সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে চোখ ঝাপসা দেখার অনেক কারণ আছে। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন। তবে গুরুতর শারীরিক সমস্যা আছে কি না, সেই বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। হেলথলাইনের তথ্য অনুযায়ী জেনে নেওয়া যাক চোকে ঝাপসা দেখার নানা কারণ। 

শুষ্ক চোখ

আরো পড়ুন:

ভালো থাকার জন্য যা করেন প্রভা

দীর্ঘদিন কাশির সমস্যায় ভুগছেন, ফুসফুস ক্যানসার নয়তো?

চোখ শুকিয়ে গেলে ঘুম থেকে ওঠার পরে ঝাপসা দেখতে পারেন। চোখের পানি চোখকে লুব্রিকেট করে, পুষ্টি জোগায় এবং সুরক্ষিত করে। ঘুমের সময়ও চোখে ক্রমাগত অশ্রু তৈরি হতে থাকে।তবে, কখনও কখনও চোখের পৃষ্ঠ শুকিয়ে যেতে পারে, যার ফলে সকালে ঝাপসা দেখতে পারেন। ঘুম থেকে ওঠার পর কয়েকবার পলক ফেললে আপনার কর্নিয়া আর্দ্র হতে পারে এবং ঝাপসা ভাব দূর হতে পারে।

চোখের অ্যালার্জি
অ্যালার্জির কারণে চোখ চুলকানি, ফোলাভাব এবং অধিকমাত্রায় পানি জমে থাকতে পারে।  সেইসাথে চোখ শুকিয়েও যেতে পারে। ফলে ঘুম থেকে ওঠার পর ঝাপসা দৃষ্টি হতে পারে। চোখে অ্যালার্জি থাকলে ধুলাবালি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা 

মুখ নিচু করে ঘুমানো
মুখ নিচু করে ঘুমানোর ফলে ফ্লপি আইলিড সিনড্রোম (FES) হতে পারে। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে উপরের চোখের পাতা স্থিতিস্থাপকতা হারায়। এর ফলে সকালে ঝাপসা দেখতে পারেন। সেইসাথে চোখ ফেটে যাওয়া এবং জ্বালাপোড়া হতে পারে। FES যে কারোরই হতে পারে, তবে স্থূলকায় পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।

ঘুমানোর আগে কিছু ওষুধ সেবন
অ্যান্টিহিস্টামিন, ঘুমের ওষুধ, ঠান্ডা লাগার ওষুধ এবং উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সেবনের ফলে চোখের পানি কমে যেতে পারে। এসব ওষুধ ঘুমানোর আগে সেবন করলে, সকালে ঝাপসা দৃষ্টি এবং শুষ্ক চোখ অনুভব করতে পারেন।

কন্ট্যাক্ট লেন্স পরে ঘুমানো
কন্ট্যাক্ট লেন্স পরে ঘুমানোর ফলে চোখে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যেতে পারে, যার ফলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায় এবং ঘুম থেকে ওঠার পরে ঝাপসা দৃষ্টি দেখা দেয়। ঘুমানোর সময় কন্ট্যাক্ট লেন্স পরা উচিত নয়।
ঘুমানোর আগে অ্যালকোহল পান করা
আপনি যদি ঘুমানোর আগে অ্যালকোহল পান করে থাকেন তবে সকালে ঝাপসা দেখতে পারেন। অ্যালকোহল পানিশূন্যতার কারণ হয়, যা শুষ্ক চোখ এবং ঝাপসা দৃষ্টি সৃষ্টি করতে পারে।

কখন ডাক্তার দেখাবেন
সকালে ঘুম থেকে উঠে ঝাঁপসা দেখা স্ট্রোকের পূর্বলক্ষণ হতে পারে। সুতরাং যতদ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর জ বন ঘ ম ন র আগ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত

বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ। 

সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।

আরো পড়ুন:

একা বাস করতে পারে যে পাখি

কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?

সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।

তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না। 

এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস। 

তিনি জানেন,  প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে।  বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।

সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন। 

একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।

সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।

চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।

গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কারা বেশি কাঁদেন? 
  • বর্তমান সংকটের জন্য সরকার দায়ী, দলগুলোর চাপে সিদ্ধান্ত বদল
  • প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত