পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরী তৈরি করবে ভারত
Published: 5th, September 2025 GMT
১৫ বছরের প্রতিরক্ষা আধুনিকীকরণ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভারত তার তৃতীয় পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরী তৈরি করবে। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো নৌবাহিনী ভারতীয় তৈরি যুদ্ধবিমানকেও অন্তর্ভুক্ত করবে। শুক্রবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী চীন ও পাকিস্তানের সাথে সীমান্তবর্তী ভারত মারাত্মক লড়াই করেছে। এসব সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে নয়াদিল্লি ক্রমবর্ধমানভাবে দেশীয় প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির উপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি করছে যাতে তারা সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে এবং রাশিয়া, ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশী সরবরাহকারীদের উপর নির্ভরতা কমাতে পারে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০২৫ সালের রোডম্যাপে বলা হয়েছে, “যেহেতু দেশটি আসন্ন দশকগুলোতে বৃহত্তর চ্যালেঞ্জ এবং দায়িত্ব গ্রহণের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে, তাই পরিষেবাগুলোকে সেই অনুযায়ী সজ্জিত করা অত্যন্ত জরুরি। বৃহত্তর বেসরকারি-সরকারি অংশীদারিত্বই এগিয়ে যাওয়ার পথ।”
ভারতের বর্তমানে দুটি বিমানবাহী রণতরী রয়েছে। এগুলোর একটি রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা এবং অন্যটি স্ব-নির্মিত। প্রস্তাবিত নতুন রণতরীটি দীর্ঘপাল্লার এবং গোপনীয় অপারেশনের জন্য পারমাণবিক শক্তিচালিত হবে। এ ধরনের রণতরী ভারতের জন্য প্রথম বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রস্তাবটিতে ক্যারিয়ার এবং অন্যান্য ভবিষ্যতের যুদ্ধজাহাজকে সমর্থন করার জন্য কমপক্ষে ১০টি পারমাণবিক চালনা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি ভারত মহাসাগরজুড়ে ভারতের কৌশলগত নাগাল সম্প্রসারণের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরছে।
রণতরীটিতে ভারত অজ্ঞাত সংখ্যক নতুন প্রজন্মের টুইন-ইঞ্জিন, ডেক-ভিত্তিক ফাইটার এবং হালকা যুদ্ধবিমান অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনাও করেছে। এগুলো সবই নৌবাহিনীর জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড তৈরি করবে।
এপ্রিল মাসে ভারত ফ্রান্সের সাথে ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের তৈরি ২৬টি রাফায়েল-মেরিন টুইন এবং সিঙ্গেল-সিট যুদ্ধবিমানের জন্য প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই যুদ্ধবিমানগুলো বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত এবং আইএনএস বিক্রমাদিত্যে মোতায়েন করা হবে।
রোডম্যাপটিতে দুটি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিমান উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা সংগ্রহেরও প্রত্যাশা করা হয়েছে। এই উৎক্ষেপক মার্কিন নৌবাহিনীতেও রয়েছে। এতে ঐতিহ্যবাহী বাষ্পীয় ক্যাটাপল্টের পরিবর্তে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক শক্তি ব্যবহার করে বাহক থেকে বিমান উৎক্ষেপণ করা যায়।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ম নব হ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল