Risingbd:
2025-12-05@04:30:18 GMT

লালন মেলায় ৭৮ মোবাইল ফোন চুরি

Published: 20th, October 2025 GMT

লালন মেলায় ৭৮ মোবাইল ফোন চুরি

আধ্যাত্মিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউরিয়া আখড়াবাড়িতে এবার তিন দিনের তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানে মানুষের ঢল নামে। তিরোধান দিবসে এমন জনসমাগম কয়েক দশকে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন বাউল, সাধক ও লালনভক্তরা। এ সুযোগে সক্রিয় ছিল মোবাইল ফোন চোর, পকেটমার ও জাল টাকা কারবারি একাধিক চক্র। 

কুমারখালী থানায় তিন দিনে ফোন চুরির ঘটনায় অন্তত ৭৮ জন ভুক্তভোগী সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এছাড়াও জাল ২১ হাজার ৫০০ টাকাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে র‍্যাব। এ সব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। 

আরো পড়ুন:

মিলল ২ দিনের অনুমতি, কুন্ডুবাড়ি মেলা শুরু কাল

দুই বাংলার ‘সীমান্ত মিলন মেলা’, ১০ বছর পর দুই বোনের দেখা

কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো.

আমিরুল ইসলাম সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ উৎসব রবিবার (১৯ অক্টোবর) মধ্যরাতে লালন সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয়।

ফোন চুরি ও পকেটমারের ঘটনায় গ্রেপ্তাররা হলেন, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কান্দাপাড়ার মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে শামীম তালুকদার (২৮), নেত্রকোনার বারহাট্টা থানার ডেউপুর উত্তরপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে সেফায়েত উল্লাহ (১৯), কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ চিথোলিয়ার মৃত রফিকুলের ছেলে মো. সজিব (১৯), মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল এলাকার মোস্তফার ছেলে রমজান আলী (২৬), ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাশেমের ছেলে রাজিব মিয়া (২০), পাবনার চর ভবানীপুর এলাকার বক্করের ছেলে আব্দুল মালেক (২৫), গাইবান্ধার পরেশ তালুকদারের ছেলে মামুন তালুকদার (৫০), কুষ্টিয়ার জালালের ছেলে তানজিম (২০)। জাল টাকার জন্য মো. সবুজকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কুষ্টিয়ার মিরপুরের আমবাড়ীয়া এলাকার শাজাহান আলীর ছেলে। 

রবিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, কুমারখালী থানা চত্বর, প্রবেশপথ ও কম্পিউটার অপারেটরের কক্ষের সামনে ভুক্তভোগীদের ভিড়। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাওন ইসলাম বলেন, ‘‘শনিবার (১৮ অক্টোবর) লালন মাজারের প্রবেশপথে ভিড় ছিল। বন্ধুরা গলা ধরাধরি করে রেলের মতো যাচ্ছিলাম। হঠাৎ রাত ১০টার দিকে দেখি পকেটে রেডমি নোট ১৪ মডেলের ফোনটি নেই। কোথাও না পেয়ে থানায় জিডি করতে এসেছি।’’ 

কুমারখালীর সদকী ইউনিয়নের দড়ি বাটিকামারা এলাকার স্কুল শিক্ষক পলাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাতে লালন মেলায় লাখো মানুষের ভিড় ছিল। সেখানে গিয়ে আমার স্যামসাং ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন হারিয়ে গেছে। থানায় জিডি করেছি।’’

লালন স্মরণোৎসবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলেও মোবাইল ফোন চুরির ঘটনা ঘটছে বলে জানান কুমারখালী থানার পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘‘তিন দিনে ৭৮ জনের জিডি আকারে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১০-১২ জনকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’’ 

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘‘শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে আখড়বাড়ির প্রবেশপথ থেকে জাল ২১ হাজার ৫০০ টাকাসহ সবুজকে আটক করে র‍্যাব। তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’’

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ল র খবর এল ক র ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

১ লাখ কোটি টাকার পারিবারিক ব্যবসাও সামলান এই তারকা-পত্নী

দক্ষিণী সিনেমার মেগাস্টার রাম চরণ। ২০১২ সালে ১৪ জুন উপাসনার সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন তিনি। বিয়ের ১০ বছর পর প্রথম সন্তানের বাবা-মা হন এই দম্পতি। আবারো জমজ সন্তানের বাবা-মা হতে যাচ্ছেন তারা। কয়েক দিন আগে আইআইটি হায়দরাবাদে ডিম্বাণু সংরক্ষণ নিয়ে মন্তব্য করার পর কটাক্ষের শিকার হন উপাসনা, তৈরি হয় বিতর্ক। সময়ের সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। এ পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেন উপাসনা। তারপর থেকে আলোচনায় রয়েছেন এই তারকা-পত্নী।  

রাম চরণের স্ত্রী উপাসনার আরেক পরিচয় তেলুগু চলচ্চিত্রের মেগাস্টার চিরঞ্জীবীর পুত্রবধূ। রাম চরণ রুপালি পর্দার ‘রাজা’ হলে ব্যবসার ‘রানি’ উপাসনা। তারকা-পত্নী হওয়ার পাশাপাশি তার নিজস্ব একটি পরিচয়ও রয়েছে। বেসরকারি অ্যাপোলো হাসপাতালের করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটির ভাইস চেয়ারপার্সন উপাসনা। পাশাপাশি সমাজসেবার সঙ্গেও যুক্ত। নারী ও শিশুদের জন্য নানা উন্নয়নমূলক কাজ করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

বিজয়ের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে যা বললেন রাশমিকা

ধানুশ-কৃতির সিনেমার আয় ১৩৬ কোটি টাকা

 

পারিবারিকভাবে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে উপাসনার যোগসূত্র। ভারতের অন্যতম বৃহৎ হাসপাতাল ও চিকিৎসা পরিষেবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রতাপচন্দ্র রেড্ডির নাতনি। ৭৭ হাজার কোটি রুপির (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৪ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকার বেশি) ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী উপাসনা। তার মা শোবনা কামিনেনি হলেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী ভাইস চেয়ারপার্সন। প্রতিষ্ঠানটির তৃতীয় প্রজন্মের উদ্যোক্তা হলেন উপাসনা।

 

হায়দরাবাদে স্কুল জীবনের পাঠ শেষ করেন উপাসনা। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে পাড়ি জমান। লন্ডনের রিজেন্টস ইউনিভার্সিটি থেকে আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিপণন ও ব্যবস্থাপনায় বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করে তিনি। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে পুরস্কারও পেয়েছিলেন এই মেধাবী ছাত্রী। তারপর দেশে ফিরে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন উপাসনা। পারিবারিক ব্যবসার বৃত্ত ছেড়ে উপাসনার প্রভাব গণমাধ্যমে বিস্তৃত। একটি ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক উপাসনা। নারীদের স্বাস্থ্য-সুস্থতা নিয়ে মাঝেমধ্যেই কলম ধরেন।

 

উপাসনার কর্মযজ্ঞ এখানেই শেষ নয়। একটি বীমা সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালকও তিনি। উপাসনার বাবা অনিল কামিনেনির সংস্থারও দায়িত্ব তার কাঁধে রয়েছে। এমনকি, তার শাশুড়ি, রাম চরণের মা সুরেখা কোনিদেলার খাবারের ব্যবসার পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেন উপাসনা। অর্থাৎ হেঁশেল থেকে স্বাস্থ্য, সমস্ত ক্ষেত্রেই অবাধ বিচরণ উপাসনার।

 

একটি বিশেষ উদ্যোগের সঙ্গে উপাসনার নাম জড়িয়ে আছে। এই পরিষেবার মাধ্যমে ভারতজুড়ে ১৫০টিরও বেশি বৃদ্ধাশ্রম দত্তক নিয়েছেন ব্যবসায়ী পরিবারের এই কন্যা। শুধু দত্তক নেওয়াই নয়, এসব বৃদ্ধাশ্রমের সদস্যরা যাতে সঠিক আদর-যত্ন পান সেদিকেও খেয়াল রাখেন উপাসনা। জীবন সায়াহ্নের এই মানুষগুলো যাতে শারীরিক-মানসিকভাবে ভালো থাকেন সেটাই টার্গেট বলে জানিয়েছেন উপাসনা।

 

উপাসনার নানু ডা. প্রতাপচন্দ্র রেড্ডি একজন ধনকুবের। ১৯৮৩ সালে অ্যাপোলো হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয় ৫০ বছর বয়েসি প্রতাপচন্দ্রের হাত ধরে। ভারতের প্রথম ৫০ জন শিল্পপতির তালিকায় নাম লেখান প্রতাপচন্দ্র। হাসপাতাল ছাড়াও ২১টি ভিন্ন সংস্থা রয়েছে তার প্রতিষ্ঠানের ছাতার নিচে। পাঁচ হাজার ওষুধের দোকান থেকে শুরু করে ২৯১টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র, ডিজিটাল হেলথ পোর্টালও রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের।

 

বেসরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার আগে প্রতাপচন্দ্র পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন তিনি। নিজের কন্যাদেরও ব্যবসার কাজ বুঝিয়েছেন প্রতাপচন্দ্র। তা চার কন্যাই প্রতিষ্ঠানটির উঁচু পদে রয়েছেন। প্রতাপচন্দ্রের এক কন্যা শোবনার মেয়ে উপাসনা এই হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।

 

কলেজ জীবন থেকেই একে অপরকে চিনতেন রাম চরণ ও উপাসনা। বন্ধু মহলে তারা ছিলেন আলোচিত। অম্ল-মধুর সম্পর্কে সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন। এরপর এক সময় রাম চরণ দেশের বাইরে যান। তখন পরস্পরের সঙ্গ মিস করতেন তারা। সবাই ধরেই নিয়েছিল প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন দু’জন। কিন্তু তখনও পরস্পরকে বন্ধুই ভাবতেন তারা। রাম চরণের ‘মাগাধীরা’ সিনেমাটি মুক্তির পরই মূলত উপাসনার সঙ্গে এই অভিনেতার প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। দু’জনের পরিবারের মধ্যে বেশ মধুর সম্পর্ক ছিল, এজন্য বিয়ে নিয়েও কোনো ঝামেলা হয়নি।   

 

২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের টেম্পল ট্রি ফার্মসে রাম চরণ ও উপাসনার বাগদান হয়। জাঁকজমকপূর্ণ এই আয়োজনে ছিলেন দুই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনরা। তাদের বাগদান নিয়ে ভক্তদের মধ্যে বেশ উন্মাদনা ছিল। তাকে নিয়ে মিডিয়ার মাতামাতিতে বেশ বিব্রত ছিলেন উপাসনা। তবে সবকিছু বেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন রাম চরণ। ২০১২ সালের ১৪ জুন পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে এই জুটির বিয়ে ও বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। বিয়ের পর যৌথ সিদ্ধান্তে ডিম্বাণু সংরক্ষণ করেন রাম চরণ-উপাসনা। এই ডিম্বাণু থেকেই তাদের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। এ নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন উপাসনা।

 

উপাসনার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ১৩০ কোটি রুপি। রাম চরণের মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৩৭০ কোটি রুপি। রাম চরণ-উপাসনার সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ আড়াই হাজার কোটি রুপি ছাড়িয়েছে। এই দম্পতির হায়দরাবাদের জুবিলি হিলসে একটি বাংলো রয়েছে, যার দাম ৩০ কোটি রুপি। বিলাসবহুল বাংলোতে রয়েছে—সুইমিং পুল, একটি টেনিস কোর্ট, একটি বিশাল মন্দির, একটি জিমনেশিয়াম। তাছাড়া মুম্বাইয়ের একটি পেন্টহাউজের মালিকানাও রয়েছে রাম চরণ-উপাসনার।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ