কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় দুই কিশোরীকে রাস্তা থেকে তুলে দিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন নুরপুর গ্রামের সেবাখোলা বাজার স’মিলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার চারদিন পর রোববার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা। তারা জানিয়েছে, মো. মহসিন নামে ইউনিয়ন যুবদলের এক কর্মীর নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাদের ধর্ষণ করে।

মহসিন নুরপুর গ্রামের রঞ্জু মিয়ার ছেলে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। ভুক্তভোগী কিশোরীদের মধ্যে একজনের বাড়ি চাঁদপুরে, আরেকজনের লক্ষ্মীপুরে। তারা কাজের সূত্রে কুমিল্লা শহরে থাকে।

ভুক্তভোগীরা জানায়, তারা একটি অটোরিকশায় বাঙ্গড্ডা থেকে কুমিল্লা শহরের দিকে যাচ্ছিল। পথে মহিসন ও সেবাখোলা বাজার স’মিলের মালিক খোকন মিয়া তাদেরকে অটোরিকশায় জিম্মি করে বিভিন্ন সড়কে ঘুরতে থাকে। পরিস্থিতি টের পেয়ে দুই কিশোরী নেমে যেতে চায়। এ সময় তাদের ধস্তাধস্তি হয়। পরে দু’জনকে স’মিলে নিয়ে যায় তারা। সেখানে আরও ১০ জন আসে। তারা দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাদের ওপর নির্যাতন চলানো হয়। পুরোটা সময় সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন স’ মিলের মালিক খোকন। তাদেরকে যে অটোরিকশায় ঘটনাস্থলে আনা হয়েছিল, সেই গাড়িতেই বিকেলে তুলে দিয়ে সোজা বাড়ি যেতে বলে তারা। সেই সঙ্গে কাউকে কিছু জানালো ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হুমকি দেয়।

দুই কিশোরী বলেন, ‘দু’জন আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করেছে। সবার মুখ দেখলেই আমরা চিনতে পারব।’

এলাকাবাসী জানান, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর মহসিন ও খোকনকে গ্রামে দেখা যাচ্ছে না। 

মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে খোকন বলেন, ‘জোরপূর্বক আমার স’মিলে দুই মেয়ে ঢোকে যুবদল নেতা মহসিন। তার সঙ্গে আরও ১০-১২ জন ছিল। আমি কিছু করিনি।’ মহসিন নির্দোষ বলে দাবি করেছেন তার বাবা রঞ্জু মিয়া।

নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, মহসিন যুবদল করে, তবে কোনো কমিটিতে পদ নেই। আমি ঘটনাটি শুনেছি। কেউ যদি দলের নাম ব্যবহার করে এসব অপকর্ম করে, আমরা তার দায়ভার নেব না।

নাঙ্গলকোট থানার ওসি এ কে ফজলুল হক জানান, দুই কিশোরী কুমিল্লা শহরে চাকরি করে। বৃহস্পতিবার তারা বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নে একজনের সঙ্গে করতে এসেছিল। ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটে বলে তারা জানিয়েছে। দুই কিশোরী পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আমরা তাদের কাছে ঘটনা জানতে চাচ্ছি। বিস্তারিত পরে বলব। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন