সাতক্ষীরায় যৌতুকের দাবিতে নববধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে স্বামী। 

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে সদর উপজেলার ঝাড়ডাঙ্গা ইউনিয়নের মাধবকাটি গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। সকালে স্থানীয় জনতা অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। 

নিহত মোছা. খাদিজা খাতুন (১৯) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নারায়নজোল গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে। অভিযুক্ত আমিরুল ইসলাম (২৩) একই উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের মাধবকাটি গ্রামের এলাহী বক্সের ছেলে। 

নিহতের আত্মীয় নারায়নজল গ্রামের মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মাত্র তিন মাস আগে আমিরুল ইসলামের সঙ্গে খাদিজা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে আমিরুল শ্বশুরের কাছ থেকে যৌতুকের ২ লাখ টাকা আনার জন্য খাদিজা খাতুনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। খাদিজা টাকা আনতে বাবার বাড়ি যেতে রাজি না হওয়ায় তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে আমিরুল। এ ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে আমিরুল লাঠি দিয়ে তার স্ত্রী খাদিজার মাথায় আঘাত করে। খাদিজা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মুখে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে আমিরুল। 

তিনি জানান, এ ঘটনার পর আমিরুল উন্মাদের মতো হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে বাড়ি আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে থাকে সে। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয় জনতা আমিরুলকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সামিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ আমিরুল ইসলামকে আটক করেছে।

ঢাকা/শাহীন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট

ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট। আজ শুক্রবার সকাল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা—রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ থেকে আসা কর্মজীবীরা বিভিন্ন যানবাহনে ঘাটে পৌঁছে লঞ্চে নদী পার হচ্ছেন। মাত্র তিন থেকে চার মিনিটে প্রতিটি লঞ্চ যাত্রী বোঝাই করে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থেকে আসা পোশাকশ্রমিক মো. সাব্বির হোসেন হাত ধরে নববধূর সঙ্গে লঞ্চে উঠছিলেন। তিনি জানান, ঢাকার হেমায়েতপুরের একটি পোশাক কারখানায় দুজনেই কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর এটাই তাঁদের একসঙ্গে কর্মস্থলে ফেরার প্রথম যাত্রা।

সাব্বির বলেন, বালিয়াকান্দি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রাজবাড়ী হয়ে দৌলতদিয়ায় এসেছেন। রাস্তায় তেমন ভোগান্তি না থাকলেও লঞ্চঘাটে এসে ভিড়ে পড়েছেন। শনিবার থেকে তাঁদের কারখানা খুলছে, তাই আজই রওনা হয়েছেন। ভিড়ের মধ্যে যাতে কেউ হারিয়ে না যায়, সে জন্য এক হাতে লাগেজ ও আরেক হাতে নববধূর হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন।

রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে আসা আরেক পোশাকশ্রমিক মিম আক্তার বলেন, তিনি সাভারের একটি কারখানায় কাজ করেন। ছুটিতে বাড়ি এসে ঈদ করেছেন। শনিবার কারখানা খুলবে—জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাগনেকে সঙ্গে নিয়ে আজই রওনা হয়েছি। দেরি করলে ঝামেলা হতে পারে।’

সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, কাঠের সেতু পেরিয়ে সারিবদ্ধভাবে যাত্রীরা পন্টুনে দাঁড়াচ্ছেন। টিকিটকর্মীরা সেতুতে উঠে টিকিট দিচ্ছেন। প্রতিটি লঞ্চ কয়েক মিনিটেই যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে। ঘাটে আনসার, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর সদস্যদের সহায়তায় ভিড় সামলানো হচ্ছে।

দৌলতদিয়া নৌ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য মাসুদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ভিড় কম ছিল, তবে আজ শুক্রবার সকাল থেকে চাপ বাড়ছে। শনিবার থেকে অফিস ও কারখানা খোলার কারণে অনেকে আজই ফিরছেন।

ঘাট ইজারাদারের প্রতিনিধি আবদুল আউয়াল জানান, বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রী চলাচল শুরু হলেও আজ সকাল থেকে ঘাটে ভিড় বেড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়ছে। এই চাপ শনিবার পর্যন্ত থাকতে পারে।

বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের টার্মিনাল সুপারভাইজার মো. শিমুল হোসেন বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘ্ন পারাপারের জন্য দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি লঞ্চের মধ্যে ১৮টি চলাচল করছে। অতিরিক্ত চাপ পড়লে বাকি দুটি লঞ্চও চালু করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট