কারচুপি নয়, পরিসংখ্যানে পরোক্ষ অপব্যবহার হয়: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
Published: 20th, October 2025 GMT
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘সরকারি পরিসংখ্যান রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হয় কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে। আসলে পরিসংখ্যানে কারচুপি হয় না, পরোক্ষ অপব্যবহার আছে।’
উদাহরণ দিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিসংখ্যান অনুকূলে থাকলে প্রকাশ করা হয়। আবার অনুকূলে না থাকলে প্রকাশ করা হয় না। এভাবে অর্ধসত্য প্রকাশিত হয়। আবার বিভিন্ন পদ্ধতিগতভাবে পরিসংখ্যান তৈরি করতে গিয়ে যেটা ভালো দেখায়, সেটা প্রকাশ করা হয়। এভাবে পরোক্ষ অপব্যবহার হয়।’
বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
অপব্যবহারের বাস্তব উদাহরণ দিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে একবার ধানের উৎপাদন কত হবে, সেটা নিয়ে কথা হয়। তখন স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে তথ্য ব্যবহার করা হয়, যার মাধ্যমে উৎপাদন বেশি দেখানো যায়।
আজকের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিবিএসের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ আলোচনা সভা হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) স্বাধীনতা নিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বিধিমালা সংশোধন করার মাধ্যমে বিবিএসকে স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে। এতে অনুমতি ছাড়াই পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে পারবে বিবিএস। আগে যেসব পরিসংখ্যান প্রকাশের আগে মন্ত্রী কিংবা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যেতে হতো। এখন আর কাউকে দেখানোর প্রয়োজন হবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, পরিসংখ্যান এখন সমাজের অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে। গত ৫০ বছরে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যার কিছুটা সংগত আর কিছুটা হয়তো সংগত নয়।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, পরিসংখ্যানের মান একমাত্রিক কোনো বিষয় নয়। মানসম্মত পরিসংখ্যান তৈরির জন্য মানসম্মত প্রতিষ্ঠান এবং দক্ষ জনবল প্রয়োজন হয়। তাই শুধু মান চাইলে হবে না, পর্যাপ্ত অর্থায়ন লাগবে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের জন্য টাস্কফোর্সের চূড়ান্ত প্রতিবেদন আজ হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁর মতে, বিবিএসের বর্তমান প্রকল্পের সংস্কৃতি সংস্থাটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিভিন্ন জরিপ পরিচালনার জন্য স্থায়ী অর্থায়ন প্রয়োজন।
প্রতি পাঁচ বছর পরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান দিবস পালিত হয়। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে আজ সকালে আগারগাঁও এলাকায় এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আয়োজন করে বিবিএস।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স খ য ন র অপব যবহ র উপদ ষ ট ব যবহ র র রহম ন ব ব এস
এছাড়াও পড়ুন:
ভ্যাট দিবস ১০ ডিসেম্বর: থাকছে না সেরা ভ্যাট দাতা সম্মাননা
আসছে ১০ ডিসেম্বর ভ্যাট দিবস। এছাড়া ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভ্যাট সপ্তাহ পালন করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে এবারও গত বছরের মতো সেরা ভ্যাট দাতা প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দিচ্ছে না সরকার।
ভ্যাট প্রদানে উৎসাহিত করতে জাতীয় পর্যায়ে শীর্ষ ৯ ভ্যাট প্রদানকারী এবং জেলা পর্যায়ে আরো ১৩৮ প্রতিষ্ঠানকে সম্মানিত করতো। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
আরো পড়ুন:
২০ লাখেরও বেশি করদাতার ই-রিটার্ন দাখিল
আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ছে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্র জানায়, এবারের ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে গত নভেম্বর মাসে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ, ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করে সংস্থাটি। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে সভাপতি করে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকি সদস্যরা হলেন কাস্টমস: নিরীক্ষা, আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, কাস্টমস: রপ্তানি, বন্ড ও আইটি, কর নীতি, কাস্টমস: নীতি ও আইসিটি, মুসক বাস্তবায়ন ও আইটি শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন, মুসক নীতি, মূসক নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা দপ্তরের সদস্য পদমর্যাদার কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি ভ্যাট দিবস অনুষ্ঠান উদযাপন উপকমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার কার্যবিবরণী সূত্রে জানা যায়, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার ও সর্বোচ্চ মূসক পরিশোধকারী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার (সম্মাননা ও ক্রেস্ট) প্রদান না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ, ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে গঠিত কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০০৫ সাল থেকে সর্বোচ্চ ভ্যাটদাতাদের জন্য পুরস্কার ও সম্মাননা নীতিমালা চালু করে এবং সেই নীতির আওতায় পরবর্তী বছরগুলোতে নিয়মিতভাবে সেরা ভ্যাটদাতাদের সম্মাননা দিয়ে আসছে এনবিআর।
সার্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় এবারো ভ্যাট সম্মাননা প্রদান করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভ্যাট বিভাগের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা।
তবে সরকারের আর্থিক ব্যয় কৃষ্ণতাসাধন নীতি অনুসরণ করে সীমিত আকারে এবারের দিবসটি উদযাপনের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সাজসজ্জার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাকাস্থ গুরুত্বপূর্ণ ও জনসমাগম হয় সেসব স্থানে বিশেষ করে সড়ক, সড়কদ্বীপ ও ফ্লাইওভার, ওভারব্রিজ ইত্যাদি স্থানে ব্যানার, রোল ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড দ্বারা সজ্জিত করে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহব্যাপী ব্যাপক প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/নাজমুল/এসবি