গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত হল দিনব্যাপী পিঠা উৎসব
Published: 20th, January 2025 GMT
গোপালগঞ্জে দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে গোপালগঞ্জ সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকরি মহিলা কলেজে অনুষ্ঠিত এই উৎসবে বাহারি পিঠার সমাহার ঘটে। আগামীতেও এমন আয়োজন কারার কথা জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সরকরি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসের ২০টি স্টলে শতাধিক বাহারি পিঠার সমাহার ঘটে। চিতই, ভাপা, পুলি, তক্তি, নকশি পিঠা, ডিমের পুডিং, পাটি সাপটা, ঝাল চন্দ্রকোনা, চন্দনকুলি, দুধ খেঁজুর, নারকেলের চিড়া, রসপান, হৃদয়হরণ, গোকুলসহ হরেক রকমের পিঠা নিয়ে উৎসবে অংশ নেন কলেজটির শিক্ষার্থীর। তাদের তৈরি পিঠার স্বাদ নিতে ও কিনতে কলেজ ক্যাম্পাসে আসেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
মেলায় পিঠার স্টল দেওয়া শিক্ষার্থী তনিমা মাহমুদ বলেন, “মা ও দাদির কাছ থেকে তালিম নিয়ে অন্তত ২৫ রকমের পিঠা হাতে বানিয়ে স্টলে প্রদর্শন করেছি। পিঠার স্বাদ নিয়ে ভোজন রসিকরা ব্যাপক প্রসংশা করেছেন। পিঠা বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করে সফল হওয়া সম্ভব।”
আরো পড়ুন:
নলেন গুড়ের প্যাড়া সন্দেশ যাচ্ছে বিদেশে
শতবর্ষী মাছের মেলা, কোটি টাকা বিক্রির আশা
শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম চৈতি বলেন, “বিভিন্ন ধরনের পিঠা এসেছে। অনেক পিঠার নাম আগে জানতাম না। কয়েকটি স্টল ঘুরে পিঠা খেয়েছি। খুব ভালো লেগেছে এই পিঠা উৎসবে আসতে পেরে। আমি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন আয়োজন করার জন্য।”
গোপালগঞ্জ সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকরি মহিলা কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোসা.
বাংলা বিভাগের সহকরী অধ্যাপক মনীন্দ্র নাথ বাড়ৈ মণি বলেন, “পিঠা উৎসব সবার প্রাণের উৎসব। সবার অংশ গ্রহণে উৎসবটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।”
কলেজের অধ্যক্ষ সেখ বেনজীর আহমেদ বলেন, “বাঙালি সংস্কৃতি ধরে রাখতে আমরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি। শিক্ষার্থীরা শতাধিক রকমের পিঠা তৈরি করে স্টলগুলোতে পসরা নিয়ে বসেন। এখান থেকে পিঠা প্রেমিরা পছন্দের পিঠা খেয়েছেন। পিঠা উৎসব পাঠ্য কারিকুলামেরই একটি অংশ। উৎসবের আমেজে এতে অংশ নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী উদ্যাক্তা হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বাহারি পিঠা তৈরি করে অনেকেই কর্মসংস্থানের পথ খুঁজে পাবেন
এমটা প্রত্যাশা করছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উৎসব রকম র প ঠ গ প লগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’