কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় রাস্তা থেকে দুই নারীকে তুলে নিয়ে যুবদল নেতার নেতৃত্বে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা কাউকে না জানাতে ধর্ষণের ভিডিও করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগী দুই নারী।

গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের সেবাখোলায় স মিলে ভিতরে তাদের ধর্ষণ করা হয়। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে দুই নারী বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেন বলে জানিয়েছেন নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক।

অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের যুবদল নেতা মো.

মহসিন। তিনি বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের রঞ্জু মিয়ার ছেলে। অন্যজন স মিলের মালিক খোকন মিয়া। বাকিদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।

আরো পড়ুন:

সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

চকরিয়ায় দলবদ্ধ ধর্ষণ: ৩ যুবক গ্রেপ্তার 

ভুক্তভোগী দুই নারী বলেন, ‘‘আমরা দুই বোন। ১০-১২ জন মিলে স মিলে আমাদের ধর্ষণ করেন। সবার মুখ দেখলে চিনতে পারব। দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তারা ধর্ষণ করেন। তখন স মিলের মালিক সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তারা আমাদের রাতেও রাখতে চান। আমরা হাতে-পায়ে ধরে তাদের থেকে ছাড়া পাইছি।’’

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দুই নারীর ধর্ষণের ঘটনায় কেউ মুখ খুলতে চাচ্ছে না। স মিলের মালিক খোকন মিয়া ঘটনার পর পর পলাতক। প্রধান অভিযুক্ত যুবদল নেতা মহসিন এলাকা ছাড়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ঘটনা এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর মহসিনকে গ্রামে দেখা যাচ্ছে না।

মুঠোফোন অভিযুক্ত স মিলের মালিক খোকন মিয়া বলেন, ‘‘জোর করে আমার স মিলে দুই মাইয়া নিয়ে ঢোকে যুবদল নেতা মহসিন। এ সময় তার সঙ্গে আরো ১০-১২ জন ছিল। আমি কিছু করিনি। তারাই সব করেছে।’’ প্রধান অভিযুক্ত মহসিনকে মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অভিযুক্ত মহসিনের বাবা রঞ্জু মিয়া বলেন, ‘‘আমার ছেলের বিরুদ্ধে একটি গ্রুপ অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর আগেও এলাকায় বিভিন্ন অপপ্রচার হয়। আমার ছেলে নির্দোষ।’’

নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি শুনিনি। তবে কেউ যদি দলের নাম ব্যবহার এ সব অপকর্ম করে, আমরা তার দায়ভার নিবো না। অপরাধীকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হোক।’’

নাঙ্গলকোট থানার ওসি একে ফজলুল হক বলেন, ‘‘দুই নারী পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আমরা তাদের কাছে ঘটনা জানতে চাচ্ছি। বিস্তারিত পরে বলব।’’

নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমিন সরকার বলেন, ওসিকে বলা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/রুবেল/বকুল

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

সাভারে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ১

সাভারে এক তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় দেলোয়ার (৩৫) নামে যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেলে সাভারের তেঁতুলঝড়া ইউনিয়নের রাজফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রবিবার (১ নভেম্বর) সকালে সাভার মডেল থানার ট্যানারি ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম সবুজ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তার দেলোয়ার একই এলাকার বাসিন্দা। 

আরো পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী তরুণী সঙ্গে দেলোয়ারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর থেকে তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ হত। তরুণী বিদেশে যাবে বলে ওই যুবককে জানায়। অভিযুক্ত দেলোয়ার তার মায়ের মাধ্যমে তরুণীকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। 

এ কথা শুনে দেলোয়ারকে তার মাকে নিয়ে বাসায় আসতে বলেন তরুণী। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে দেলোয়ার তার মা এবং অন্তর নামে এক বন্ধুকে নিয়ে তরুণীর বাসায় যান। আলোচনা শেষে দেলোয়ারের মা তরুণীর বাসা থেকে চলে যান। দেলোয়ার ও তার বন্ধু বাসায় অবস্থান করেন। বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে তারা তরুণীকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে ভুক্তভোগী তরুণী সাভার মডেল থানায় দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ করেন।

সাভার মডেল থানার ট্যানারি ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম সবুজ বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতেই সাভার মডেল থানায় একটি দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতে পাঠানো হবে। অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাভারে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ১