টাকার কাছে নিজেদের ভোট বিক্রি করবো না: জামায়াত আমির
Published: 17th, January 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তরুণ-যুবসমাজ চাঁদাবাজমুক্ত, দখলবাজমুক্ত ও পেশিশক্তিমুক্ত নতুন দেশ চায়। আমরাও সাম্যের বাংলাদেশ চাই। এই প্রজন্ম বুকের রক্ত দিয়ে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। প্রয়োজনে আমরাও রক্ত দিয়ে হলেও এই স্বাধীনতা ধরে রাখবো, ইনশাআল্লাহ।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের টাউন মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা চাটিবাটি নিয়ে পালিয়ে গেছে। দুর্নীতিবাজ সবাই পালিয়েছে। তাই বৈষম্যহীন, মানবিক, দুর্নীতি, দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ কায়েম না পর্যন্ত আমরা থামবো না। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থামবে না।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা কারও টাকার কাছে নিজেদের ভোট বিক্রি করবো না। ষড়যন্ত্র চলছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। আগামী নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ। কালো টাকা ও পেশিশক্তির কাছে আমরা মাথা নত করবো না। যারা কালো টাকা দিয়ে ভোটের মাঠে আসবে, তাদেরকে ‘না’ বলে দিতে হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ডা.
চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের অন্যতম সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন, যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের টিম সদস্য খন্দকার আলী মোহসিন, যশোর জেলা শাখার আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, ঝিনাইদহ জেলার আমির আলী আজম, কুষ্টিয়া জেলা আমির অধ্যাপক আবুল হাশেম, মেহেরপুর জেলা আমির তাজউদ্দীন খান, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আনোয়ারুল হক মালিক, জেলা জামায়াতের জয়েন্ট সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম অর্ক প্রমুখ।
কর্মী সম্মেলন পরিচালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম ইসল ম আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’
নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।