ইঞ্জিনসংকটে ময়মনসিংহ-জারিয়া রেলপথে ট্রেন বন্ধ, চালুর দাবিতে আলটিমেটাম
Published: 20th, October 2025 GMT
ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশন থেকে জারিয়া রেলপথে চলাচল করা লোকাল ট্রেনটি ইঞ্জিনসংকটে ২১ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণির যাত্রীরা। বন্ধ ট্রেনটি চালুর দাবিতে ময়মনসিংহ জংশন স্টেশনে আজ সোমবার বেলা পৌনে দুইটায় মানববন্ধনের আয়োজন করেন যাত্রীরা। আগামীকালকের মধ্যে বন্ধ ট্রেন চালু না করলে কঠোর কর্মসূচির আলটিমেটামও দেওয়া হয়।
আজ বেলা পৌনে দুইটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত চলা মানববন্ধনে দাঁড়ানো যাত্রীদের হাতে ‘ব্রিটিশ গেল, পাকিস্তান গেল, বাংলা এল এখন কেন বন্ধ হলো?’, ‘জারিয়া লোকাল ট্রেন চলতে হবে’, ‘জারিয়া লোকাল ট্রেন পুনরায় চালু করতে হবে’, ‘ট্রেন নিয়ে তালবাহানা চলবে না’, ‘ইঞ্জিন নিয়ে প্রতারণা মানি না মানব না’, ‘জাগো জাগো জারিয়া লোকাল ট্রেনযাত্রী, ট্রেনটি চালু করুন, করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান–সংবলিত ফেস্টুন ছিল।
রেলওয়ে ও যাত্রী সূত্রে জানা যায়, জারিয়া লোকাল ট্রেনটি প্রতিদিন কোনো প্রকার সাপ্তাহিক বন্ধ ছাড়া ময়মনসিংহ-জারিয়া রুটে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথে চারবার করে আপডাউন হিসেবে মোট আটটি ট্রিপে চলে। এই রুটে অন্য কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল না করায় শম্ভুগঞ্জ, গৌরীপুর, শ্যামগঞ্জ, পূর্বধলাসহ আটটি স্টেশনে চলাচলকারী যাত্রীদের লোকাল ট্রেনটিই অন্যতম ভরসা। প্রতিদিনই ট্রেনটিতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। এ ট্রেনে করে ময়মনসিংহ মহানগরীসহ গৌরীপুর, ধোবাউড়া এবং নেত্রকোনার পূর্বধলা, দূর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে। ট্রেন বন্ধ থাকায় অফিসগামী যাত্রী এবং শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে চার-পাঁচ গুণ বেশি অর্থ ব্যয় করে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যেতে হচ্ছে তাঁদের। এ ছাড়া ট্রেনটি বন্ধ থাকায় চিকিৎসার জন্য আসা রোগীদের ভোগান্তি ও ব্যবসায়ীদের ময়মনসিংহ শহরে আসা–যাওয়াতে সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া গৌরীপুরের ব্যবসায়ী মনোয়ার হাসিব বলেন, ‘ট্রেনটিতে জারিয়া থেকে অনেক শিক্ষার্থী আনন্দের সঙ্গে ময়মনসিংহ ও গৌরীপুর এসে ক্লাস করে আবার চলে যেত। ট্রেন বন্ধ থাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া বেড়েছে। কাদের মদদে ট্রেনটি বন্ধ করে দেওয়া হলো। ট্রেনটি বন্ধ থাকায় মানুষ চরম দুর্ভোগে আছে। আমরা দ্রুত ট্রেনটি নিয়িমত চালুর দাবি জানাই।’
স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো.
ময়মনসিংহ শহরে ব্যবসা করেন পূর্বধলার বিজন সম্মানিত। ট্রেনটি বন্ধ থাকায় যাতায়াতের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা আগামীকাল থেকেই বন্ধ ট্রেন চালু চাই। তা না হলে এ অঞ্চলের ছাত্র ও কর্মজীবীরা আগামীকাল থেকে কঠোর কর্মসূচিতে যাব।’
ইঞ্জিনসংকটের কারণে ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে জারিয়া লোকাল ট্রেনটি বন্ধ রয়েছে জানিয়ে ময়মনসিংহ স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘আমাদের লোকাল ট্রেনের মিটারগেজের ইঞ্জিনসংকট চলছে। আমাদের যে ইঞ্জিনটি সমস্যা হয়েছিল, সেটি মেরামতের জন্য ঢাকায় পাঠানো হলেও আর ফেরত আসেনি। ইঞ্জিন পেলে পুনরায় লোকাল ট্রেনগুলো চালু করতে পারব।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ক ল ট র নট বন ধ থ ক য় ন বন ধ
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদাবাজির অভিযোগ, আগামী মাস থেকে গাড়ি বিক্রি ও রাজস্ব বন্ধের হুঁশিয়ারি ব্যবসায়ীদের
গাড়ি বিক্রয়কেন্দ্রে অব্যাহত চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর সব গাড়ির দোকান অর্ধদিবস বন্ধ রেখে মানববন্ধন করেছেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা। চাঁদাবাজির হুমকি বন্ধ এবং জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা না হলে আগামী মাস থেকে গাড়ি ছাড় করা, নিবন্ধন করা ও সরকারকে রাজস্ব দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা।
মানববন্ধন শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসা বন্ধ করার এমন হুঁশিয়ারি দেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি আবদুল হক। সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা সদস্য ও গাড়ি ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।
আজ রোববার রাজধানীর বারিধারা এলাকায় সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত দোকান বন্ধ রেখে এই মানববন্ধন করেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা।
সাংবাদিকদের আবদুল হক বলেন, গত আগস্ট মাস থেকে বিভিন্ন গাড়ি ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। ভুয়া নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে একে ৪৭ রাইফেলের ছবি পাঠিয়ে চাঁদা দাবি করা হয়। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত ১২টি বিক্রয়কেন্দ্রে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ফোন করে বলা হচ্ছে, চাঁদা না দিলে ব্যবসা করা যাবে না।
এ বিষয়ে ইতিমধ্যে জিডি করা হয়েছে, কিন্তু এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা ভয় পাচ্ছেন বলে জানান আবদুল হক। সে জন্য এভাবে রাস্তায় নেমে আসা। যদি এই মাসের মধ্যে এসব বন্ধ না হয়, সন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার না হয়, তাহলে আগামী মাস থেকে গাড়ি ছাড়, নিবন্ধন ও রাজস্ব দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সারা দেশের ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজির বিপক্ষে এবং সরকারের সঙ্গে আছেন—এ বার্তা দিতে তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন বলেও জানান এই ব্যবসায়ী নেতা।
ব্যবসায়ীরা জানান, বারিধারা ও প্রগতি সরণি এলাকায় ধারাবাহিকভাবে গত কয়েক মাসে বিসমিল্লাহ কার সেন্টার, টার্বো অটো, বেগ অটো, কার সিলেকশন, হ্যালো কার, জুম অটো, বিশ্বাস ইমপোর্টসহ মোট ১২টি বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে।
ককটেল বিস্ফোরণের পর বিদেশি নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মেসেজ দিয়ে টাকা দাবি করা হয়। আশপাশের বিক্রয়কেন্দ্রে ফোন দিয়ে বলা হয়, এরপর তাদের বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করা হবে। এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতির অবসান চাইছেন গাড়ি ব্যবসায়ীরা।