স্পিকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চেয়েছিলেন হাসিনা
Published: 18th, January 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত আগস্টের প্রথম দিকে সংসদের স্পিকার (তৎকালীন) শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন। সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য ‘লকডাউন’ নিশ্চিত করছিল, যাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়। গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
এই পত্রিকার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে পতিত আওয়ামী লীগের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ‘আমরা সে সময়ে গণভবনে ছিলাম এবং ক্রমাগত পরিকল্পনা করছিলাম, কীভাবে বিক্ষোভের সমাধান করা যায়। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর (সাবেক) আকস্মিক পদত্যাগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে। সে কারণেই লকডাউনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।’
২০২৪ সালের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ঢাকার পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হয়। এই সময়ে শেখ হাসিনা চীনে রওনা হন এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন তীব্র বিক্ষোভের রূপ ধারণ করে। ছাত্ররা যখন ‘এক দফা দাবি– শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ দাবি করেন, তখন নওফেলকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-সমন্বয়কারীদের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছিলেন শেখ হাসিনা। পরে ছাত্রবিক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
নওফেল মনে করেন, আগামী দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রে আগত ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মনোভাবের ওপর। নওফেল বলেন, ‘ড.
‘ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অন্যান্য সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের, বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ার ঘটনাবলি থেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা উচিত নয়।’
বাংলাদেশে গত পাঁচ মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় অর্থনীতি ও শিল্পে অস্থিরতা বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেন নওফেল। তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তন আনার কোনো এখতিয়ার নেই। বাংলাদেশের আদর্শিক গতিপথ নির্ধারণেরও এখতিয়ার নেই।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য পর স থ ত সরক র র ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
২৯ জুলাই-৮ আগস্ট ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির’ নৈরাজ্যের আশঙ্কায় এসবির সতর্কতা
শেখ হাসিনা সরকার পতনের বছর পূর্তি উপলক্ষে সরকার ও বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচি ঘিরে ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি’ নৈরাজ্য করতে পারে-এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব ইউনিটকে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা। সেই চিঠিতে ২৯ জুলাই হতে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালকে ‘বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ডিআইজি (রাজনীতিক উইং) এ সংক্রান্ত চিঠিতে এ সময়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনাসহ যানবাহন তল্লাশির পরামর্শও দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এসবি প্রধান গোলাম রসুল গণমাধ্যমকে বলেন, “এটা কোনো এক মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। তবে আমরা কোনো বিশেষ দিন-অনুষ্ঠান ঘিরে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ-নির্দেশনা দিয়ে থাকি, এটা আমাদের নিয়মিত কাজের অংশ।”
আরো পড়ুন:
সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
অধ্যাপক জওহরলাল বসাকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি। নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা। এছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।
ঢাকা/এমআর/এসবি