প্রত্যেক জেলায় নেতাকর্মীদের রাজনীতির প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ করে স্লোগান, বক্তৃতা, সভা সঞ্চালনা ইত্যাদি বিষয়ে নেতাকর্মীদের ধারণা দেওয়ার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সদস্য নবায়ন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ইতিপূর্বে আমরা সদস্যপদ ও নবায়ন কর্মসূচি করেছি। এই বিষয়টা চলমান প্রক্রিয়া। কিছুদিন পর সদস্য পদ নবায়ন করা উচিত বলে আমরা মনে করি। এজন্য এবার আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে নির্দেশ দিয়েছেন, সে অনুযায়ী সদস্যপদ নবায়ন করছি। এই কাজটা মূলত দপ্তরের কাজ। এই বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা হল, বইগুলো প্রত্যকটা জেলা উপজেলা-থানা-ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে যাবে। বিষয়টি নিশ্চিত করবে আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদকেরা। এই কাজটা করা হলে এক মাসের মধ্য আমরা তৃণমূলে পৌঁছে যাব। আমাদের সদস্য যারা আছেন, তারা যদি না জানেন যে সদস্যপদ নবায়ন হচ্ছে, তা হলে হবে না।’’

আরো পড়ুন:

ঋণ খেলাপিদের মনোনয়ন দেবে না বিএনপি, ফখরুলের অঙ্গীকার 

তরুণ প্রজন্মকে পড়ালেখায় বেশি গুরুত্ব দিতে হবে: মির্জা ফখরুল 

তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার একটি মতামত আছে, যেটা শুনতে ভালো লাগবে না। আগে যেটা হয়েছে, আমাদের যারা আগ্রহী এমপি পদপ্রার্থী ছিলেন, তারা সবগুলো কিনে নিয়ে গেছেন। এটা যেন না হয়। সেটা যেন সাংগঠনিকভাবে যায়।’’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘আমাদের অনেক বেশি প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে। আমরা ও আমাদের নেতাকর্মীরা কেন জানি রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। গতকাল আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী ছিল। সেখানে কর্মীরা আসছিল, তারা একটা পতাকা নিয়ে মিছিল নিয়ে আসছে, এটা কোনো রাজনীতি না। প্রত্যেক জেলায় রাজনীতির প্রশিক্ষণ শুরু করতে হবে। কীভাবে বক্তব্য দিতে হবে, কীভাবে স্লোগান দেবে হবে, কীভাবে সভা সঞ্চালনা করবে—এইগুলো জানতে হবে। সভা করার সময় প্রত্যকের নাম বলতে হবে, এটা কোনো অর্থ হতে পারে না। এটা সময়ক্ষেপণ ছাড়া আর কিছু না। এগুলো বাদ, সত্যিকারের অর্থে একটা রাজনৈতিক দল করা প্রয়োজন। এখানে অনেকগুলো ভালো কথা এসেছে, আমাদের সত্যিকারের একটি আদর্শিক রাজনৈতিক দল হতে হবে। এখন যে প্রতিযোগিতা আসছে, সেখানে স্লোগান দেওয়ার প্রতিযোগিতা নয়; মেধা ও বুদ্ধির প্রতিযোগিতা দিতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া ও টকশোতে কে কত ভালো কথা বলতে পারেন, যুক্তি খণ্ডন করতে পারেন, সে প্রতিযোগিতা দিতে হবে। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। শুধু স্লোগান দিয়ে সামনে যুদ্ধে জয় হওয়া সম্ভব না।’’

নতুন সদস্য নেওয়ার ক্ষেত্রে মেধা ও নীতি–নৈতিকতার ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

ঢাকা/নাজমুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ ন ত কর ম র জন ত ব এনপ ফখর ল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার

দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।

দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্‌রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’

তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’

আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫

মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্‌যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা

সম্পর্কিত নিবন্ধ