সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের সময় ২ বাংলাদেশিসহ ১৯ রোহিঙ্গা উদ্ধার
Published: 21st, January 2025 GMT
সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের সময় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়ন থেকে দুই বাংলাদেশি নাগরিকসহ ১৯ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী। এসময় এক মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (২০ জানুয়ারি) মধ্যরাতে ইউনিয়নের মধ্যম কচ্ছপিয়া এলাকায় নৌবাহিনীর সদস্যদের একটি দল এ অভিযান চালায়।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আটক মানবপাচারকারীর নাম ও পরিচয় জানা না গেলেও তিনি রোহিঙ্গা নাগরিক বলে তথ্য দেন ওসি।
আরো পড়ুন:
মাগুরায় ২ রোহঙ্গিা গ্রেপ্তার, পেটে মিলল ইয়াবা
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি
ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, “সোমবার মধ্যরাতে টেকনাফে বাহারছড়া ইউনিয়নের মধ্যম কচ্ছপিয়া পাহাড়ি এলাকার কয়েকটি ঘরে মালয়েশিয়া পাচারের জন্য কিছু রোহিঙ্গাকে জড়ো করার খবর পায় নৌবাহিনী। পরে তাদের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। নৌবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন সন্দেহজনক লোক দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় ধাওয়া দিয়ে এক মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়। অন্যরা পালিয়ে যায়।”
তিনি আরো বলেন, “ঘটনাস্থলের ঝুপড়ি ঘরগুলো থেকে মালয়েশিয়া পাচারের জন্য জড়ো করা ১৯ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে দুই জন বাংলাদেশি এবং অন্যরা রোহিঙ্গা। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ৮ জন নারী। বাকিরা শিশু ও পুরুষ।”
আটক মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে টেকনাফ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি গিয়াস উদ্দিন।
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস