খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ ও গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া
Published: 5th, August 2025 GMT
খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সদস্যদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শহরের চেঙ্গী স্কয়ারে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তির নাম পূর্ণমূখী চাকমা (৫৩)। তিনি প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফের সদস্য বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক বছর উপলক্ষে মিছিল বের করেন দুই পক্ষ। স্বনির্ভর বাজার থেকে প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ সদস্যদের মিছিলটি চেঙ্গী স্কয়ারের পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পূর্ণমূখী আহত হন। পরে চেঙ্গী স্কয়ারে ইউপিডিএফের ব্যানারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় কয়েকটি ফাঁকা গুলি করে একপক্ষ। পরে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার জন্য গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফকে দায়ী করেছেন ইউপিডিএফের মুখপাত্র অংগ্য মারমা। তিনি দাবি করেন, প্রতিপক্ষের মদদে এ হামলা হয়েছে। এ সময় তাঁদের পক্ষের এক নারী সমর্থক আহত হয়েছেন।
এ ঘটনার পর বিক্ষোভ মিছিল বের করেন গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা। চেঙ্গী স্কয়ার থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি সূর্যশিখা ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় বক্তব্য দেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কলিন চাকমা।
হামলার অভিযোগটি অস্বীকার করে ঘটনার জন্য ইউপিডিএফকে দায়ী করেছেন গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় নেতা অমর জ্যোতি চাকমা। তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন উপলক্ষে আমাদের শোভাযাত্রা ছিল। আমরা র্যালি শুরু করার পরপর ওরা (ইউপিডিএফ) আমাদের ওপর হামলা করে। ইটপাটকেল ছোড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’
গোলাগুলির কোনো খবর পাননি জানিয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে কিছুক্ষণ উত্তেজনা ছিল। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন নিধনের জন্য বন বিভাগও দায়ী: উপদেষ্টা
পার্বত্য চট্টগ্রাসহ সারা দেশে বন নিধনের জন্য বন বিভাগও দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। তিনি বলেন, ‘‘বন নিধনের জন্য বন বিভাগও কম দায়ী নয়। তবে কেন বন নিধন হয়েছে, সেটা ভাবতে হবে। সেটা থেকে উত্তরণের জন্য দায়িত্ব নিতে হবে। বনগুলো বাঁচাতে হবে।’’
শনিবার (২ আগস্ট) সকালে রাঙামাটিতে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘কোন গাছ কোন প্রকৃতির এবং অর্থনৈতিকভাবে যেসব গাছ আছে তা নিয়ে একটি সার্ভে করা দরকার। কোনো গাছের বিকল্প নির্ধারণ না করে নিষিদ্ধ করা ঠিক নয়। শুধু আম, কাঁঠাল নয়, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রাখার জন্য কী কী গাছ লাগানো যায়, তা নির্ধারণ করা উচিত।’’
আরো পড়ুন:
৪ লাখ টাকার অবৈধ কাঠসহ ট্রাক আটক
বনরক্ষীদের ওপর হামলা, জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: পরিবেশ সচিব
পরিবেশ বিষয়ে পার্বত্য অঞ্চলের আদিকাল থেকে বসবাসকারীরা অনেক বেশি সচেতন দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘পাহাড়ধস এসব মানুষের বাড়িঘরে হয় না। প্রকৃতিকে যারা চেনেন না, তারাই পাহাড়ধসের শিকার হন।’’
‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্যে শনিবার সকালে রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে সাত দিনব্যাপী বৃক্ষমেলা। বৃক্ষমেলা উপলক্ষে সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে একটি র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জিমনেশিয়ামে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ, পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, সিভিল সার্জন নুয়েন খীসা, পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদ হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের রাঙামাটি সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘‘প্রতিনিয়ত নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে, বন ধ্বংস করা হচ্ছে। অথচ এসব গাছ, বন মানবজাতির জন্য খাবার তৈরি করছে। বিপরীতে আমরা কিছু তৈরি করতে পারি না। ঔষধি গাছগুলো মানুষের ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে। গাছকে অবহেলা করলে মানবজাতি টিকে থাকতে পারবে না। তাই প্রত্যেকের অন্তত প্রতি বছর তিনটি গাছ লাগানো উচিত। একইসঙ্গে সেইসব গাছের রক্ষণাবেক্ষণ, যত্নও নেয়া উচিত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে গাছ লাগানোর ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া দরকার।’’
পরে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করেন উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন জাতের ফলদ, বনজ ও ঔষধি চারা বিক্রি করা হচ্ছে।
ঢাকা/শংকর/বকুল