বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, “দেশের গণতন্ত্রকে বিপদাপন্ন করতে একটি মহল সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলন জীবন উৎসর্গ ও ত্যাগের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয়েছে, আর এর লক্ষ্য ছিল কেবল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।”

তিনি বলেন, “দেশে গণতন্ত্র উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে নানা বিতর্কিত চেষ্টার মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। ছাত্রনেতা নূরের ওপর হামলাও তারই অংশ।”

আরো পড়ুন:

গণঅধিকারের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ বিএনপির

‘জামায়াতকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবে না বিএনপি’

শনিবার (৩০ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে সমাজকল্যাণ পরিষদ আয়োজিত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ভারতে বসে বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করে তিনি বলেন, “সাবধান! ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যারা ষড়যন্ত্র করছে, তাদের জবাব দিতে হবে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। এর কোনো বিকল্প নেই।”

দুদু বলেন, “জুলাইয়ের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। যারা আহত, চিরজীবনের জন্য অঙ্গহানি হয়েছেন, জাতির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের জন্য দোয়া করি।”

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, “এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষণায়। সেই মুক্তিযুদ্ধকে যারা বিরোধিতা করেছে, যারা ওই মুক্তিযুদ্ধ মেনে নিতে পারেনি, যারা ওই মুক্তিযোদ্ধাদেরকে হত্যা করেছে, তাদের একটা বয়ান ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান এটি দ্বিতীয় স্বাধীনতা। এটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না। বরং ২০২৪ ও ১৯৯০ সালের আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধকে সমৃদ্ধ ও গৌরবান্বিত করেছে। এটি ইতিহাসের একটি মহান ঘটনা।”

বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, “গত ১৭ বছরে দলের প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন।” 

আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “সবকিছুর ফলাফলই শেষে একটা মা তার সন্তান ধারণ করলে তার নয় মাসের যে কষ্ট, সেটি নার্স কখনো দাবি করতে পারে না, সেই সব কিছুর চূড়ান্ত অধিকারী মা। কিন্তু নার্সদেরও ভূমিকা থাকে। এক মাসের আন্দোলনে অনেকটা নার্সদের ভূমিকা। আমাদের সন্তানরা, যুবকরা, শ্রমিক, কৃষকরা, খেটে খাওয়া মানুষ তারা রাস্তায় জীবনকে উৎসর্গ করেছে, ১৬ বছরের আন্দোলনকে সমৃদ্ধ করার জন্য, সমাপ্তির জন্য। সেটা কিসের জন্য? গণতন্ত্রের জন্য।”

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, “গণতন্ত্রকে বিপণ্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। নুরুল হক নুরের ওপর হামলাও তারই অংশ। সাবধান হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যারা বিদেশে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের জবাব দিতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে। এর কোনো বিকল্প নেই।”

শামসুজ্জামান দুদু ড.

ইউনূসকে সমর্থন দেওয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, ফেব্রুয়ারিতেই ঐতিহাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়েই বেগম খালেদা জিয়ার উত্তরসুরী গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে লালন করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার পথ প্রশস্ত হবে।”

আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এম এ মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিবুর রহমান হাবিব, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবিরসহ অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ গণতন ত র ব এনপ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শেষ পর্যন্ত কোনো অগণতান্ত্রিক কিংবা অপশক্তির কাছে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের পথে হাটতে হয় কি-না, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন তারেক রহমান। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মাঠে থাকা সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এমন বিপদের কথাও স্মরণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।’

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তবে তাঁর বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।

শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তাঁর দল।

তারেক রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।’

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • গণতন্ত্রের পথে সংকট দেখছেন তারেক
  • এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান
  • সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন জাতির দাবি
  • জনগণের বৃহত্তর ঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার পতন হবে না: সাকি