্ণ সুবিধায় ব্যবহৃত হয়। ফলে এই ত্রুটিগুলোও হ্যাকারদের জন্য আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে উঠতে পারে।
নতুন আপডেটে নিরাপত্তাজনিত ত্রুটির পাশাপাশি একটি বহুল ব্যবহৃত সুবিধার ত্রুটিও সমাধান করা হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর ‘মেমোরি মুভি’ সুবিধা ব্যবহার করে ছবি নিয়ে ছোট ভিডিও তৈরির পর অনেক ব্যবহারকারী তা শেয়ার করতে পারছিলেন না। নতুন হালনাগাদে এই সমস্যা দূর করা হয়েছে। তবে আইওএস ১৮–এর পুরোনো কয়েকটি সমস্যা, যেমন মেইল অ্যাপ বন্ধ হয়ে যাওয়া, ওয়াই–ফাই সংযোগে বিঘ্ন ও দ্রুত ব্যাটারি শেষ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। আপডেটে এসব সমস্যার বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট সমাধান দেওয়া হয়নি।
জ্যামফের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যন্ত্রের নেটওয়ার্ক যোগাযোগব্যবস্থায় এখনো কিছু ঘাটতি রয়েছে, যা বড় ধরনের নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। জশ স্টেইন বলেন, ‘এই আপডেট আকারে ছোট হলেও এর গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই ব্যবহারকারীদের এখনই আপডেট করে নেওয়া উচিত।’ আইফোন ছাড়া অ্যাপল তাদের অন্যান্য যন্ত্রের জন্য আলাদা করে নিরাপত্তা হালনাগাদ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ম্যাক, অ্যাপল ঘড়ি, অ্যাপল টিভি ও অ্যাপল ভিশন প্রো। তবে যেসব পুরোনো মডেলের আইপ্যাড নতুন আইপ্যাডওএস ১৮ সংস্করণে হালনাগাদ করা সম্ভব নয়, সেগুলোর জন্য আলাদাভাবে প্রকাশ করা হয়েছে আইপ্যাডওএস ১৭.৭.৯ সংস্করণ।
সূত্র: ডেইলি মেইল