মৌলভীবাজারে ১২ লাখ টাকার ভারতীয় চিনি জব্দ
Published: 21st, January 2025 GMT
মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানে অবৈধভাবে আমদানি করা ৫০ কেজি ওজনের ১৮৮ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করেছে পুলিশ। এসময় বহনকারী ট্রাকটিও আটক করা হয়।
এ ঘটনায় ইয়াসিন আলী (২৫) এবং রিফাত হাসান দিপু (২২) নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের কলারগাও যাত্রীছাউনি এলাকা থেকে সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাতে একটি মালবাহী ট্রাকে পাথর নিয়ে যাচ্ছিলো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ট্রাকে পরিবাহিত পাথরের নিচ থেকে চিনির বস্তাগুলো জব্দ করা হয়।
অভিযান পরিচালনাকারী এসআই মাহমুদুর রহমান বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা সিলেট থেকে আগত একটি ট্রাক তল্লাশি করি। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ কেজি ওজনের ১৮৮ বস্তায় মোট ৯ হাজার ৪০০ কেজি চিনি জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। এসময় চিনি পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকটিও জব্দ করা হয়েছে। চিনি পাচারকারী এই চক্র সিলেট জেলার জৈন্তাপুর সীমান্ত এলাকা থেকে সংগ্রহ করে বিক্রির উদ্দেশ্যে কুমিল্লা নিয়ে যাচ্ছিল। তারা পুলিশের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য চিনির উপর পাথর সাজিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।”
মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ আবুল কাশেম সরকার জানান, চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে আমদানি করার অপরাধে আটককৃত দুজনই সিলেটের জৈন্তাপুর থানা এলাকার বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার সদর থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (বি)/ডি ধারায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, চিনি পাচারের সাথে জড়িতদের বিরোদ্ধে মৌলভীবাজার সদর থানায় মামলা হয়েছে।
ঢাকা/আজিজ/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস