‘দুষ্ট ভারত আমাদের প্রতি বন্ধুসুলভ আচরণ করছে না, সীমান্তে সংঘাতের উস্কানি দিচ্ছে’
Published: 18th, January 2025 GMT
ভারত অসহিষ্ণু আচরণ করছে মন্তব্য করে গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, হাসিনার পতনের পর প্রতিবেশী দুষ্ট রাষ্ট্র ভারত আমাদের প্রতি বন্ধুসুলভ আচরণ করছে না। তারা অসহিষ্ণু আচরণ করছে। সীমান্তে উস্কানি দিচ্ছে। কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। কোথাও কোথাও শূন্য রেখার মধ্যে ঢুকে সংঘাতকে উস্কানি দিচ্ছে। ভারত যদি আগুন নিয়ে খেলে, যা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করবে, অস্থিরতা তৈরি করবে। ভারতকে আমরা হুশিয়ারি দিতে চাই আপনাদের সেভেন সিস্টার্স কিন্তু স্থির থাকবে না। আপনারা বন্ধুসুলভ আচরণ করবেন, আমরা বন্ধু সুলভ আচরণ দেখাব।’
শনিবার সন্ধ্যায় নীলফামারীর জলঢাকা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ফিরে আসলে ভয়ঙ্কর রূপে আসবে। কাজেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নে বিন্দু মাত্র ছাড় দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পরে ৯৬ সালে ২১ বছর পরে ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামী লীগ। এসে কি প্ল্যান-পরিকল্পনা করেছিল তা আপনারা দেখেছেন। ভারতের সহযোগীতায় ২০০৮ সালে আর একটি নীল নকশার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে এদেশের গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এদেশকে ভারতের রাজ্যে পরিণত করেছিল। যার ফলে কাঁটাতারে ফেলানীরা ঝুলে ছিল, সীমান্তে প্রতিনিয়ত লাশ পড়ছিল, আমরা নিজ দেশে পারাধীন হয়েছিলাম।’
নুর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল সেটাতে ধাক্কা খেয়েছি। আমরা ভেবেছিলাম অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে এই গণঅভ্যুত্থানের পর একটি সর্বদলীয় সরকার হবে। যেখানে গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী দল সমূহের প্রতিনিধি থাকবে। তাহলে আজকে দেশের যে সংকট এই তা তৈরি হতো না।
অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনো ভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না মন্তব্য করে নুরুল হক নুর বলেন, এই সরকারের সফলতার উপরে নির্ভর করে আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। এই সরকারের ব্যর্থতার উপরে নির্ভর করবে আগামী এই জাতির ভবিষ্যৎ। সরকারকে কোনো ভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। সফল করতে হলে প্রশাসনকে শক্তিশালী করতে হবে। প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ পাই যে, তারা আগের মতো কেউ আওয়ামী লীগ নিয়ে চলছে। এখন আবার কোন কোন দলের প্রতি প্রীতি দেখায় সেই দলকে নিয়েই আবার খেলা করে বোঝা মুশকিল। প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই; প্রশাসনে যারা দলবাজি করবেন তারা চাকরি ছেড়ে রাজনীতি করুন। প্রশাসনে কোনো দলবাজি চলবে না।
গণঅধিকার পারিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো.
গণঅধিকার পারিষদ জলঢাকা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মতিন স্বাধীনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় উচ্চ পরিষদের সদস্য হানিফ খান সজিব, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাসুদ মোন্নাফ প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ল হক ন র গণঅধ ক র প সরক র র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপের চিঠি দিয়েছে বিএনপি: ভিপি নুর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, একসঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করায় সম্প্রীতি করতে গিয়ে বিএনপি আশীর্বাদের পরিবর্তে আমাদের যে একটি অভিশাপের চিঠি দিয়েছে সে জন্যই হাসান মামুন ও তার সমর্থকরা এই সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আজকে গলাচিপা দশমিনার ঘটনা থেকেই আমরা বলতে পারি সারা বাংলাদেশে কি পরিস্থিতি চলছে। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে সেটি বিএনপির জন্য অশনি সংকেত হয়ে দেখা দিতে পারে।
শুক্রবার বিকেলে গলাচিপা উপজেলা পরিষদ ডাক বাংলোর সামনে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারী কর্তৃক গলাচিপা, দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গণঅধিকার পরিষদের অফিস ভাংচুর, নেতা-কর্মীদের উপর হামলা ও দোকান-বাড়ি ভাংচুরসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
নুরুল হক নুর বলেন, ‘‘পটুয়াখালীর দশমিনা গলাচিপায় আমাদের নেতাকর্মীর উপরে হামলা হয়েছে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। মিছিলে বিএনপির হাসান মামুনের সমর্থকরা হামলার প্রস্তুতি নেওয়ায় তাদের নিবৃত্ত করতে না পেরে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এটি প্রশাসনের ব্যর্থতা। এই অক্ষমতা প্রশাসন কাটিয়ে উঠতে না পারলে আগামীতে এদের দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’’
ভিপি নুর আরও বলেন, ‘‘হাসান মামুনের অনুসারীরা অভিযোগ করছেন বিএনপির অফিস নাকি ভাংচুর করা হয়েছে। বিএনপি এত বড় একটি দল কার সাহস আছে তাদের অফিস ভাংচুর করার? এই হাসান মামুনের মত বিতর্কিতদের জন্য দলের নেতাকর্মীরা আজ উশৃঙ্খল হচ্ছে। আমরা হামলার শিকার হয়েছি। আমার নেতাকর্মীরা আহত হয়েছে। আমার কর্মীদের মোটর সাইকেল ভাংচুর করেছে। আবার শুনেছি আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া হচ্ছে।’’
‘‘২৪-এর শতশত তাজা প্রাণের বিনিময়ে এই গণঅভ্যুত্থানের পরে সুবিধা নিচ্ছে হাসান মামুনের মতো নেতাদের পরিবার। আমি বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি, তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, এখন দেখার পালা! গণঅধিকার পরিষদ ভেসে আসেনি, অনেক লড়াই সংগ্রাম করে এই দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ফ্যাসিষ্ট সরকার হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছি। প্রয়োজনে আবারো আমজনতাকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে লড়াই করে একটি রাষ্ট্র উপহার দেওয়ার চেষ্টা করবো।’’
সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের জেলা, উপজেলা ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য গতকাল রাতে পাতাবুনিয়া গ্রামে ভিপি নুরকে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং তার গ্রামে গনঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
মো. ইমরান//